Advertisement

RG Kar Doctor Death: নৃশংসতা, খুন ও প্রমাণ নষ্টের চেষ্টা... কীভাবে প্রকাশ্যে এল আর জি কর-এর ভয়ঙ্কর ঘটনা

RG Kar Doctor Death: বছরের পর বছর, একের পর এক এমন ঘটনায় দেশে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই, কলকাতার ঘটনায় নানা তত্ত্ব দাঁড় করাচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা জল্পনা এমনকি গুজবও ছড়াচ্ছেন অনেকে। কিন্তু পুলিশকর্মী, তদন্তকারীরা কী বলছেন? গুজব নয়, ঠিক কী ঘটেছিল ৮ অগাস্টের রাতে? এখনও পর্যন্ত যা-যা জানা যাচ্ছে, তার বিস্তারিত আপডেট রইল এই প্রতিবেদনে।

আরজি করের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত যা-যা জানা গিয়েছে।
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 13 Aug 2024,
  • अपडेटेड 4:46 PM IST
  • মঙ্গলবার আরজি করের ঘটনার তদন্তভার গেল CBI-এর হাতে।
  • আরজি করের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে।
  • ঠিক কী ঘটেছিল ৮ অগাস্টের রাতে? এখনও পর্যন্ত যা-যা জানা যাচ্ছে।

RG Kar Doctor Death: মঙ্গলবার আরজি করের ঘটনার তদন্তভার গেল CBI-এর হাতে। হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

সরকারি হাসপাতালের মধ্যে কর্তব্যরত অবস্থায় মহিলা ডাক্তারকে নির্যাতন ও খুন। আরজি করের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। বছরের পর বছর, একের পর এক এমন ঘটনায় দেশে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই, কলকাতার ঘটনায় নানা তত্ত্ব দাঁড় করাচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা জল্পনা এমনকি গুজবও ছড়াচ্ছেন অনেকে। কিন্তু পুলিশকর্মী, তদন্তকারীরা কী বলছেন? গুজব নয়, ঠিক কী ঘটেছিল ৮ অগাস্টের রাতে? এখনও পর্যন্ত যা-যা জানা যাচ্ছে, তার বিস্তারিত আপডেট রইল এই প্রতিবেদনে।

৮ অগাস্ট ২০২৪, রাত ১২টা

অলিম্পিকে নীরজ চোপড়ার জ্যাভলিন থ্রো-এর দিকে তাকিয়েছিল গোটা দেশ। বাদ দেননি আরজি করের চিকিৎসকরাও। ডিউটির ব্যস্ততার ফাঁকেই তাই তাঁরা নীরজ চোপড়ার থ্রো লাইভ দেখবেন বলে ঠিক করেন। একসঙ্গে রাতের খাবারও সারেন আরজি করের ওই চিকিৎসক।

সেমিনার হলে রাতের খাবার
 

বৃহস্পতিবার রাতেে হাসপাতালে জরুরি ডিউটিতে ছিলেন মহিলা চিকিৎসক। রাতে ডিউটি শেষ সেমিনার হলে রাতের খাবার খান তিনি। সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন জুনিয়রও। এরপর তাঁরা একসঙ্গে নীরজ চোপড়ার জ্যাভেলিন থ্রো দেখেন। এরপরে তাঁর বন্ধু-সহকর্মীরা সেখান থেকে চলে গেলেও ওই চিকিৎসক সেমিনার হলেই কিছুটা বিশ্রাম-ঘুমিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

সেমিনার হলেই ঘুমিয়ে ছিলেন

হাসপাতালের এই সেমিনার হলটি সেমিনার বা মিটিং-এর মতো কাজে সেভাবে ব্যবহৃত হত না। হাসপাতালের কর্মীরা এবং ডাক্তাররা প্রায়শই কাজের ফাঁকে কিছুটা সময় পেলে এই এই সেমিনার হলে গিয়ে বিশ্রাম নিয়ে নিতেন। ফলে এটা খুব অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। বৃহস্পতিবার রাতেও সেটাই করেছিলেন ৩১ বছর বয়সী ওই চিকিৎসক। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, সম্ভবত রাত ৩টে পর্যন্ত সেখানেই ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। 

Advertisement

৯ অগাস্ট, ২০২৪, সকাল ৬টা

পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ হাসপাতালের কর্মীরা সেমিনার হলে এসে শিউরে ওঠেন। সেমিনার হলে চিকিৎসকের অর্ধ-নগ্ন রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। 

খুনি কে?

কলকাতা পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হাসপাতালের কর্মী-চিকিৎসক-পড়ুয়ারা ক্ষোভ শুরু করেন। প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে কোনও ক্লু ছিল না।

সাত-আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ

তদন্তের জন্য বিভিন্ন টিম গঠন করা হয়। প্রতিটি টিম নিজস্ব তদন্ত শুরু করে। সেমিনার হলের আশেপাশে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। আর এই ঘটনায় মোট সাত থেকে আটজন পুলিশের নজরে আসে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ।

সিসিটিভি...

সঞ্জয় রায় নামের ৩৩ বছর বয়সী একজন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে সিসিটিভি ক্যামেরায় হাসপাতালের সেমিনার হলের দিকে যেতে দেখা যায়। রাত ১১টার দিকে সঞ্জয় রায়কে প্রথমে হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেখা যায়, পরে সে বেরিয়ে আসে। কিন্তু এরপর ভোর ৪টের দিকে তাকে আবার হাসপাতালের এমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের দিকে যেতে দেখা যায়। প্রায় ৪০ মিনিট পর সেখান থেকে সে আবার বেরিয়ে আসে। পুলিশ সূত্রে খবর, সিসিটিভির ছবি দেখে মনে হয়েছে, সম্ভবত সে মদ্যপ ছিল।  

নেকব্যান্ড ব্লুটুথ ইয়ারফোনে রহস্য ফাঁস

পুলিশ আবারও সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে। পুলিশ দেখে, সঞ্জয় রায় যখন ভোর ৪টেয় এমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন তার গলায় একটি নেকব্যান্ড ব্লুটুথ ইয়ারফোন ছিল। কিন্তু ৪০ মিনিট পর যখন সে বেরিয়ে আসে, তখন তার গলায় ব্লুটুথ ইয়ারফোন ছিল না। এদিকে দেহের কাছেই, সেমিনার হলেও একটি ভাঙা ব্লুটুথ হেডফোন পড়ে ছিল। এর পাশাপাশি পুলিশ ব্লুটুথ ইয়ারফোনটি নিয়ে সন্দেহভাজনদের সবার ফোনের সঙ্গে পেয়ারিং করে চেক করে। সঞ্জয়ের ফোনের সঙ্গে ইয়ারফোনটি পেয়ার্ড ছিল। ফলে পুলিশ নিশ্চিত হয়ে যায় যে সেটা সঞ্জয়েরই।

সঞ্জয়ের ফোনে অগণিত পর্ণ ভিডিও

সঞ্জয়ের মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে পুলিশ দেখে, তার ফোন পর্ন ভিডিওতে ভর্তি ছিল। পুলিশের এক সূত্র জানিয়েছেন, সাধারণ পর্নও নয়। সঞ্জয়ের ফোনের গ্যালারি 'বিকৃত, হিংসাত্মক পর্নে' ঠাসা ছিল। 

সঞ্জয় রায় সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জয় রায় যে একজন মানসিকভাবে বিকৃত ধরনের মানুষ ছিল। জানা গিয়েছে, ঘটনার আগে রাতে মদ্যপান করে পর্নো ভিডিও দেখেছিল সে। নির্যাতন, খুনের পরেও বাড়ি ফিরে ঘুম দিয়েছিল সে।

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সঞ্জয় রায় চারবার বিয়ে করেছে। সম্ভবত এমন বিকৃত ও হিংস্র মানসিকতার কারণেই তার ৩ স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যান। অন্যদিকে চতুর্থ স্ত্রী গত বছর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত হন।

মাতাল অবস্থায় ধরা পড়েন সঞ্জয় রায়

শুক্রবার যখন পুলিশ তাকে ধরেছিল, তখনও সে মদ্যপ অবস্থায় ছিল। প্রাথমিকভাবে সে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ, ব্লুটুথ এবং তার কাছ থেকে পাওয়া অন্যান্য প্রমাণের পর অবশেষে সে অপরাধের কথা স্বীকার করে নেয়। 

প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পরে, সঞ্জয় অপরাধের জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রক্তের দাগ মুছে ফেলার চেষ্টা করে। ঘটনার পর বাড়িতে গিয়ে জামাকাপড় ধুয়ে দেয়। তবে রক্তের দাগ ওঠেনি।  ভেজা কাপড়ের পাশাপাশি রক্তমাখা জুতা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

ডাক্তারের শরীর ক্ষত-বিক্ষত ছিল

চিকিৎসককে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হলেও তাঁর সারা শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শুক্রবারই দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।

নিজেই ফাঁসি দেওয়ার দাবি

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে অভিযুক্ত অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।  জিজ্ঞাসাবাদে সে একাধিকবার পুলিশকে সে বলেছে, সে তার কৃতকর্মের শাস্তি চায়, তার ফাঁসি হওয়া উচিত।

Advertisement

 

ডিএনএ এবং ফরেনসিক তদন্ত

সঞ্জয় রায়ের ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা জানার চেষ্টা করবেন যে, শুধু একজনেরই নমুনা আছে নাকি, একাধিক ব্যক্তির রয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তের জামাকাপড়, জুতো, মোবাইল ফোন ইত্যাদি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে, যাতে জামাকাপড় ও জুতায় পাওয়া রক্তের দাগ পরীক্ষা করা যায় এবং তাদের ডিএনএও পরীক্ষা করা যায়। অন্যদিকে পুলিশ মোবাইল ফোনের অবস্থানের পাশাপাশি তাতে সংরক্ষিত ডেটার ডিটেইলস জানার চেষ্টা করছে।

খবরটি হিন্দিতে পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement