
রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ভোটে জেতার কৌশল পরামর্শ দেওয়া প্রশান্ত কিশোর কি নিজে ভোটের ময়দানে নেমে সাফল্য পাচ্ছেন? বিহার ভোট নিয়ে যাবতীয় এগজিট পোলে যা রেজাল্ট দেখা যাচ্ছে, তাতে রাজনৈতিক লড়াইয়ে বুদ্ধি দেওয়া ও সরাসরি রাজনীতি করার মধ্যে ফারাক রয়েছে। ভোট রাজনীতিতে যে তত্ত্বটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেই সংখ্যাতত্ত্বেই ধাক্কা খাচ্ছেন জন সুরাজ পার্টির নেতা প্রশান্ত কিশোর। বিহারের রাজনীতিতে যে ভাবে উঠেছে এসেছে প্রশান্তর নাম, ভোট সংখ্যায় তা কনভার্ট করতে পারছে না বলেই এগজিট পোলে ইঙ্গিত।
প্রায় সব এগজিট পোলেই এগিয়ে NDA
সব এগজিট পোল রেজাল্টেই দেখা যাচ্ছে, ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় ফিরছে NDA জোট। যদি তা সত্যি হয়, তাহলে প্রশ্ন থাকবে, নীতীশ কুমারকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী করা হবে কিনা, তা নিয়ে। যাই হোক, এটা বোঝা যাবে ১৪ নভেম্বরের পরে। কিন্তু প্রশান্ত কিশোরের দল জন সুরাজের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, রাজনৈতিক ময়দানে কার্পেট বেছাতে সক্ষম হলেও, ক্ষমতা বহু দূর। সব এগজিট পোলে ইঙ্গিত, ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় ১২২ আসনের ম্যাজিক ফিগার পেরিয়ে যাচ্ছে। অর্থাত্ সরকার গড়তে কোনও সমস্যা নেই। নির্দল মোটামুটি ৮টি আসন পেতে পারে বলে প্রায় সব বুথ ফেরত সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে।
এগজিট পোল রেজাল্ট বলছে, প্রশান্ত কিশোর জনতার মনে খানিক ছাপ ফেললেও ভোটবাক্সে তার প্রভাব নেই। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কোন এগজিট পোল ঠিক কত নম্বর দিচ্ছে প্রশান্ত কিশোরের দল জন সুরাজকে। চাণক্য স্ট্র্যাটেজিস এগজিট পোল জন সুরাজ পার্টিকে শূন্য আসন দিয়েছে। দৈনিক ভাস্করের পূর্বাভাস বলছে, শূন্য থেকে ৩টি আসন। DV রিসার্চের এগজিট পোল রেজাল্ট বলছে, ২ থেকে ৪টি আসন। এগজিট পোলের পুরো তালিকা রইল নীচে। সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, প্রশান্ত কিশোরের দলের অবস্থা সুবিধের নয়।
একসময় নীতীশ ও নরেন্দ্র মোদী, দুজনকেই রাজনৈতিক পরামর্শ দিয়েছেন
বছর খানেক আগে জন সুরাজ পার্টি তৈরি করেছেন প্রশান্ত কিশোর। বিহারের ভোট রাজনীতিতে নবীনতম দল। তার আগে ৩ বছর ধরে গোটা বিহারে পদযাত্রা করেছেন। যার নির্যাস, ২০২৫ সালের বিধানসভা ভোট ছিল প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ পার্টির ডেবিউ। মূলত, নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে NDA জোট ও তেজস্বী যাদবের মহাগঠবন্ধনের বিরুদ্ধে লড়াই। একসময় নীতীশ ও নরেন্দ্র মোদী, দুজনকেই রাজনৈতিক পরামর্শ দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। সেই প্রশান্ত কিশোর বিহার ভোটে নেমেছিলেন কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যু নিয়ে। সভাগুলিতে বেশ ভিড় চোখে পড়েছে।
ডেবিউ ম্যাচে প্রশান্ত কিশোরের রান পেলেন না
কিন্তু এগজিট পোলে দেখা যাচ্ছে, বিহারবাসী জন সুরাজ পার্টিকে এখনই ভরসা করতে পারছেন না। আরেকটু সময় দিতে চান। তাই সভা, মিছিলে জনসংখ্যা চোখে পড়ার মতো হলেও, আসন সংখ্যায় তার প্রভাব নেই। যদি এগজিট পোল রেজাল্টের সঙ্গে ১৪ তারিখের ফলাফলে বিশাল কিছু বদল না ঘটে, তাহলে ডেবিউ ম্যাচে প্রশান্ত কিশোরের রান পেলেন না, বলাই যায়।