স্ত্রীর ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে পিছিয়ে পড়ছিলেন ক্রমশ। নিজেই বোধহয় নিজের কাছে হেরে যাচ্ছিলেন। স্ত্রীর চাহিদা আর স্বামীর যোগানের মধ্যে পার্থক্য এতটাই দাঁড়াচ্ছিল যে ভারসাম্য রক্ষা করে তা থেকে সমাধান বের করে আনা যাচ্ছিল না। ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শীতলতা বাড়ছিল। সেই সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত তাঁদের মধ্যে। তবে তার পরিণতি যে এমন করুণ হবে তা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি প্রতিবেশীরা।
স্ত্রীর কটুক্তিতেই বিপদ
স্বামীর দাবি, স্ত্রীর চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে না পারায় স্ত্রীর কটুক্তি আর অত্যাচার সহ্যের বাইরে চলে যাওয়াতেই তিনি স্ত্রীকে খুন করেছেন। রবিবার রাতের ঘটনা। পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায় ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এমন ঘটনা খুব একটা না ঘটায় পুলিশও হতভম্ব।
সীমাহীন জ্বালাতনেই লুজ কন্ট্রোল
থানাতেও অভিযুক্ত ব্যাক্তি জানিয়েছেন, স্ত্রীর তরফে জ্বালাতন অসহ্য সীমাহীন হয়ে পড়েছিল। তাই তিনি মুহূর্তের আক্রোশে তা করে ফেলেছেন। এরপর খুনের মামলায় যে ধরণের আইনি পদক্ষেপ রয়েছে, পুলিশ যেন তার বিরুদ্ধে নেয়।
ব্যাঙ্কে কাজ করেন অভিযুক্ত
জানা গিয়েছে অভিযুক্ত ব্যাক্তি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা ব্লকের বামুনারা এলাকায় একটি বহুতল আবাসনে থাকতেন তিনি। সঙ্গে স্ত্রী। কোনও বাচ্চাকাচ্চা নেই। অভিযুক্ত ব্যাক্তির নাম বিপ্লব পরিয়াদ। স্ত্রীর নাম ইপ্সা প্রিয়দর্শিনী। তাঁরা আদতে ওডিশার কটকের বাসিন্দা। এখানে চাকরিসূত্রে থাকতেন।
লাশ নিয়ে আসুন
রবিবার রাতে মোটরবাইক চালিয়ে কাঁকসা থানাতে যান বিপ্লব। থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে বলেন, তিনি তাঁর স্ত্রীকে খুন করে এসেছেন। "লাশ বাড়িতে পড়ে আছে। নিয়ে আসুন।" সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে তার ঘরের দরজা খুলে দেখেন সত্যি ইপ্সা প্রিয়দর্শিনীর দেহ পরে আছে মেঝেতে।
কুকুরের বেল্ট দিয়ে খুন
বিপ্লব পরিয়াদ জানান তাঁরা দুজনই কটক এর বাসিন্দা। ২০১৯ সালে দেখে শুনে বিয়ে হয়। কটকের বাসিন্দা ইপ্সার সঙ্গে । কর্মসূত্রে এখানে ভাড়াবাড়িতে থাকেন। বিয়ের পর থেকেই অশান্তি লেগেই থাকে। রবিবার বিপ্লবের স্ত্রী ইপ্সা তার স্বামীকে এতোটাই উত্তেজিত করে তোলা যে সে তার পোষা কুকুরের গলার বেল্ট দিয়ে তার স্ত্রীর গলায় ফাঁস লাগিয়ে দেয়। দমবন্ধ হয়ে মারা যান ইপ্সা।
বাপের বাড়ির লোকের অপেক্ষায় পুলিশ
স্ত্রীর চাহিদা ও তার অত্যাচার আর সহ্য করতে না পেরেই তিনি নিজের হাতে খুন করেন বলে পুলিশের কাছে জানান। কাঁকসা থানার পক্ষ থেকে ইপ্সার বাড়িতে খবর পাঠিয়েছেন। ইপ্সার বাপের বাড়ির লোক এলে আরও কিছু তথ্য জানা যাবে বলে পুলিশের অনুমান। যদিও খুনের মামলা ধরেই কাঁকসা থানা তদন্ত শুরু করেছে। এইঘটনায় আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দাদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।