ওমিক্রন যাতে ছড়িয়ে না পড়তে পারে, সেজন্য সবাই ভ্যাকসিন নিন। যাঁরা দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাঁরা বুস্টার ডোজ নিন। এমনটাই পরামর্শ দিচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনের টপ মেডিকেল অ্যাডভাইজার অ্যান্টনি ফাউচি।
ডেল্টার পর ফের বিশ্ব জুড়ে এক নয়া আতঙ্ক এই ওমিক্রন। করোনার নতুন ভ্য়ারিয়েন্ট ওমিক্রনকে ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে উদ্বেগ। নতুন ভ্যারিয়েন্টের স্পাইক প্রোটিনে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৫০ বার অভিযোজন বা মিউটেশন হতে পারে। তাই টিকাকরণে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির প্রাচীর ভেদ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ এর বিরুদ্ধে বিদ্যমান কোভিড টিকা কতটা কার্যকর তা জানার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ করোনাভাইরাসের দক্ষিণ আফ্রিকান ভেরিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ ডেল্টা ভেরিয়েন্টের চেয়ে অধিক সংক্রামক। তাই করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট স্পাইক প্রোটিনে ৩০ বারের ওপরে মিউটেশন করেছে। যার জেরে এর মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন এইমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। প্রসঙ্গত এই স্পাইক প্রোটিন হোস্ট কোষে ভাইরাসের প্রবেশকে সহজ করে এবং এটিকে সংক্রমণযোগ্য করে তোলে।
বেশিরভাগ ভ্যাকসিন স্পাইক প্রোটিনের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। সেই কারণে স্পাইক প্রোটিনে বারংবার মিউটেশন ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাকে হ্রাস করতে পারে বলে জানিয়েছেন গুলেরিয়া। তিনি বলেছেন, এখনও পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে জানা গিয়েছে ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনে ৩০ বারের বেশি মিউটেশন হয়েছে। সেই কারণে তার মধ্যে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দিয়ে সংক্রমণের প্রবণতার সম্ভাবনা রয়েছে।
গুলেরিয়া বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে ব্যবহার করা ভ্যাকসিনগুলির পর্যালোচনা করা দরকার। এইমসের প্রধান বলেছেন, সংক্রমণ ক্ষমতা, ভিরুল্যান্স এবং ইমিউনোস্কপির ওপরেই ভবিষ্যত কর্মপন্থা নির্ভর করছে। তিনি জানিয়েছেন, ভারতে সার্স সিওভি-২ জিনোমিক কনসোর্টিয়া INSACOG করোনার নতুন রূপ B.1.1.529 নিয়ে কাজ করছে। দেশে এখনও এর উপস্থিতি সনাক্ত করা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ওমিক্রনের সামনে টিকার প্রতিরোধ কতটা টিকবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ফাইজার ও মডার্নার মত যেসব টিকা এমআরএনএ কৌশলে তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন ভেরিয়েন্টের জন্য বদলে নেওয়ার সুযোগ থাকার কথা। ফাইজার ও মডার্নাও বলেছে, প্রয়োজনে টিকার প্রক্রিয়াগত দিকটি নতুন করে সাজানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
ফাইজারের মুখপাত্র জেরিকা পিটস বলেছেন, ফাইজারের বিজ্ঞানীরা ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যমান টিকার পরিবর্তন করতে পারবে এবং নতুন ভ্যরিয়্যান্টের জন্য ১০০ দিনের মধ্যে টিকা সরবরাহ করতে পারবে।
মডার্না বলছে, নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পরপরই গত মঙ্গলবার তাদের কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ড. স্টিফেন হোগে দাবি করেন, এ ধরনটির বিরুদ্ধে তাদের কোম্পানি সবার আগে কাজ শুরু করেছে।
টিকার তৃতীয় ডোজ বা ‘বুস্টার ডোজ’ নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম কি না কোম্পানি দুটি সেটাও পরীক্ষা করার পরিকল্পানা করেছে।