গোটা গ্রামে কারো মুখে মাস্ক নেই। স্যানিটাইজারে তাঁদের প্রবল আপত্তি। মাস্ক ছাড়াই বৃদ্ধ, শিশু, মহিলারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত।
গোটা বিশ্বে করোনা দাদাগিরি দেখালেও, করোনা দাঁত ফোঁটাতে পারেনি দুই গ্রামের সাত হাজার মানুষকে। করোনা মহামারীকে কার্যত তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে দুই গ্রামের মানুষ।
বলা ভালো মাস্ক বিহীন,স্যানিটাইজারে প্রবল আপত্তি রয়েছে করোনা শূন্য এই দুই গ্রামের মানুষদের। স্থানীয় গ্রামের মানুষের দাবি গত দেড় বছরে এই দুই গ্রামের মাত্র দুই জনের সাধারণ জ্বর হয়েছিলো মাত্র।
অথচ করোনা শূন্য, মাস্ক বিহীন, স্যানিটাইজারে আপত্তি থাকা এই দুই গ্রামের ভৌগোলিক অবস্থান শুনলে আঁতকে উঠতে বাধ্য করোনা নিয়ে গবেষণা করা বিশ্বের তাবড় বৈজ্ঞানিক মহল। কারণ এই দুই গ্রামের ঠিক মাঝেই তৈরি করা হয়েছে জেলার একমাত্র কোভিড-১৯ হাসপাতাল।
আলিপুরদুয়ার জেলা শহর থেকে মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে এক নম্বর ব্লকের শালবাড়ি, এবং তপসিখাতার মাঝে রয়েছে তপসিখাতা কোভিড-১৯ হাসপাতালটি। করোনার প্রথম ঢেউ থেকে শুরু করে দ্বিতীয় ঢেউ দুই গ্রামের বুক চিঁড়ে প্রতিদিন শয়ে শয়ে করোনা রোগী এসেছে এই হাসপাতালে।
এই কোভিড-১৯ হাসপাতাল থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরেই রয়েছে ঘন জন বসতি। হাসপাতালের সামনেই মুখে মাস্ক ছাড়া করোনাকে ডোন্ট কেয়ার দুই গ্রামের মানুষদের।
কোভিড-১৯ হাসপাতালের সামনে তিন বৃদ্ধকে মাস্ক ছাড়া দেখেই প্রশ্ন করলাম, আপনারা মাস্ক পড়েন নি কেন? পাল্টা উত্তর এলো মাস্ক কেন পড়বো? এই যে কোভিড হাসপাতালের সামনে মাস্ক ছাড়া ঘুরছেন, করোনা আক্রান্ত হবেন যে।
স্থানীয় বাসিন্দা বীরেন দাস, ব্রজেন দাস, রামচন্দ্র দাস এক সুরে বলে উঠেন এই গ্রামে গত দেড় বছরে কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। করোনা বলে কোনও রোগ নেই। শহরের মানুষদের করোনা হয়।
ওদের জীবনেই করোনার ঢেউ আছড়ে পড়ে। বিরিয়ানি, মাংস খেলে করোনা ধরে। খালি পেটে করোনা ধরে না। আমরা দিব্যি আছি। আমাদের বাচ্চারা হাসপাতালের আশেপাশেই সারাক্ষণ খেলাধূলা করে। ওরাও সুস্থ আছে।
কোভিড-১৯ হাসপাতালের সুপার উদয় দাস বলেন আমরা সবসময় গ্রামবাসীদের উপদেশ দিই মাস্ক পড়ে থাকতে। কিন্তু ওরা সেসব পাত্তাই দেয়না।যদিও এখনও পর্যন্ত দুই গ্রামের কারোর করোনা হয়নি।তবে সর্তক থাকা উচিত।