করোনাকালে নয়া সুখবর। কানাডার সংস্থা স্যানোটাইজের (Sanotize) দাবি, তারা এমন একটি স্প্রে তৈরি করেছে যা নাকে দিলে ৯৯.৯৯ শতাংশ ধ্বংস করা যাবে করোনাকে। সংস্থার প্রতিষ্ঠা গিলি গ্যালওয়ে আরও দাবি করেছেন, ভারতের মতো বড় দেশে শুধু মাত্র ভ্যাকসিন দিয়ে কাজ হবে না, প্রয়োজন এই ধরনের স্প্রে-র। ইতিমধ্যেই এই স্প্রে আমেরিকা, কানাডা, ইজরায়েল, ইউকে এবং নিউজিল্যান্ডে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সফলতা পেয়েছে বলেও দাবি তাঁর। তাড়াতাড়িই এটি ভারতেও আনা হবে বলে জানান তিনি। (ছবি-গেটি)
সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, এই স্প্রে নাকে দেওয়া মাত্রই কাজ করতে শুরু করে দেয়। এছাড়াও নাক থেকে ফুসফুসের পথটিও পরিস্কার করে দেয়। সংস্থাটি দাবি করেছে, যাঁরা ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের শরীরে ভাইরাস প্রথম দিনেই ৯৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। আর ৭২ ঘণ্টায় তা ৯৯ শতাংশ হয়ে যায়। (ছবি-গেটি)
ব্রিটিনে ট্রায়ালের প্রধান গবেষক স্টিফেন উইনচেষ্টার জানান, করোনা মোকাবিলায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ হিসেবে প্রমাণিত হবে। প্রসঙ্গত ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে নাকে দেওয়ার ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে। এদেশেও এই ধরনের ওষুধ কোরোফ্লু নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে ভারত বায়োটেক। ইতিমধ্যেই স্যানোটাইজের ফলাফল জার্নাল অফ ইনফেকশানে প্রকাশিত হয়েছে। (ছবি-গেটি)
গিলি গ্যালওয়ে একটি সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন যে, এই স্প্রেটি নাইট্রিক অক্সাইড দিয়ে তৈরি হয়েছে। যেহেতু শরীরে এর উপস্থিতি আগে থেকেই রয়েছে তাই নাসিকা পথে প্রবেশের পর তা থেকে তাতে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় না। প্রসঙ্গত শরীরে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বাড়বাড়ন্ত আটকায় নাইট্রিক অক্সাইড। নাকে এই দেওয়ার ফলে সেখানে একটি ব্যারিকেড তৈরি করে করে স্প্রেটি। আর সেই কারণে শরীরের প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা পায় ভাইরাস। (ছবি-গেটি)
একদিকে যেমন ভাইরাসকে শরীরে প্রবেশে বাধা দেয় এই স্প্রে, অন্যদিকে নাইট্রিক অক্সাইড দেহের ভিতরে কোষের মধ্যে করোনার প্রবেশ আটকে দেয়। অর্থাৎ মারণ ভাইরাসের ওপর ২ দিক থেকে হামলা হয়। যার ফলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ৯৯.৯৯ শতাংশ সুস্থ হয়ে ওঠেন রোগী। (ছবি-গেটি)
প্রতিষ্ঠানা গিলি গ্যালওয়ে জানিয়েছেন, আপাতত এটি ভারতে নিয়ে আসার চিন্তাভাবনা চলছে। এক্ষেত্রে অংশীদারের সন্ধান চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ভারতের বেশকিছু সংস্থা এই বিষয়ে উৎসাহ দেখিয়েছে। বেশকিছু বড় সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তাও এগিয়েছে। যখনই অংশীদারের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে তখনই ভারত সরকারের কাছে অনুমিত চাওয়া হবে। এক্ষেত্রে ওষুধটি এদেশে এলে, তারপর সেটি উৎপাদন ও সরবরাহের দায়িত্ব ভারতীয় সংস্থাকে নিতে হবে। (ছবি-গেটি)
গিলি আরও বলেন, ভারতে ওষুধের ওপর নজরদারি চালানো সর্বোচ্চ সংস্থা তাঁদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রিপোর্ট দেখবে এবং ওষুধটি পরীক্ষা করে দেখবে। তারপরেই নির্ধারিত হবে যে, এটি চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশান লেখা হবে নাকি সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী দেওয়া হবে। ওষুধের দাম এখনও ঠিক না হলেও, যাতে সবাই এটি কিনতে পারেন সেই দিকটি মাথায় রেখেই মূল্য নির্ধারণ করা হবে। (ছবি-গেটি)
সংক্রমণের আগে, সংক্রমণ চলাকালিন বা তারপরেও এই স্প্রে ব্যবহার করা যাবে বলে জানা যাচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে দিনে এক থেক দুইবার এর ব্যবহার করা যায়। যাঁদের চিকিৎসা চলছে তাঁরা ৪-৫ বারও এর ব্যবহার করতে পারেন। তবে যাঁদের অবস্থা গুরুতর, তাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসক নির্ধারণ করবেন যে এই স্প্রে নেওয়া যাবে কি না। (ছবি-গেটি)
এদিকে নেজাল ড্রপ কোরোফ্লু (CoroFlu) নিয়ে কাজ করছে ভারত বায়োটেক। সংস্থার দাবি, এই ভ্যাকসিন পুরোপুরি সুরক্ষিত। (ছবি-গেটি)
ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের রেডিয়েশন অংকোলজির অধ্যাপক তথা বায়োলজিক থেরাপিউটিক্সের নির্দেশক ডেভিড টি ক্যুরিল বলেন, নাকে দেওয়ার ভ্যাকসিন, অন্যান্য টিকার চেয়ে ভাল। কারণ এটি সেই জায়গায় ভাইরাসের ওপরে আক্রমণ করে যেখান দিয়ে সেটি শরীরে প্রবেশ করে। অর্থাৎ শুরুতেই ভাইরাসকে ধ্বংস করার ক্ষমতা থাকে নেজাল স্প্রে-র মধ্যে। (ছবি-গেটি)