নিটের প্রশ্নফাঁস ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগে পরীক্ষা আয়োজক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এবার বিতর্কের আবহেই অবাধ এবং স্বচ্ছ পরীক্ষা করতে নিটের সংস্কারে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। শনিবার এই কমিটির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ৭ সদস্যের কমিটির মাথায় রাখা হয়েছে ইসরোর প্রাক্তন প্রধান ড. কে রাধাকৃষ্ণনকে।
পরীক্ষা পদ্ধতিতে কী কী সংস্কার আনা জরুরি, সে ব্যাপারে সুপারিশ করবে ওই কমিটি। আগামী ২ মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা করতে হবে।
এই প্রসঙ্গে এক্স হ্যান্ডলে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান লিখেছেন, 'স্বচ্ছ, কুপ্রভাব মুক্ত, নির্ভুল পরীক্ষা করা আমাদের অঙ্গীকার।'
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে চলতি বছরের নিট পরীক্ষা বাতিল করার দাবি জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। গত মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির কাছে জবাব তলব করেছে শীর্ষ আদালত। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, 'পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা জবাব চাই।' নিট পরীক্ষা ঘিরে বিতর্কের মধ্যে UGC NET-এর জুন মাসের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। স্বচ্ছতার প্রশ্নে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৮ জুন এই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। ২টি শিফটে পরীক্ষা নিয়েছিল ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, নতুন করে ফের এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। এই ব্যাপারে শীঘ্রই জানানো হবে। জানা গিয়েছে, ওই পরীক্ষায় কিছু অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। বুধবার ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম থ্রেট অ্যানালাইসিস ইউনিটের কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশন বা ইউজিসি। সেখানে জানানো হয়েছে যে, ওই পরীক্ষায় বেশ কিছু অনিয়ম হয়েছে। তারপরেই স্বচ্ছতার প্রশ্নে পুরো পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রক। এই ঘটনায় তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে CSIR-NET-ও।
ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট এবং কলেজে অধ্যাপক নিয়োগের পরীক্ষা ইউজিসি নেট ঘিরে বিতর্কের আবহে প্রশ্নফাঁস রুখতে বিশেষ আইন নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিল কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং পরীক্ষায় জালিয়াতি রুখতে কড়া শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে এই আইনে। পরীক্ষা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যেই এই আইন কার্যকর করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল। পাবলিক এগজামিনেশনস (প্রিভেনশন অফ আনফেয়ার মিনস) আইন ২০২৪ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পাস হয়েছিল আইনটি। দেশে বিভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোখার উদ্দেশ্যেই এই আইনটি আনা হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, সর্বভারতীয় কোনও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, দুর্নীতির অভিযোগে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে কমপক্ষে ৩-৫ বছরের কারাদণ্ড এবং সংগঠিত অপরাধের ক্ষেত্রে ৫-১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করা হবে।