Prosenjit Chatterjee Remembers Bappi Lahiri: ফের নক্ষত্রপতন। প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ী (Bappi Lahiri)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। মঙ্গলবার রাতেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় তাঁর। 'অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ)' -তে আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন 'ডিস্কো কিং'। কিংবদন্তী সুরকার- গায়কের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শিল্পীমহল তথা সঙ্গীতপ্রেমীদের মধ্যে।
টলিউড সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের (Prosenjit Chatterjee) ছবির 'অমর সঙ্গী' (Amar Sangi)-র কালজয়ী গান 'চিরদিনি তুমি যে আমার' (Chirodini Tumi Je Amar) বাপ্পি লাহিড়ীর সুরেই তৈরি হয়েছিল। এছাড়াও অভিনেতার ছবির আরও অন্যান্য গান রয়েছে ডিস্কো কিং-এর, যা আজও সুপারহিট। শিল্পীর মৃত্যু সংবাদে আবেগপ্রবণ প্রসেনজিৎ, আজতক বাংলার কাছে স্মৃতিচারণ করলেন কিংবদন্তীর।
প্রসেনজিৎ বললেন, "সকালবেলা উঠে এই খবরটা পেয়ে আমি স্তম্ভিত। বাপ্পি দা চলে যাবেন আমি সত্যিই ভাবতে পারিনি। প্রসেনজিৎ-বাপ্পি লাহিড়ী জুটিটা সত্যিই খুব অদ্ভুতভাবে কাজ করেছে। সেই 'অমর সঙ্গী' থেকে শুরু করে, 'বিক্রম সিংহ' ছবিতেও 'ধিন তাক তাক' গানটা বাপ্পি দা গেয়েছেন। এর বাইরেও আমি হিন্দিতে যে কটা ছবি করেছিলাম, প্রায় সবকটাতেই বাপ্পি দা-এর মিউজিক রয়েছে।"
অভিনেতা আরও বলেন, "বাংলায় যে তাঁর অজস্র হিট আছে, তা নতুন করে আর বলার নেই। তবে তার বাইরেও একজন মানুষ হিসাবে তিনি খুব যত্নশীল ছিলেন। যখনই বোম্বে যেতাম, অত্যন্ত যত্ন করতেন। বাপ্পি দা আমার আত্মীয়। আমার মনে হয় বাপ্পি দা আমাদের সকলকে যা দিয়ে গিয়েছেন, তা একটা ভাণ্ডার। ভারতের ইতিহাসে, আমাদের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বাপ্পি দা-এর অসামান্য অবদান রয়েছে।"
প্রসেনজিতের কথায়, "বাংলা, হিন্দি ছবির পাশে বিদেশেও মানুষটার এতটা গ্রহণযোগ্যতা ছিল যে, ভাবা যায় না। আন্তর্জাতিক মানের কাজ করে গিয়েছেন উনি। বাপ্পি দা-এর চলে যাওয়াটা বড্ড আগে হয়ে গেল। আমি নিজে বিশ্বাস করতে চাইছি না। তবে উনি যেখানেই থাকবেন, আশা করি ভাল থাকবেন এবং আমরা মনে রাখব। গানের ওই লাইনটাই আমার ঘুরে ফিরে মনে পড়ছে, 'চিরদিনই তুমি যে আমার, যুগে যুগে আমি তোমারই'...ভাল থেকো বাপ্পি দা, যেখানেই থেকো ভাল থেকো...।"
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের ছেলে অলোকেশ লাহিড়ী পরে বাপ্পি লাহিড়ী নামে পরিচিত হয়। তাঁর অসামান্য প্রতিভা ও কঠোর পরিশ্রমে সর্বভারতীয় খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে অবিস্মরণীয় সুরের জাদুতে শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন তিনি। হিন্দি,বাংলা ছাড়াও তেলুগু, তামিল, কন্নড় সহ একাধিক ভাষার গানে সুর দিয়ে, সকলের মননে তিনি রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১২ সালে 'বিশেষ চলচ্চিত্র পুরস্কার', ২০১৫ সালে 'স্পেশাল লাইফ টাইম অ্যাওয়ার্ড, ২০১৬ সালে 'মহানায়ক সম্মান' ও ২০১৭ সালে 'বঙ্গবিভূষণ' সম্মান প্রদান করে।