'সাধক বামাক্ষ্যাপা' রূপে ফের পর্দায় ফিরছেন সব্যসাচী চৌধুরী। তবে এবার আর টেলিভিশন নয়। বড় পর্দায় বামদেবের বেশে ধরা দেবেন অভিনেতা।
বামাক্ষ্যাপার চরিত্রে সকলের মন জয় করার পরে, সাধক রামপ্রসাদ রূপে ছোট পর্দায় ফিরেছিলেন সব্যসাচী। ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পরে মাঝে দীর্ঘ বিরতি। অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছিলেন তাঁকে পর্দায় না দেখতে পেয়ে। নতুন ছবির আসার খবর পেয়ে, তারা দারুণ খুশি।
এসভিএফ-এর ব্যানারেই আসছে নতুন ছবি 'সাধক বামাক্ষ্যাপা'। পরিচালনায় সায়ন্তন ঘোষাল। প্রকাশ্যে আসা ছবির পোস্টারে সব্যসাচীর ঝলক দেখা গিয়েছিল। দেবী তারার বিগ্রহের সামনে, গাল ভর্তি গোঁফ-দাড়ি, গলায় রূদ্রাক্ষের মালা পরে হোম কুন্ডে হোম করছেন বামাক্ষ্যাপা-সব্যসাচী। সাধকের রহস্যময় জীবন, আধ্যাত্মিকতা ও বিশ্বাসের ছবি ফুটে উঠবে এই ছবিতে।
সোমবার, প্রযোজনা সংস্থার অফিসে সুসম্পন্ন হল ছবির শুভ মহরৎ। হাজির ছিল টিম 'সাধক বামাক্ষ্যাপা'। ক্ল্যাপস্টিক, চিত্রনাট্য হাতে ফটো সেশনেও মেতেছেন তাঁরা।
সব্যসাচী ছাড়াও এই পৌরাণিক ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে, পায়েল দে ও সাহেব চট্টোপাধ্যায়কে। ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করছেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। সিনেমাটোগ্রাফির দায়িত্ব সামলাবেন সৌমিক হালদার। সব ঠিক থাকলে এবছর জুলাই মাসের শেষ থেকেই শুরু হবে শ্যুটিং।
সায়ন্তন ঘোষাল জানালেন, "এই ছবিটি আমার জন্য একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। কারণ কোনও বায়োপিক পরিচালনায় আমার প্রথম পদক্ষেপ — বামাখ্যাপার গল্প। আমরা এই প্রজেক্টটি নিয়ে সত্যিই উৎসাহিত। কারণ এর বিশাল স্কেল এবং বিস্তৃত দৃশ্যায়ন, যা বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পে খুব কমই দেখা যায়। মহরৎ সম্পন্ন হওয়ার পরে, আমরা শীঘ্রই শ্যুটিং শুরু করব এবং কাজটা খুব ভাল হবে, এটাই আশাবাদী।"
বামাক্ষ্যাপার জন্ম বীরভূম জেলায়। তিনি শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সমসাময়িক। হিন্দু তান্ত্রিক বামাক্ষ্যাপা, মা তারার ভক্ত ছিলেন। মা তারাকে তিনি 'বড় মা' বলে ডাকতেন। তারাপীঠেই দ্বারকা নদের তীরে যোগ ও তন্ত্রসাধনা করতেন তিনি। ভক্তরা বিশ্বাস করত যে, তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা আছে। বামাক্ষ্যাপা মন্দিরের নিয়মকানুন মানতেন না। এমনকী দেবতার থালা থেকেই নৈবেদ্য তুলে খেতেন।
কথিত আছে, নাটোরের মহারানীকে স্বপ্নে দেবী তারার প্রত্যাদেশ পান যে, দেবীপুত্র বলে বামাক্ষ্যাপাকে যেন আগে খাওয়ানো হয়। এরপর থেকে মন্দিরে পুজোর আগেই বামাক্ষ্যাপাকে নৈবেদ্য প্রদান এবং তাঁকে অবাধে মন্দিরে বিচরণ করতে দেওয়া হত। আরও শোনা যায়, মা তারা ভয়ংকর বেশে বামাক্ষ্যাপাকে দর্শন দিয়েছিলেন এবং পরে মাতৃবেশে কোলে তুলে নিয়েছিলেন। তারাপীঠ শ্মশানে ও দুমকা জেলার মালুটি গ্রামের বামাক্ষ্যাপার স্মৃতিমন্দির আছে।
কথিত আছে সাধক বামাক্ষ্যাপা, ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। ধ্যানমগ্ন বামাক্ষ্য়াপা কৌশিকী অমাবস্যায় তারা মায়ের আবির্ভাব পান। এছাড়াও শোনা যায়, এই তিথিতে কৌশিকী রূপে মা তারা বিশেষ সন্ধিক্ষণে, শুম্ভ- নিশুম্ভ নামক অসুরদের দমন করেছিলেন।