জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে জঙ্গিহানার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 'যুদ্ধং দেহি' মনোভাব নিয়েছে দেশের কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যে মক ড্রিলের ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার দেশজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় হবে এই মহড়া। অন্যান্য একাধিক রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও চলবে মক ড্রিল। তা নিয়ে একপ্রস্থ বৈঠকও হয়েছে মঙ্গলবার।
বাজবে সাইরেন। নিভে যাবে সব আলো। যুদ্ধ শুরু হলে কীভাবে নিজেদের প্রতিরক্ষা করবে জনগণ? সেই বিষয়েই মানুষকে সর্তক করতে বুধবার অর্থাৎ ৭ই মে, দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যে মহড়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
রাজস্থান, গুজরাত, পঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরের সীমানা এলাকায় মহড়া বা মক ড্রিলে বিশেষ জোর দেবে শাহের মন্ত্রক। মহড়া চলবে বাংলার একাধিক এলাকাতেও। বিশেষ নজর থাকবে উত্তরবঙ্গে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, বাংলার ৩১ এলাকায় আগামিকাল চলবে এই মহড়া। ব্ল্যাক আউট হলে কী করণীয়, সেই নিয়ে মক ড্রিল চলবে কলকাতাতেও। তবে সব থেকে বেশি মক ড্রিল চলবে উত্তরবঙ্গে। সাধারণ ভাবেই, নানা সময় সন্ত্রাসবাদীদের ট্রানজিট রুট এই উত্তরবঙ্গই হয়ে থাকে, সেই ভিত্তিতেই উত্তরবঙ্গকে বেশি জোর দিচ্ছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
সারা দেশের ২৪৪টি জেলায় মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। মক ড্রিলের অধীনে বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো হবে। এটি বড় বিপদ এবং শত্রুর কার্যকলাপ সম্পর্কে সতর্কতা জারি করার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি পদক্ষেপ। সম্ভাব্য আক্রমণের ক্ষেত্রে নিজেদের রক্ষা করার জন্য নাগরিক এবং শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় নাগরিক প্রতিরক্ষা কৌশল সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বাংলার কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, মালদা, শিলিগুড়ি, দুর্গাপুর, বৃহত্তর কলকাতা, হলদিয়া, হাশিমারা, খড়গপুর, বানপুর-আসানসোল, ফারাক্কা-খেজুরিয়া ঘাট, চিত্তরঞ্জন, বালুরঘাট, আলিপুরদুয়ার, রায়গঞ্জ, ইসলামপুর, দিনহাটায় এই মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হবে।
এই তালিকায় আছে মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙ্গা, কালিম্পং, জলঢাকা, কার্সিয়ং, কোলাঘাট, বর্ধমান, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চি মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদও।
দেশের মোট ২৫৯টি এলাকায় মক ড্রিল করাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। যাতে যোগ দেবে NCC-ও। বাজবে এয়ার সাইরেন। স্কুল, অফিস ও কমিউনিটি সেন্টারে হবে যুদ্ধকালীন ওয়ার্কশপ। হামলা হলে কাছাকাছি আশ্রয়স্থলে কীভাবে খুঁজে বের করতে হবে, তা শেখানো হবে। প্রাথমিক চিকিৎসা করাও শেখানো হবে। এছাড়াও, মিলিটারি বেস, পাওয়ার প্লান্ট বা গুরুত্বপূর্ণ বিল্ডিংগুলি এমনভাবে ঢেকে দেওয়া হবে, যাতে স্যাটেলাইটে ধরা না পড়ে।
এদিন নবান্নে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব সহ সিভিল ডিফেন্স সচিব, ডিজি সিভিল ডিফেন্স অন্যান্যরা। সেই বৈঠকে রাজ্য প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, বাংলা যেহেতু বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাজ্য, পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানও রয়েছে, তাই এখানকার সীমান্ত সুরক্ষার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজ্যকে নিজের মতো করে সংবেদনশীল এলাকা চিহ্নিত করার জন্য বলা হয়েছে।
বুধবারের মহড়ায় অংশ নেবেন ডিএম, এসপি, বিদ্যুৎ বিভাগের আধিকারিক, দমকল, পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স এবং হোমগার্ড, ডাক্তার, নার্স, এনসিসি স্বেচ্ছাসেবক, স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা।