Air India Plane Crash: 'মে ডে, মে ডে, মে ডে...' বিমান দুর্ঘটনার ঠিক শেষ মুহূর্তে বিশেষ সংকেত পাঠিয়েছিলেন পাইলট। আহমেদাবাদের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার, ১২ জুন দুপুরে গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল ফ্লাইট AI-171। কিন্তু উড়ানের মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই ক্র্যাশ করে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান।
ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশনের (DGCA) তরফে জানানো হয়েছে, ওই বিমানে মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে দুই পাইলট ও ১০ জন কেবিন ক্রুও ছিলেন। বিমান চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাবরওয়াল। পাইলটদের বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ঘণ্টা দিয়ে মাপা হয়। সেই হিসাবে তাঁর প্রায় ৮,২০০ ঘণ্টার ফ্লাইট এক্সপিরিয়েন্স ছিল। সঙ্গে ছিলেন ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দর। তাঁর ফ্লাইট আওয়ার ছিল ১,১০০ ঘণ্টা।
DGCA-র তথ্য অনুযায়ী, এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমানটি আহমেদাবাদ এয়ারপোর্টের রানওয়ে নম্বর ২৩ থেকে দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে উড়ান শুরু করে। কিন্তু উড়তে না উড়তেই বিপদ আঁচ করেন ক্যাপ্টেন। মুহূর্তেই এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলকে (ATC) 'MAYDAY' কল দেন। কিন্তু এরপর আর কোনও সিগন্যাল মেলেনি। এর কয়েক সেকেন্ড পরেই বিমানটি নেমে আসে নিকটবর্তী একটি মেডিকেল হোস্টেলের উপর।
'MAYDAY' কল কী?
উড়ানের সময় কোনও গুরুতর বিপদ হলে পাইলটরা এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলকে সতর্ক করতে 'মে ডে কল' ব্যবহার করেন। এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এমার্জেন্সি সংকেত। সাধারণত তিনবার 'Mayday, Mayday, Mayday' বলা হয়। এর অর্থ এটাই যে, এটি যে কোনও রুটিন কমিউনিকেশন নয়। জীবন-মরণ পরিস্থিতি। যেমন, বিমানে আগুন লাগা, ইঞ্জিন ফেইলিওর, হাইজ্যাক কিংবা অন্য কোনও বড় সমস্যার ক্ষেত্রে এই সংকেত পাঠানো হয়।
এই কল পেলেই ATC সঙ্গে সঙ্গে অন্য সব কাজ থামিয়ে সংশ্লিষ্ট বিমানের জন্য সব রকম এমার্জেন্সি প্রিকশন নিতে শুরু করে। যেমন ধরুন—রানওয়ে খালি করা, অ্যাম্বুলেন্স-মেডিক্যাল টিম সাপোর্ট রেডি রাখা।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, পরিস্থিতি অতটা ভয়াবহ না হলে, সেক্ষেত্রে পাইলট 'Pan-Pan' কল দেন। এটি তুলনামূলকভাবে কম গুরুতর সংকেত।
কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল?
DGCA বলছে, উড়ান শুরুর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ককপিট থেকে এই সংকেত আসে। রানওয়ে ছাড়ার সময় কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি বা অন্য কোনও বিপর্যয় ঘটে থাকতে পারে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। তবে তদন্তের আগে এই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাবে না।
তবে, কীভাবে এত অভিজ্ঞ পাইলট থাকা সত্ত্বেও এমন দুর্ঘটনা ঘটল, তাই নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
একইসঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বিমানের টেকনিক্যাল রিপোর্ট, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের রেকর্ডিং, এবং পাইলটদের শেষ কথোপকথন। আপাতত পুরো বিষয়টি নিয়ে গুরুতর পর্যায়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে।