ছবির নাম 'কর্পূর'। যা উবে যায়। এই নামটির নেপথ্যে রয়েছে একটি ঘটনা। বাম আমলের ঘটনা, যা তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল রাজ্যে। পরবর্তীকালে যা কর্পূরের মতোই উবে গিয়েছিল। তাই ছবির নামটি আক্ষরিক যথার্থ। এই ছবিতেই অভিনেতা হিসেবে দেখা যাবে সাংবাদিক ও তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে। বাম জমানার মনীষা অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে তৈরি এই সিনেমায় সিপিএম জমানার এক রাজনৈতিক নেতার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কুণাল। হঠাত্ নেতা থেকে অভিনেতা কেন কুণাল? কে এই মনীষা? কী হয়েছিল সেই সময়? সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন কুণাল ঘোষ।
হঠাত্ অভিনয়ে কেন?
bangla.aajtak.in-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাত্কারে কুণাল বললেন, 'আমি নানা ধরনের কাজ করি। কৈশোর থেকেই সাংবাদিকতা করি। লেখালেখি করি, গল্প, উপন্যাস লিখি। নানা সমাজ সেবামূলক কাজে থাকি এবং রাজনীতি করি। অভিনয়ের আমি ভক্ত। ভাল লাগে। একটা করে দেখি, পারি কি না। আগে কখনও অভিনয় করিনি। অরিন্দম শীল একজন দক্ষ পরিচালক। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, কারণ সেই সময়টায় আমি পুরোদমে সাংবাদিকতা করতাম। একটি চরিত্র নিয়ে ভাবনাচিন্তা হচ্ছিল, তারপর আরেকটি চরিত্রে শিফট করলাম। আমি বলেছিলাম, যদি করতেই হয়, তাহলে এই চরিত্রটাই করব।'
মনীষা অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে এই ছবি। কে এই মনীষা?
নব্বইয়ের দশকে শিক্ষা দুর্নীতিতে উঠে আসে মনীষা মুখোপাধ্যায়ের নাম। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহকারী নিয়ামক মনীষা মুখোপাধ্যায়ের জীবনের উপর ভিত্তি করে উপন্যাস লিখেছিলেন লেখিকা দীপান্বিতা রায়। নাম ‘অন্তর্ধানের নেপথ্যে’। সেই উপন্যাসের অবলম্বনেই অরিন্দম শীলের ছবি, 'কর্পূর'। পরিচালক অরিন্দম শীল bangla.aajtak.in-কে বললেন, 'এই ঘটনায় প্রচুর সিনেম্যাটিক এলিমেন্টস রয়েছে। আমাদের দেশে একটি মুশকিল হল, একটি পলিটিক্যাল থ্রিলারের সিনেম্যাটিক ভার্সান হয় না। কোনও ঘটনায় অমূক পার্টি, অমূক নেতার তকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়। হলিউডে দেখা যায়, একটি সময়কাল দেখানো হচ্ছে। মনীষা মুখোপাধ্যায় অন্তর্ধান একটি অদ্ভূত ও অত্যন্ত সিরিয়াস একটি ঘটনা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী নিয়ামক কলকাতার বুক থেকে ভ্যানিশ হয়ে গেলেন, যার জন্য আমার ছবির নাম কর্পূর। কর্পূর দেখবেন উবে গেলেও গন্ধটা থেকে যায়। রেশটা থেকে যায়। সেই জন্যই এই ছবিটা। অন্তর্ধানের নেপথ্যে উপন্যাসটি পড়ার পর আমার ভীষণ ভাল লাগে।'
'ওই মহিলার মা বারবার আসতেন'
কুণাল ঘোষ অবশ্য মনীষা মুখোপাধ্যায় নিয়ে বিশেষ মুখ খুললেন না। তাঁর কথায়, 'এটা বেশ কয়েক বছর আগেকার একটি ঘটনা। একটি রহস্যজনক অন্তর্ধান। একটি কেস নতুন করে খোলার মতো। অসম্ভব ভাল রিসার্চ করেছেন অরিন্দম শীল। আমি ওই ভদ্রমহিলাকে নিয়ে কিছুই বলব না। যা বলার পরিচালক বলবেন। আর এটা নিয়ে আমি কিছু বলতে গেলে, যারা আমার সমালোচনা করবে, তাদের অনেকের জন্ম হয়নি তখন। এই ঘটনাটি আমি কাছ থেকে দেখেছি। ওই মহিলার মা বারবার আসতেন। সেই সময় ন্যায় বিচার চাইতেন। সেই সবই দেখেছি। একটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার ঘটনাকে উনি নানা তথ্য সংগ্রহ করে কীভাবে সিনেমায় রূপান্তর করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ পরিচালকের বিষয়।'