কখনও তিনি গাইছেন 'আখোঁ মে তেরি আজব সি আজব সি আদাঁয়ে হে'। কখনও তাঁর গলায় 'জারা সি দিল মে দে জাগা তু'। কেকে সুরের অনুরণনে তখন উদ্বেল গোটা নজরুল মঞ্চ। ঘড়ির কাঁটায় সন্ধে সাড়ে সাতটা। তখনও কেউ বুঝতে পেরেছিল,আর কয়েক ঘণ্টা পর চিরকালের মতো থেমে যাবে কৃষ্ণকুমার কুন্নাথের কণ্ঠ। যিনি কেকে নামে খ্যাত। কলকাতায় সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয়েছে প্রবাদপ্রতীম শিল্পীর।
মঙ্গলবার কলকাতায় নজরুল মঞ্চে উল্টোডাঙার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান ছিল কেকে-র। সন্ধে ৬টা ৪৫ মিনিটে নজরুল মঞ্চে প্রবেশ করেছিলেন। গান গেয়ে ৮.৩০ নাগাদ হোটেলের দিকে রওনা দেন। সেই সময় তাঁর ঠান্ডা লাগছিল। সহকারীদের জানিয়েছিলেন, শীত শীত অনুভব করছেন। গ্র্যান্ড হোটেলে অনুরাগীরা তাঁকে ছবি তোলার অনুরোধ জানান। তখনই অসুস্থ বোধ করছিলেন শিল্পী। তাঁদের পরের দিন আসতে বলেন।
কেকে-কে কলকাতায় এনেছিলেনঅনু্ষ্ঠানের আয়োজক তোচন ঘোষ। আগামিকালও একটি শো ছিল। তোচন জানান,'আজ একটা অনুষ্ঠান ছিল। কাল আর একটা অনুষ্ঠান আছে। দু'টো অনুষ্ঠানই কলেজের। আজকের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর গ্র্যান্ড হোটেলে ছবি তুলতে এসেছিলেন অনেকে। তখন ওঁ বলেছিল, শরীরটা ভাল নেই। কাল এসো। তার পর নিজের রুমে চলে গেল। রুমে যাওয়ার পর ম্যাসিভ অ্যাটাক।' ফলে অসুস্থ শরীরেও কি পারফর্ম করছিলেন কেকে? উঠছে প্রশ্ন।
সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় গায়ককে। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসা শুরুর আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন শিল্পী। ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে ৯টা। গান গেয়ে ওঠার ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যেই সব শেষ। চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই প্রয়াত তিনি। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে আনার আগে মৃত্যু হলে ময়নাতদন্ত করাই নিয়ম। ময়নাতদন্তের পর স্পষ্ট হবে ঠিক কতটা অসুস্থ ছিলেন কেকে?
কেকে-র সঙ্গে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব সুরকার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। হাসপাতালেও যান তিনি। জিৎ জানান, '২৭ বছর ধরে আমাদের বন্ধুত্ব। বিশ্বাসই হচ্ছে না। অনেক গান একসঙ্গে করেছি। গানবাজনা ছাড়া আর কিছু করেনি ওঁ।' কেকে-র পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আসছেন কলকাতায়। শেষকৃত্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- অঙ্কুশ-ওম সমকামী? ঠোঁট ঠোঁট রেখে চুমু, Video ফাঁস হতেই তোলপাড়