ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় শনিবার ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে জানান, আদালতে বিচারপতিরা যে কাজ করেন, তা কাজের একটা অংশ মাত্র। তিনি বলেন, 'সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত যে কাজগুলো আমরা করি সেটা আমাদের কাজের একটি অংশ।'
'মাই আইডিয়া অফ ইন্ডিয়া অ্যান্ড দ্য ইমপোর্টেন্স অফ সেপারেশন অফ পাওয়ারস ইন অ্যা ডেমোক্রেসি' বিষয়ে তাঁর মতামত রেখে বলেন, 'প্রতি শনিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যেক বিচারপতি তাঁদের আদেশ দেন। রবিবার আবার একই আদেশ পড়েন। যা সোমবার তাকে শোনাতে হবে। সেই কারণে সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতি ৭ দিন কাজ করেন।'
তিনি বলেন, 'আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট মাসে ৮ থেকে ৯ দিন এবং বছরে ৮০ দিন কাজ করে। আদালতে ৩ মাস কোনও কাজ হয় না। একইভাবে, অস্ট্রেলিয়ার হাইকোর্ট মাসে দুই সপ্তাহ শুনানি করে। বেঞ্চ বছরে ১০০ দিনেরও কম সময় বসে। আদালতে ২ মাসের ছুটি রয়েছে। সিঙ্গাপুরের আদালত বছরে ১৪৫ দিন কাজ করে, কিন্তু ব্রিটেন এবং ভারতের আদালত ২০০ দিন কাজ করে।'
মাননীয় বিচারপতি আরও জানান, সাধারণ মানুষ জানে না যে, ভারতের বিচারপতিরা তাঁদের বেশিরভাগ ছুটির দিনেও কাজ করেন। তাঁদের আদেশ লিখতে হয়। আর গোটা সপ্তাহ কাজ করেন। আদালতে যান। মামলা শোনেন।
মাননীয় বিচারপতি আরও জানান, ভারতে মামলার সংখ্যা বেশি। তবে বিচারবিভাগের তরফে বিষয়টা দেখা হচ্ছে। তাঁর কথায়, 'বিচারাধীন মামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বিচার বিভাগে প্রযুক্তির পরিবর্তন আনাই লক্ষ্য। যেমনটি আমরা কোভিডের সময় করেছিলাম। আমরা পুরো সিস্টেমটি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে নিয়ে এসেছি, কিন্তু এখন আমাদের এর বাইরেও ভাবতে হবে। আমি চাই নাগরিকরা আদালতে কী ঘটছে তা জানতে, তাই লাইভ স্ট্রিমিং শুরু করা হয়েছিল। আমরা সংবিধানে অনুমোদিত সমস্ত ভারতীয় ভাষায় AI এর মাধ্যমে আদেশের অনুবাদও শুরু করেছি।'
আদালতের উপর বাইরের চাপের প্রশ্নে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, '২৩ বছর হয়ে গেছে বিচারক হিসেবে কাজ করেছি, কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ বলেনি মামলার রায় কীভাবে হবে।' তিনি বলেন, 'সরকারের পক্ষ থেকে বিচার বিভাগের উপর কোনও চাপ নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তই প্রমাণ করে যে বিচার বিভাগের উপর কোনো চাপ নেই।'