বুধবার বিশ্বে জরুরি ব্যবহারের জন্য আরও একটি ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চিনের সিনোভ্যাক বায়োটেক লিমিটেডের টিকাকে ছাড়পত্র দিয়েছে হু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে এটি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহার করা যাবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ১৮ বছর বা তার থেকে বেশি বয়সের মানুষের শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যাবে। এ ক্ষেত্রেও দু’টি টিকা নিতে হবে। তবে দু’টি টিকার মধ্যে ব্যবধান থাকবে ২ থেকে ৪ সপ্তাহ।
এদিকে ভারত ইতিমধ্যে দেশিয় টিক কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড ছাড়পত্র দিয়েছে। এছাড়া প্রথম বিদেশি টিকা হিসাবে রাশিয়ার স্পুটনিককেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এবার ফাইজার ও মডার্নার ক্ষেত্রেও কিছুটা সুর নরম করল ভারত সরকার।
জরুরি ভিত্তিতে ভারতে ফাইজার ও মডার্নার টিকা ব্যবহার করতে হলে আলাদা করে ট্রায়ালের প্রয়োজন নেই বলে আগেই জানিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)। এই দুই টিকা সংস্থাকে এ বার ক্ষতিপূরণের দায় থেকে ছাড় দেওয়া হতে পারে বলেই কেন্দ্রীয় সূত্রে এখন জানা যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, যদি এই দুই মার্কিন টিকা সংস্থা ভারতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমতি চায় তাহলে সরকার তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে প্রস্তুত। এর পরেই আশা করা যাচ্ছে অন্যান্য দেশে যে ভাবে ফাইজার ও মডার্নাকে ক্ষতিপূরণের দায় থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে সেই মতো ভারতেও তা দেওয়া হবে
ইতিমধ্যে ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা Cipla-র সঙ্গে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা মডার্নার আলোচনা চলছে।
এদিকে বিশ্বে অন্যতম জনিপ্রয় হয় ওঠা যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ভ্যাকসিন নিয়েও এদেশে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। এদেশের টিকা বাজার ধরতে ভারতের সুরক্ষা আইন মোতাবেক প্রথমে ভ্যাকসিন পাঠাতে রাজি হয়নি ফাইজার।ফাইজার তরফে বলা হয়, ভারতের ভ্যাকসিন পাঠানোর নিয়ে রীতিমতো আলোচনা চলছে। শীঘ্রই কোনও সিদ্ধান্তে আসা যাবে।
সূত্রের খবর এই অবস্থায় দেশের সুরক্ষা আইনের কিছু জটিলতা কমাতে চলেছে ভারত সরকার। সরকারের একটি সূত্র ক্ষতিপূরণ দানের বিষয়ে বলেছে, ক্ষতিপূরণ কভারেজ দেওয়ার বিষয়ে অন্যান্য দেশগুলিতে অনুসরণ করা নিয়মের দিকেই নজর দেওয়া হবে। এর ফলে জুলাইতেই ফাইজারের টিকা এদেশে পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে।
সম্প্রতি শিশুদের উপর ভ্যাকসিন পরীক্ষার দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্বের ফলাফল প্রকাশ করেছে মডার্না। এই ভ্যাকসিন শিশুদের ডোজ গ্রহণের ক্ষেত্রে ৯৩ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে এদেশে মডার্নার ভ্যাকসিন এলে শিশুদের টিকাদানের ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
দেশিয় ভ্যাকসিন কোভ্যাকসিন ও কোভিশিল্ডের চাহিদা বৃদ্ধি এবং উৎপাদন কম হওয়ায় টিকা ঘাটতি রয়েছে দেশে এমন অভিযোগ উঠছে। এই আবহে আইসিএমআর-এর প্রধান বলরাম ভার্গব জানিয়েছেন, জুলাইয়ের শেষ বা অগাস্টের শুরুতেই দেশে পর্যাপ্ত করোনা টিকা মিলবে। তখন দিনে ১ কোটি মানুষের টিকাকরণ করা সম্ভব হবে। চলতি বছরের শেষে টিকা পাবেন দেশের ১০৮ কোটি মানুষ।