ফের ছন্দপতন শিল্পীমহলে। প্রয়াত পরিচালক ও কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (Buddhadeb Dasgupta)। বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্য়াগ করেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা টলিউডে। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত রোগে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। এমনকি ডায়ালিসিস চলছিল তাঁর। বৃহস্পতিবারও ডায়ালিসিস হওয়ার কথা ছিল। শেষ রক্ষা হল না। বুধবার রাত থেকেই কবি-পরিচালকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরের দিন ভোরবেলা তাঁর স্ত্রী সোহিনী দাশগুপ্ত দেখতে পান, তাঁর শরীর ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে। ঘুম থেকে ডাকায় কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে চিকিৎসককে ডেকে পাঠানো হয়। চিকিৎসকই পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেন।
পুরুলিয়ার ছেলে বুদ্ধদেব মাত্র ১২ বছর বয়সে কলকাতা আসেন। অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষকতা শুরু করলেও মাথায় ঘোরে ছবি বানানোর চিন্তা। এরপর কলকাতা ফিল্ম সোসাইটির সদস্যপদ গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৬৮ সালে ১০ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র পরিচালনায় হাতেখড়ি হয় বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর। ‘বাঘ বাহাদুর’, ‘চরাচর’, ‘লাল দরজা’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘কালপুরুষ’ ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে এসেছে বহু সম্মান।
'দূরত্ব’, ‘নিম অন্নপূর্ণা’, ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘স্বপ্নের দিন’, 'তাহাদের কথা', 'উত্তরা', 'কালপুরুষ'- র মতো তাঁর তৈরি একাধিক ছবি দর্শকেরা আজও মনে রেখেছেন। ২০১৮ সালে বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত তৈরি করেছিলেন তাঁর শেষ ছবি ‘উড়োজাহাজ’।
প্রবীণ পরিচালকের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্র ও সাহিত্য জগতে। এমনকি শোকপ্রকাশ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।