করোনা আক্রান্তের পরিবারকে পরিবারকে যে কত রকম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তা শুধু তাঁরাই জানেন! ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর শ্বাসকষ্ট হলে অক্সিজেনের জন্য ছোটাছুটি, রোগীর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য একে-তাঁকে ফোন করা আর অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় হওয়ার পর এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে বেডের জন্য ছুটে বেড়াতে হয় করোনা আক্রান্তের পরিবার-পরিজনদের। লকডাউনের জেরে পর্যাপ্ত পরিবহণের অভাবে এই দুর্ভোগ এখন চরম সীমায় পৌঁছেছে। তার উপরে করোনায় কারও মৃত্যু হলে দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়ার লোক পাওয়া যায় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেহ পড়ে থাকে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হলে ওই দেহ থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে কেউ ধারে-কাছে ঘেঁষতে চান না। ফলে দেহ সৎকারের জন্য লোক পাওয়া যায় না। কিন্তু করোনায় আক্রান্তের মৃতদেহ থেকে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক কতটা যুক্তিযুক্ত? সত্যিই কি করোনায় আক্রান্তের মৃতদেহ থেকে সংক্রমিত হতে পারে ভাইরাস?
১৫ জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ল রাজ্যের করোনা বিধিনিষেধের!
এই প্রসঙ্গে AIIMS-এর ফরেন্সিক প্রধান ডাঃ সুধীর গুপ্ত জানান, করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর পর বড়জোড় ২৪ ঘণ্টা ভাইরাস এই দেহতে সক্রিয় থাকতে পারে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত অন্তত ১০০টি দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পর্যবেক্ষণের পর বিশষজ্ঞরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।
বিনামূল্যের টিকা, লাইন রাখতেই গুণতে হচ্ছে ৫০০-১০০০ টাকা!
এ প্রসঙ্গে AIIMS-এর আর এক চিকিৎসক ডাঃ প্রবীণ গুপ্ত, যিনি ইন্ডিয়া টুডের কোভিড হেল্পলাইনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন, তিনি জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হলে তাঁর দেহটি ব্যাগে ভরে ভাল করে মুড়ে ফেলা হয়। খেয়াল রাখতে হবে, যাতে কোনও রকম দেহরস বা ফ্লুইড মৃতদেহের বাইরে বেরতে না পারে। পাশাপাশি, যাঁরা মৃতদেহ স্থানান্তকরণের বা ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের সকলকে অবশ্যই পিপিই কিট, গ্লাভস ও মাস্ক পরে থাকতে হবে। এই অবস্থায় করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা প্রায় নেই বললেই চলে। তবে দেহ ছোঁয়ার পর যথাযথ ভাবে স্যানিটাইজ করে নিলে, পাশাপাশি অন্যান্য সতর্কতা অবলম্বন করলে সংক্রমণের ঝুঁকি তেমন থাকে না।
শুধু তাই নয়, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মৃতদেহের শেষকৃত্যের পর ধর্মীয় রীতি মনে সংশ্লিষ্ট অস্থি ও ছাই সংগ্রহের ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা নেই। করোনায় মৃতদের সামাজিক মর্যাদার বিষয়টি মাথায় রেখেই এই তথ্য সামনে এনেছেন AIIMS-এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।