ওমিক্রনের কারণে দেশের করোনা পরিস্থিতি লাগামহীন হয়ে পড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায়, দেশে ২.৪৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই সংখ্যা মঙ্গলবারের তুলনায় ২৭% বেশি।
ওমিক্রনের কেসও বেড়ে ৫,৫৮৮ হয়েছে। দেশে করোনার কারণে পরিস্থিতি যে কত দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে, তা এ থেকেই অনুমান করা যায়। গত ১০ দিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৬ গুণ বেড়ে গিয়েছে।
সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, ওমিক্রন ডেল্টার মতো বিপজ্জনক না হলেও করোনার এই ভেরিয়েন্টকে হালকা ভাবে নেওয়াটাও ঠিক নয়। কারণ, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ওমিক্রনের সংক্রমণে আক্রান্তরা দ্রুত সেরে উঠলেও রোগীদের অনেকরই শরীরে দীর্ঘমেয়াদী নানা জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস (Tedros Adhanom Ghebreyesus) ওমিক্রনের বিপদ সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করেছেন। তিনি জানান, কোভিডের ওমিক্রন ভেরিয়েন্টটি খুবই বিপজ্জনক! বিশেষ করে যাদের এখনও করোনার টিকা নেওয়া হয়নি, তাদের জন্য ওমিক্রন মারাত্মক বিপজ্জনক। তিনি বলেন, ওমিক্রনের কারণে বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও আমাদের হার মানলে চলবে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) ডিরেক্টর জেনারেল বলেন, “আমাদের আশেপাশের অনেক লোক ভ্যাকসিন না পেলেও এই ভাইরাসটিকে অবাধে বিচরণ করতে দেওয়া উচিত নয়। আফ্রিকায়, ৮৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ এখনও ভ্যাকসিনের ডোজ পাননি। অধিকাংশ মানুষকে টিকা না দেওয়া পর্যন্ত আমরা এই মহামারী শেষ করতে পারব না।”
২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বিশ্বের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল WHO। কিন্তু ৯০টি দেশ এখনও তাদের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশকে টিকা দিয়ে উঠতে পারেনি, যার মধ্যে ৩৬টি দেশে এখনও ১০ শতাংশের কম নাগরিক কোভিড টিকা পেয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) ডিরেক্টর জেনারেল জানান, বিশ্বজুড়ে করোনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বেশিরভাগ মানুষই এর টিকা পাননি। তিনি বলেন, “আরো সংক্রমণের অর্থ আরও বেশি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, আরও বেশি মৃত্যু।”
WHO প্রধান জানান, বর্তমান কোভিড ভ্যাকসিনগুলি করোনার গুরুতর প্রভাব হ্রাস করে মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে সক্ষম। তবে এর সংক্রমণ পুরোপুরি রুখতে পারে না। তাই টিকা নেওয়ার পাশাপাশি কোভিড স্বাস্থ্যবিধিগুলিও যথাযথ ভাবে মেনে চলা জরুরি।