কথায় বলে, সম্পর্ক বড়ই জটিল। সত্যি যে কোনও সম্পর্কের জটিল ধাঁধা বোধ হয় অন্যদের পক্ষে বোঝা খুব কঠিন। শহর কলকাতার ছয় জোড়া ব্যক্তির পারস্পরিক সম্পর্ককে ঘিরে তৈরি হয়েছে 'ঘুন'-এর গল্প। শুভ্র রায় পরিচালিত এই ছবি খুব শীঘ্রই আসছে 'ক্লিক' ওটিটি প্ল্যাটফর্মে।
মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন সৌরভ দাস, সমদর্শী দত্ত, অনুষা বিশ্বনাথন। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন ডাঃ কৌশিক ঘোষ, পৌলমী দাস, সুচিস্মিতা ঠাকুর ও অন্যান্যরা। অভিনেতা- পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এই ছবিতে রয়েছেন অতিথি শিল্পী হিসাবে।
বিক্রম একজন বহুজাতিকের বড় কর্তা। বিপত্নিক বিক্রমের কাছে তার একমাত্র মেয়ে সিমির জন্য কোনও সময় নেই। স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক বিক্রম, তারই অফিসে কর্মরতা পুনমকে বিদেশে প্রোমোশনের লোভ দেখিয়ে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। পুনমও নিজের প্রোমোশনের লোভে বিক্রমের সঙ্গে সব রকম আপোষ করে স্বেচ্ছায়।
পুনমের সঙ্গে একটি ফ্ল্যাটে লিভ ইন করে জয়। তারা দুজনে পুরানো বন্ধু। জয় স্বপ্ন দেখে সিনেমার পরিচালক হওয়ার। ব্যাঙ্গালোরের বহুজাতিকের লোভনীয় চাকরি ছেড়ে সে কলকাতায় ফিরে এসেছে ছবি বানাবে বলে। চিত্রনাট্য লিখে সে আপাতত প্রযোজক খুঁজছে। বিক্রমের সঙ্গে পুনমের অন্তরঙ্গতার বিষয়টা জয় জানে। সে কষ্ট পেলেও, পুনমের ব্যক্তিগত পরিসরে হস্তক্ষেপ করে না।
অন্যদিকে বিক্রমের মেয়ে সিমি চায় সিনেমায় অভিনয়। যদিও সিমির এই ইচ্ছেতে বিক্রমের একদম সায় নেই। সিমি ছোট বেলায় তার মাকে হারিয়েছে। বিক্রম তাকে সময় দেয় না। এই অবহেলা ও একাকীত্ব সিমিকে করে তুলেছে জেদি ও একরোখা।
এক সময় ঘটনাচক্রে বিক্রমের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছাড়ার ও টাকা রোজগারের তাগিদে সিমি দেহ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। টাকার বিনিময়ে অমিতের শয্যাসঙ্গী হয় সে।
অমিত কলকাতা শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ডাক্তার। একমাত্র সন্তানের অকালমৃত্যুর পর স্ত্রী বিনীতার সঙ্গে দশ বছরের দাম্পত্যে শীতলতা নিয়ে এসেছে বহু বছর। এক ছাদের তলায় প্রায় অচেনা দু'জন মানুষের মতো তারা বসবাস করে।
শারীরিক চাহিদা মেটাতে অমিত প্রায়ই নিজের ফাঁকা ফ্ল্যাটে ডেকে নেয় সিমিকে। তার ব্যক্তিত্বের টানে প্রায় সিমি তার প্রেমে পড়ে। যদিও অমিত তাকে আমল দেয় না। অমিত সিমিকে আশ্বাস দেয় যে তার পরিচিত এক প্রযোজকের কাছে সে সিমির জন্য সুপারিশ করবে।
অন্যদিকে বিনীতা, অমিতের স্ত্রী – একজন গৃহবধূ। একমাত্র সন্তানের মৃত্যু স্বামী অমিত ও তার মধ্যে তুলে দিয়েছে শীতলতার দুর্ভেদ্য দেওয়াল। শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রচন্ড একাকীত্বে ভোগে বিনীতা। একদিন ঘটনাচক্রে তার সাথে আলাপ হয় জয়ের। প্রথমে বন্ধুত্ব এবং এরপর ধীরে ধীরে সম্পর্কে জড়ায় তারা।
এরপরেই ঘটে যায় কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। বদলে যায় কয়েকটি জীবন। কীভাবে সেই ঘটনাগুলি পারস্পরিক সম্পর্কে ঘুন ধরিয়ে, এক একটি চরিত্রের সঙ্গে ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়ে সেটাই জানা যাবে ছবিতে।
সৌরভ এখানে জয় চরিত্রে অভিনয় করছেন। অন্যদিকে সিমির ভূমিকায় অনুষা বিশ্বনাথন এবং অমিতের ভূমিকায় রয়েছেন সমদর্শী দত্ত। অন্যান্য চরিত্রগুলির মধ্যে পুনম- পৌলমী দাস, বিক্রম- ডাঃ কৌশিক ঘোষ, বিনীতা-সুচিস্মিতা ঠাকুর এবং প্রফেসর চ্যাটার্জীর ভূমিকায় কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে দেখা যাবে।
'ঘুন' -এর কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন সৌরভ মালাকার ও বিশ্বজিৎ হালদার। সিনেমাটোগ্রাফির দায়িত্ব সামলেছেন সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন প্রসেনজিৎ মহাপাত্র এবং সম্পাদনা রবিরঞ্জন মৈত্র ও শুভ্র রায়ের। আবহ সঙ্গীত সুব্রত বোসের এবং পোশাক পরিকল্পনা করেন নুপুর রায়। প্রসেনজিৎ মহাপাত্রের প্রযোজনায় খুব শীঘ্রই আসছে 'ঘুন'।