শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে এসেছে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। গোপাল দলপতির সঙ্গে যোগসূত্র ধরেই হৈমন্তীর নাম সামনে এসেছে। আর হৈমন্তীর নাম প্রকাশ্যে নিয়ে আসার পিছনে মূল কারিগর হল কুন্তল ঘোষ। হৈমন্তীর নাম উঠে আসার পরই টলিউডে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ হৈমন্তী টিনসেল টাউনের উঠতি মডেল-অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন। শাশ্বত চট্টোপাধ্য়ায় অভিনীত অচেনা উত্তম সিনেমায় ছোট্ট এক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হৈমন্তী। যদিও অভিনেত্রীর ওপর খুব একটা প্রসন্ন ছিলেন না খোদ পরিচালক।
কাঠের মিস্ত্রি জানিয়েছিল হৈমন্তীর বিষয়ে
আজতক বাংলার সঙ্গে পরিচালক অতনু বোস এ প্রসঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। তিনি বলেন, "অচেনা উত্তম সিনেমার স্টারকাস্টটা অনেক বড় ছিল। আমি ওঁদেরকে নিয়েই মূলতঃ ব্যস্ত থাকতাম। আমার বাড়ির কাঠের মিস্ত্রি অনেক দিন ধরেই আমায় বলছিল যে, অভিনয়ের ব্যাপারে একজন আমার সঙ্গে দেখা করতে চায়। আমার বাড়ির কাছাকাছি নাকি থাকে এবং সে তাঁর বাড়িতে কাজ করে। কিন্তু, যেহেতু আমার ছবিটি সেসময়ে স্থগিত ছিল, তাই আমি কিছুটা এড়িয়েই যাচ্ছিলাম। এমনকী আমি নম্বরও দিতে চাইনি। কিন্তু পরে কাঠের মিস্ত্রির মাধ্যমেই হৈমন্তী আমার নম্বর পায়। আমায় প্রথমে হোয়াটস্যাপে ছবি পাঠায় এবং পরে আমায় অনেক অনুরোধ করায় তাকে দেখা করতে বলি আমার টিমের সঙ্গে। এরপর শ্যুটিংয়ের আগে একদিন আমার সঙ্গে দেখা করায়। এরপর পরিচালক আরও বলেন যে তাকে ওই ছোট্ট রোলের জন্য সাড়ে তিন হাজারের মতো টাকা দেওয়া হয়েছিল।"
আরও পড়ুন: 'লাক্সারি গাড়ি, উদ্দাম পার্টি', গভীর রাতে আরও কী কী হত হৈমন্তীর ফ্ল্যাটে ?
অচেনা উত্তম-এ নার্সের চরিত্রে হৈমন্তী
তিনি বলেন, "এই ছবিতে বিরাট কাস্ট, একাধিক জুনিয়র আর্টিস্টের দরকার ছিল। একটি নার্সের চরিত্রের জন্য শেষমেশ বাছা হয়েছিল হৈমন্তীকে। তিন-চারটি দৃশ্য ছিল এবং একটাই গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ ছিল। নারায়ণীতে শ্যুটিং ছিল এবং একেবারেই নিজের মতো করে সে ছিল, শ্যুটিংয়ের পর নীচেই খাওয়া-দাওয়া করত এবং টেকনিশিয়ানদের গাড়িতেই তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হত।" এই পর্যন্ত সবই ঠিক ছিল, কিন্তু আচমকাই হৈমন্তীর ওপর বেজায় খাপ্পা হন পরিচালক। অতনু বোস বলেন, "শ্যুটিংয়ের কিছুদিনের মধ্যেই নতুন এক ছেলেকে নিয়ে হৈমন্তী প্রযোজকের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করে এবং সেখানে তাঁর পরবর্তী ছবির পরিচালক হিসাবে অন্য আরেকজনের নাম প্রস্তাব দেয়।" এই ঘটনা পরিচালককে খুবই নাড়া দেয় এবং তাঁর কাছে এটা অত্যন্ত নিম্নরুচির পরিচয় বলে মনে হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'হৈমন্তী নির্দোষ, কুন্তল ফাঁসানোর চেষ্টা করছে', বিস্ফোরক গোপাল দলপতি
হৈমন্তী অভিনয় পারত না
পরিচালক অতনু বোসের কথায় প্রথমত হৈমন্তী অভিনয়টা একেবারেই পারত না। কিন্তু এই কাণ্ডটা ঘটানোর পর থেকে পরিচালক এতটাই বিরক্ত যে হৈমন্তীর দৃশ্য কেটে ছোট করে দিলেন। এমনকী ডাবিং করতেও ডাকেননি। অন্য শিল্পীদের দিয়ে ডাবিং করে দৃশ্যটি ছবির সঙ্গে জোড়া হয়। অতনু বসু এও জানান যে হৈমন্তী হয়ত মুম্বইয়ের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করার চেষ্টা করছিল অচেনা উত্তম ছবির প্রযোজকের মাধ্যমে।
বারবার নাম জড়াচ্ছে টলিউডের
এর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কেসেও নাম উঠে এসেছিল অর্পিতার এবং এই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ফের হৈমন্তীর নাম জড়ানোয় বারে বারে কলুষিত হচ্ছে টলিউড। এ প্রসঙ্গে অতনু বোস বলেন, "আসলে এখনকার নতুন প্রজন্মের মেয়েদের খুব তাড়া। সহজেই টাকা কামানোর নেশা আর তাই তাঁরা রাজনীতিতে নাম লেখাচ্ছেন যাতে এটার হাত ধরে কিছু করা যেতে পারে। এখন তো শর্ট সময়ে লাক্সারি জীবন যাপন করার তাগিদে স্বপ্নটা বড় দেখে ফেল আর সে কারণে শেষ হয় খুব তাড়াতাড়ি।"