আজ অর্থাৎ শুক্রবার গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi)। গোটা দেশ মেতে উঠেছেন গণপতি বাপ্পার (Ganpati Bappa) উৎসব উদযাপনে। সেই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গবাসীও। যে কোনও উৎসবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় করা, বর্তমান সময়ের একটা রীতি। আর সেই মতই একটি গণেশের ছবির শেয়ার করে সকলকে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন বাচিক শিল্পী, সঞ্চালক, গায়ক তথা অভিনেতা মীর আফসার আলি (Mir Afsar Ali)। আর সেই বার্তাই হল কাল। ট্রোলিংয়ের (Trolling) শিকার হলেন তিনি।
বরাবর যে কোনও উৎসবে সকলকে শুভেচ্ছা বার্তা জানান মীর। কখনও প্রকাশ পায়নি জাতি বা বর্ণ বৈষম্য। শুক্রবারে করা তাঁর পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, "শুভ হোক। সুস্থ থাকুন। গণপতি বাপ্পা মোরিয়া!" আর এই ছবি পোস্ট করা মাত্রই তাঁকে কটাক্ষ শুরু করেন নেটিজেনদের একাংশ।
ইসলাম ধর্মাবলম্বী হয়েও কীভাবে গণেশ চতুর্থীর শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন মীর, এই নিয়ে উঠতে শুরু করে প্রশ্ন। এক নেটিজেন লিখেছেন, "ইসলাম মতে মুর্তি পুজা করা হলো শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করা। মীরের মতো পাবলিকরাই সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। একদিকে নিজেকে মুসলিম বলে পরিচয় দেবে আবার ইসলাম বিরোধী কাজ করবে। যার ধর্ম তার সঠিক ভাবে পালন করাই ভালো।" আরেকজন আবার লিখেছেন, "গণেশ পূজা উপলক্ষে সকল হিন্দু ভাইদের গরুর মাংস খাওয়ার দাওয়াত দিলাম কেউ রাগ করবেন না আবার আপনাদের ধর্মগ্রন্থে কোথাও গরুর মাংস খাওয়া নিষেধ করে নাই।"
এক নেটিজেন আবার তাঁর তুলনা এনেছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী চঞ্চল চৌধুরীকে নিয়ে। তিনি লিখেছেন, "মীর আফসার আলী আপনার ব্যক্তিত্ব নিয়ে আমার প্রশ্ন জাগে। টিকে থাকার জন্য মানুষ এতটা নীচে নামে কি ভাবে। আমাদের দেশের চঞ্চল চৌধুরীকে দেখে আপনার শেখা উচিত, কিভাবে অমুসলিম দেশে নিজের ধর্ম নিয়ে টিকে থাকা যায়। মুসলিম দেশে চঞ্চল চৌধুরী যে ভাবে টিকে আছে।"
এই রূপ নানা মন্তব্য যেমন ভরেছে মীরের সোশ্যাল পেজের কমেন্ট বক্স, সেরকমই তাঁর সমর্থনে বহু নেটিজেন প্রতিবাদ জানিয়েছেন ট্রোলারদের। এক নেটাগরিক লিখেছেন, "আপনাদের জন্যই ইসলাম কলঙ্কিত....যে অন্যের ধর্মকে সম্মান করে না সে কোনও মতেই ধার্মিক না। অন্য ধর্মের মানুষের মনে আঘাত দিয়ে টুপি দাড়ি রাখার কোনও মানেই হয় না।" অন্য আরেকজনের মন্তব্য, "মীরের কমেন্ট বক্স আজব জায়গা, হয় মুসলিমরা আঘাত প্রাপ্ত হয়, না হলে হিন্দুরা। একসাথে কাউকেই মীর দা হ্যাপি করতে পারেন না..."
এর আগেও দুর্গাপুজো নিয়ে পোস্ট করে ট্রোলিংয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছিল মীরকে। বরাবর তিনি মানবতার ধর্মেই বিশ্বাসী। এদিনের ট্রোলিং নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও পাল্টা মন্তব্য করেননি। কিন্তু তাঁর অনুগামীরা স্পষ্ট জবাব দিয়েছেন তাঁর সমর্থনে।
প্রসঙ্গত, এই প্রথমবার কোনও গানের রিয়্যালিটি শো সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করছেন মীর আফসার আলী। শুরু হয়েছে নতুন শো 'সঙ্গীতের মহাযুদ্ধ' (Sangeeter Maha Juddho)। যেখানে নতুন কোনও প্রতিযোগী না, বরং দর্শকদের প্রিয় ও পরিচিত সঙ্গীত শিল্পীরা রয়েছেন সেরা হওয়ার লড়াইয়ে। অন্যান্য একাধিক গানের রিয়্যালিটি শোয়ের বিভিন্ন সিজনের প্রতিযোগীরা এবার একই মঞ্চে। অভিনব এই শো এসেছে পরিচালক -প্রযোজক তথা বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর (Raj Chakraborty) প্রযোজনায়। এর আগে হাসির রিয়্যালিটি শো 'মিরাক্কেল' -এ রাজ -মীর জুটি যথেষ্ট সফল। দীর্ঘদিন পর ফের তাঁরা একসঙ্গে। তাই দর্শকদের প্রত্যাশা রয়েছে অনেকটাই।