চলছে ২৬ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (Kolkata International Film Festival / KIFF)। নন্দন চত্বর হয়ে উঠেছে সিনেমা ও উৎসব প্রেমী বাঙালিদের মিলন ক্ষেত্র। চলচ্চিত্র উৎসবের তৃতীয় দিনেও আয়োজন করা হয়েছিল এক সিনে আড্ডার (Cine Adda)। বর্তমান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মই (Digital Platform) ছিল এদিনের আলোচনার বিষয়বস্তু। একতারা মুক্তমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন টলিপাড়ার একঝাঁক শিল্পী।
অতিমারীর সময়ে ডিজিটাল সিনেমার দিকে অনেক বেশি করে ঝুঁকেছেন দর্শকেরা। চলচ্চিত্র নির্মাতা থেকে শিল্পীরা সকলেই বুঝেছেন এই মুহূর্তে ডিজিটাল মাধ্যমই ভরসা। এমনকি সেজন্যই পৃথিবীর বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবও বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে ভার্চুয়াল মাধ্যমকেই। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনও এবছর হয়েছে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই।
কোভিড পরিস্থিতির পর KIFF- ই দেশের প্রথম ফিজিক্যাল চলচ্চিত্র উৎসব। তবে আয়োজিত এই আড্ডার বিষয়বস্তু খুবই প্রাসঙ্গিক। 'ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম সিনেমার ভাষা বদলে দিচ্ছে'। রবিবারের সিনে আড্ডার মঞ্চে হাজির ছিলেন টলি পাড়ার একগুচ্ছ তারকা। সঞ্চালনার গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন সৌরভ দাস। পক্ষের বক্তারা ছিলেন সৌরসেনী মিত্র, ঈশা সাহা, অনিন্দিতা বসু,ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় ও সৌরভ চক্রবর্তী। আর অন্যদিকে বিপক্ষের বক্তারা ছিলেন ঋদ্ধি সেন, অরিজিৎ দত্ত, হরনাথ চক্রবর্তী, অর্জুন চক্রবর্তী, আবির চট্টোপাধ্যায়, ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: Exclusive Video: KIFF-র মঞ্চে সৌমিত্রকে শ্রদ্ধার্ঘ্য, আবেগে ভাসলেন মেয়ে পৌলমী
পরিচালক ধ্রুব-র কথায়, "কোনও প্ল্যাটফর্মের কোনও বিরোধ নেই। বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে সিনেমাকে কখনও টিভি কখনও ভিসিআর ইত্যাদির মাধ্যম বদল হলেও কিছুই পরিবর্তন হয়নি।" অভিনেত্রী ইশা সাহা মনে করেন, "এই লকডাউনের সময় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিঃসন্দেহে অনেকটা জায়গা জুড়েছে বিনোদন জগতের এবং এটা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই।"
অভিনেতা আবির চ্যাটার্জি মনে করেন, "আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে শিল্পীদের মধ্যে কোনও স্পষ্ট সীমাবদ্ধতা নেই। সে ওটিটি, টিভি বা চলচ্চিত্র যেটাই হোক না কেন। তা হলে না কেন?" সৌরসেনী মনে করেন, "ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম অনেক বেশি গ্লোবাল কন্টেন্ট আমাদের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে এসেছে। এটা সত্যিই দারুণ।"
কিফের এদিনের প্রায় এক ঘণ্টার এই আলোচনার প্যানেলে ইতি টানা হয়েছে এই কথায় যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং বড় পর্দা একে অপরের পরিপূরক। এটা সত্যি সাহায্য করেছে দেশের বৃহৎ সংখ্যক প্রতিভাদের সামনে আনতে। তবে শুধু বিদেশী ছবি নয় সকলকে বড় পর্দায় দেখতে হবে দেশের ছবিগুলিও।
সবশেষে একথা বলে যায়, শর্ট, ডিজিটাল কিংবা বড় পর্দা, যেই মাধ্যম বা আকারে আসুক না কেন কনটেন্টই এখন রাজা। সব মিলিয়ে বেঁচে থাকুক সিনেমা।