দেরাদুন আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্য়ালে প্রয়াত অভিনতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা। তাঁর অভিনীত 'জীবন খাতার প্রতি পাতায়' দেখানো হচ্ছে সেখানে। আজ, রবিবার উৎসবের শেষ দিনে।
উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে ১৭ তারিখ থেকে শুরু হয়েছিল উৎসব। তিনদিনের ফিল্ম ফেস্টিভ্য়ালের আজ সমাপ্তি অনুষ্ঠান।
দেরাদুন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সিনেমা দেখানোর পাশাপাশি ছিল আলোচনা সভা। দর্শক এবং পরিচালক, অভিনেতা-অভিনত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতার সুযোগ। সেখানে ফিচার ফিল্ম, শর্ট ফিল্ম, অ্যানিমেটেড ছবি, তথ্যচিত্র দেখানো হয়।
সেখানে দেখানো হবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায়ের ছবি 'জীবন খাতার প্রতি পাতায়'। নির্দেশক মলয় দাস। উৎসবের উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, সেটি সৌমিত্রর শেষ সিনেমা। কলকাতার আরও এক পরিচালকের ছবিও সেখানে দেখানো হবে। পরিচালক তুষার বল্লভের 'বাকি ইতিহাস' দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিচালকের বক্তব্য, এটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রজেক্ট। একটি রাজনৈতিক সিনেমা। তবে তাত্ত্বিক বা লার্জার দ্যান লাইফ- এমন নয়।
২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর। ওইদিন প্রয়াত হন সৌমিত্র। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। ভর্তি করা হয়েছিল কলকাতার এক হাসপাতাল।
১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি কলকাতার শিয়ালদা রেল স্টেশনের কাছে মির্জাপুর স্ট্রিটে (এখনকার সূর্য সেন স্ট্রিট) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর প্রথম জীবনের দশ বছর পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে কেটেছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম.এ করেছিলেন সৌমিত্র। ছাত্র থাকাকালীন তিনি বাংলা থিয়েটারের খ্যাতনামা অভিনেতা-পরিচালক অহীন্দ্র চৌধুরীর কাছ থেক অভিনয় শিখেছিলেন। তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ঘোষক হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন। সেখানে থাকাকালীন চলচ্চিত্র জগতে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন।
সত্যজিৎ রায় সেই সময়ে নতুন মুখের সন্ধান করছিলেন 'অপরাজিতা'র জন্যে। সৌমিত্র তখন সত্যজিতের সংস্পর্শে আসেন। তার দু'বছর পরে তিনি সত্যজিৎ রায়ের থেকে প্রাপ্তবয়স্ক অপুর চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব পান। সৌমিত্র সত্যজিৎ রায় ছাড়াও মৃণাল সেন এবং তপন সিনহার মতো কিংবদন্তি পরিচালকদের সঙ্গেও কাজ করেছিলেন।
অভিনয় ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি পরিচয় ছিল তাঁর, নিঃসন্দেহে বলা যায় এ কথা। লিখেছেন নাটক, কবিতা। পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন।
বামপন্থাই একমাত্র বিকল্প। আজীবন তা-ই বিশ্বাস করে এসেছেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ভরসা রাখতেন বাম রাজনীতিতে। তাঁরা কেন মানুষের মনে ভরসা তৈরি করতে পারছেন না, তা খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।
ধর্মের সঙ্গে রাজনীতিকে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসবের বিকল্প হতে পারে একমাত্র বামপন্থাই। ২০২০ সালে রাজ্য সিপিএমের মুখপত্রের শারদ সংখ্যায় লিখেছিলেন সে কথা। সেখানে রাজনীতি থেকে সাহিত্য, সংস্কৃতি, গান- বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করেছিলেন তিনি। তুলে ধরেছিলেন তাঁর মতামত।