গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার ভারতীয় সেনা প্রদীপ কুমারের কাছ থেকে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। গোয়েন্দাদের তদন্তে পাকিস্তানি হানি গার্লের অনেক ছবি এবং ভিডিও সামনে এসেছে। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর মহিলারা হানিট্র্যাপ এজেন্ট হয়ে বলিউড থিমের রিল তৈরি করে ভারতীয় সেনাদের পাঠাত।
রাজস্থানের যোধপুরে পোস্টেড উত্তরাখণ্ডের জওয়ান প্রদীপ কুমারের মোবাইলে পাওয়া ছবি ও ভিডিও থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। আইএসআই মহিলা এজেন্ট বিভিন্ন নামে একাধিক সেনাকে ভিডিও পাঠাত। কখনও রিয়া শর্মা, কখনও লীনা শর্মা আবার কখনও হারলিন কৌর নামে ইনস্টাগ্রামে সক্রিয় থাকত ওই এজেন্ট।
স্নান করা থেকে গান গাওয়া, বিভিন্ন সময়ের ভিডিও ও ছবি ভারতীয় সেনা জওয়ানকে পাঠাত ওই এজেন্ট। ধৃত জওয়ানকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল সে। প্রতি মাসে দেখা করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। দিল্লিতেও ওই জওয়ানকে দেখা করার জন্য ডাকা হয়। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, পাকিস্তানি মেয়েরা এমন ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে বহু ভারতীয় সেনাকে ফাঁদে ফেলেছে।
গোয়েন্দা নজরদারিতে এটি জানা যায় যে, সেনা জওয়ান প্রদীপ কুমার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাকিস্তানি মহিলা এজেন্টের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছেন এবং গুরুত্বপূরণ তথ্য শেয়ার করছেন। এরপর, জওয়ানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ১৮ মে বিকেলে তাকে হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।
উত্তরাখণ্ডের জওয়ান
রাজস্থান ইন্টেলিজেন্সের ডিজি উমেশ মিশ্র জানিয়েছেন, ২৪ বছর বয়সী প্রদীপ কুমার উত্তরাখণ্ডের কৃষ্ণ নগর গঙ্গা খালের বাসিন্দা। ৩ বছর আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। প্রশিক্ষণের পর প্রদীপের প্রথম পোস্টিং হয় গানার পদে। এরপর অভিযুক্তের পোস্টিং হয় যোধপুরের অত্যন্ত সংবেদনশীল ৮৮১ রেজিমেন্ট।
জওানের মোবাইলে কল
তদন্তে দেখা গিয়েছে যে এই পাকিস্তানি মেয়েটি তার নাম পরিবর্তন করে প্রায় ৬-৭ মাস আগে জওয়ানের মোবাইল ফোনে করেছিল। তারপর উভয়েই হোয়াটসঅ্যাপ, চ্যাট, ভয়েস কল এবং ভিডিও কলে কথা বলতে শুরু করে এবং অবশেষে জওয়ান ফাঁদে পড়ে। মধুর ফাঁদ.
গোয়ালিয়রের বাসিন্দা বলে পরিচয়
মেয়েটি নিজেকে গোয়ালিয়রের বাসিন্দা এবং বেঙ্গালুরুর একটি মাল্টি-ন্যাশনাল সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দেয়। এরপর ওই এজেন্ট দিল্লিতে প্রদীপ কুমারের সঙ্গে দেখা করে বিয়ে করার অজুহাতে সেনাবাহিনী সংক্রান্ত গোপন নথির ছবি চাইতে শুরু করে।
গোপন নথি লিক
হানিট্র্যাপে ফেঁসে গিয়ে ওই জওয়ান গোপনে তাঁর মোবাইল থেকে অফিসের গোপন নথির ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ওই মহিলার কাছে পাঠায়। অভিযুক্তের মোবাইল ফোনের তদন্ত করে সত্যতা নিশ্চিত করার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।