দেশজুড়ে করোনার বাড় বাড়ন্তে যেন তৈরি হয়েছে এক অন্ধকারময় পরিস্থিতি। আতঙ্ক, অনিশ্চয়তা বহু মানুষকে একটা দমবন্ধকর আবহে ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু এভাবেই তো চলতে পারে না। এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে এবং সুস্থ থাকতে সুরকে অবলম্বন করলেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী দেবজ্যোতি মিশ্র (Debjyoti Mishra)।
করোনা পরিস্থিতি ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তাই কাছাকাছি না এসেও দূর থেকে একে অপরের পাশে থাকতে হবে। ডিজিটাল মাধ্যমই বর্তমান সময় ভরসা। এই কথা ভেবেই দেবজ্যোতি মিশ্র 'সঙ্গী হোক সুর'- এই বিশেষ আয়োজন করছেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদে।
মনের গভীরে প্রবেশ করে রোগ প্রশমন করার ক্ষমতা রয়েছে সুরের, যাকে মিউজিক থেরাপি বলা হয়। সঙ্গীত মনের ভিতরের অন্ধকারাচ্ছন্ন জগতে প্রবেশ করে আলোর দিশারি হয়ে ওঠে। তাই এই বিশ্বজোড়া মন খারাপের মাঝে সঙ্গীত হোক সকলের সাথি।
আরও পড়ুন: একটাও আসন মেলেনি! কী বলছেন বাম মনস্ক তারকারা?
দেবজ্যোতি মিশ্র বললেন, "সঙ্গীত নিয়ে চর্চার পাশাপাশি তার বিজ্ঞান নিয়েও চর্চা আমার বহু দিনের। এই যে আমরা বলি মিউজিকের একটা হিলিং পাওয়ার আছে, আমি বলি মিউজিকের ইউমিনিটি পাওয়ার আছে। আমার মনে হচ্ছিল পৃথিবী এখন আমার কাছে এখন একটা নতুন গান চায়না,তার থেকেও সরাসরি মানুষের সাথে কথা বলতে পারাটা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। গত বছরে শ্রমজীবী ক্যান্টিন যথেষ্ট ভাল কাজ করেছে, খুব ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। একজন সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে মনে হচ্ছিল আমি নিজে এই মুহূর্তে দাড়িয়ে সমাজকে কি দিতে পারি। সেই থেকেই সুরের আশ্রয় নেওয়া।"
তিনি আরও বলেন, "বহু মানুষ তাঁদের মতামত জানিয়েছেন ইতিমধ্যে প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে। আমরা গান নিয়ে আলোচনা করেছি, বিশিষ্ট অতিথিরা যেমন সুধেন্দু ব্যানার্জি, সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যের মতো ডাক্তারও যেমন ছিলেন, কুমার মুখার্জির মতো গুণী ধ্রুপদী শিল্পীও ছিলেন।"
আরও পড়ুন: "প্রথম সারির এই কোভিড যোদ্ধাদের অনেক ধন্যবাদ!" রেড ভলেন্টিয়ার্সদের নিয়ে বিশেষ বার্তা স্বস্তিকার
দেবজ্যোতি মিশ্র আরও যোগ করেছেন, "আমি দীর্ঘদিন ধরে সঙ্গীতের বিজ্ঞানের দিকটা নিয়ে চর্চা করছি। সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও যুদ্ধবিধ্বস্ত পোল্যান্ডের ওয়ারশ শহরে একদল ইহুদি ছেলেমেয়েকে সামিল করে রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর নাটকটি অভিনীত হয়। নাৎসি অধিগৃহীত পোল্যান্ডে ডাকঘর নাটকের উপস্থাপনা মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়ানো অনাথ শিশুদের জীবনমন্ত্রে দীক্ষিত করেছিল। গানের,সুরের এই ক্ষমতা আমাদের এই যাত্রাপথের পাথেয়। অনেকেই মনে করেন মন খারাপের সময় করুণ রাগ শোনা ঠিক নয়। আমার মনে হয় যেকোনো সুরের মনের ওপর প্রভাব ফেলার ক্ষমতা আছে। ঠিক যেমন একটা অসুধ কাজ করে।মুষড়ে পড়া মনে ভালো থাকার ইচ্ছা জাগিয়ে তোলে। বশে কিছু ডাক্তারের কাছে শুনেছি তাঁরা আমার করা 'টেগোর অন স্ট্রিংস' অপারেশনের সময়ে চালিয়ে রাখেন। এর থেকেই সঙ্গীতের ইউমিনিটি পাওয়ারের দিকটা বোঝা যায়। সঙ্গী হোক সুর আগামী বেশ কিছু মাস ধরে চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি। সবাই সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন এই কামনা করি।"
আরও পড়ুন: বাড়িতে অক্সিজেন বাড়িয়ে বায়ু পরিশোধন করে এই গাছগুলি
যে কোনো সুর একটা আবহ তৈরি করে। প্রতি মঙ্গল,বৃহস্পতি,শনিবার দেবজ্যোতি মিশ্রের ফেসবুক পেজে সন্ধ্যা ৭টা থেকে হবে এই অনুষ্ঠান। এছাড়াও জুম মাধ্যমে থাকছেন বিশিষ্ট অতিথিরা, তাঁরা দিচ্ছেন ভাল থাকার দিশা।