সইফ আলি খানের ওপর হামলার ঘটনায় ধৃত মহম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদের বিরুদ্ধে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। সূত্রের খবর, শেহজাদ আগেও সইফের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তিনি একটি হাউসকিপিং(সাফাইকর্মী) সংস্থায় কাজ করতেন। সইফের বাড়িতে সাফাইয়ের কাজকর্ম থাকলে তিনি তাঁর কর্মচারী হরিকে দিয়ে এই সাফাই সংস্থাকে ডেকে পাঠাতেন। সেই সাফাই সংস্থার মাধ্যমেই গিয়েছিলেন তিনি।
ঠিক কী ঘটেছিল সেই রাতে?
অভিযুক্ত শেহজাদ ১৬ জানুয়ারির ভোরে সইফের বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকে ছুরি দিয়ে অভিনেতাকে একাধিকবার আঘাত করেন। অভিযোগ, চুরির উদ্দেশ্যে তিনি সইফের ফ্ল্যাটে ঢুকেছিলেন।
এমন বিলাসবহুল আবাসনে নিরাপত্তারক্ষী থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ঘটনার রাতে কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষী ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। আর সেই সুযোগে পাঁচিল টপকে কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়েন শেহজাদ। এরপর সোজা ১১ তলায় উঠে পড়েন। ডাক্ট শ্যাফট ব্যবহার করে সইফের ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন। সেটা কী? আসলে বড় অফিস, আবাসনে হাওয়া চলাচলের জন্য সিলিং বরাবর বড় ডাক্ট থাকে। এর মাধ্যমে এসির হাওয়াও চলাচল করে। সেই ডাক্ট শ্যাফটের ভিতর দিয়েই ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢুকে পড়েন শেহজাদ। এরপর সইফের বাড়ির ছোটদের ঘরের কাছাকাছি একটি বাথরুমে লুকিয়ে ছিলেন।
শেহজাদের নাম নিয়ে বেশ বিভ্রান্তিতে পড়েন তদন্তকারীরা। কেউ তাঁকে চেনে বিজয় দাস হিসাবে। আবার কারও কাছে তার নাম মোহাম্মদ ইলিয়াস। কেউ আবার বিজয় দাসকে সংক্ষেপে 'বিজে' বলে ডাকেন। থানের হিরানন্দানি এস্টেটের একটি মেট্রো নির্মাণ সাইটের লেবার ক্যাম্প থেকে রবিবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, শেহজাদ আগে ওরলিতে থাকতেন। ঘটনার দিন তিনি ট্রেনে চেপে থানে যান। সেখানে একজন বাইকচালক তাঁকে তুলে নিয়ে যান। বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ট্র্যাক করে পুলিশ তাঁকে ১৮ জানুয়ারি ঘোড়বন্ধর থেকে গ্রেফতার করে।
মুম্বাই পুলিশের ডিসিপি দীক্ষিত গেদাম জানিয়েছেন, 'মহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদ ডাকাতির উদ্দেশ্যে সাইফের ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং শীঘ্রই আদালতে পেশ করা হবে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তাঁর আগের কোনও অপরাধমূলক রেকর্ড নেই।'
ডিসিপি আরও জানিয়েছেন, 'আমাদের সন্দেহ, অভিযুক্ত বাংলাদেশি নাগরিক। তার কাছে কোনও বৈধ ভারতীয় নথি পাওয়া যায়নি। তিনি বিজয় দাস নাম ব্যবহার করতেন।'
পুলিশ আরও জানিয়েছে, অভিযুক্ত প্রায় ৫-৬ মাস আগে মুম্বাই এসেছিলেন এবং একটি হাউসকিপিং সংস্থায় কাজ করছিলেন।
হামলার পরে সিসিটিভি ফুটেজে শেহজাদকে সইফের বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখা যায়। সেই ছবি মুম্বই এবং আশপাশের এলাকার সমস্ত পুলিশ স্টেশনে পাঠিয়ে তল্লাশি শুরু হয়। আর তাতেই সাফল্য পায় মুম্বই পুলিশ।