দেশের প্রথম ভিক্ষুক মুক্ত শহরের তকমা পেল ইন্দোর। এক বছর আগেও সেখানে কম বেশি ৫ হাজার ভিক্ষুককে রাস্তাঘাটে দেখা যেত। এর পরই একটি ক্যাম্পেন শুরু করে প্রশাসন।
জেলাশাসক আশিস সিং বলেন, 'ইন্দোর এখন দেশের প্রথম ভিক্ষুক মুক্ত শহর। কর্মসংস্থান হয়েছে এখানকার ভিক্ষুকদের। ফলে ভিক্ষাবৃত্তির পেশা ত্যাগ করেছেন সকলেই। সে সকল শিশুরা রাস্তায় ভিক্ষা করে দিন গুজরান করত, তাদের স্কুলে ভর্তির বন্দোবস্ত করা হয়েছে।'
ভিক্ষাবৃত্তির পেশাকে নির্মূল করার জন্য যে ক্যাম্পেন ইন্দোরে চালু করা হয়েছিল, তা ইতিমধ্যেই মডেল হয়ে উঠেছে বলে জানান জেলাশাসক। সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের তরফে ইতিমধ্যেই সেই ক্যাম্পেনকে পৃথক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক টিমও ক্যাম্পেনটি সম্পর্কে অবগত।
ভিক্ষুক নির্মূল করার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ১০টি শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রের তরফে। সেই তালিকায় উপরেই ছিল ইন্দোর। মধ্যপ্রদেশের মহিলা এবং শিশু উন্নয়ন দফতরের আধিকারিক রামনিবাস বুধোলিয়া বলেন, '২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই ভিক্ষুক নির্মূল ক্যাম্পেন শুরু করেছিলাম আমরা। প্রায় ৫ হাজার ভিক্ষুক ছিল এ শহরে। তার মধ্যে ৫০০ জন শিশু। ক্যাম্পেনের প্রথম ধাপে আমরা সচেতনতামূলক ক্যাম্পেন শুরু করেছিলাম। তারপর পুনর্বাসন দেওয়া শুরু হয় ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে জড়িতদের। এমন অনেক ভিক্ষুককে চিহ্নিত করা গিয়েছে যাঁরা রাজস্থান থেকে ইন্দোরে এসেছিলেন।'
ইন্দোর শহরে ভিক্ষা চাওয়া, ভিক্ষা দেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় এখনও পর্যন্ত ৩টি FIR দায়ের হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে কাউকে ভিক্ষাবৃত্তি করতে দেখলে তা রিপোর্ট করার অনুরোধ করা হয়েছে আম নাগরিকদের। রিপোর্ট করলেই হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ইন্দোরের একাধিক বাসিন্দা পুরস্কার পেয়ে গিয়েছেন।
ভিক্ষুকদের রুখতে পরপর অভিযান চালানো হয়েছে ইন্দোরে। সেই কাজ করতে গিয়ে নানারকম অভিজ্ঞতা হয়েছে সরকারি কর্মীদের। এক বৃদ্ধা ভিক্ষুকের কাছ থেকে মিলেছে ৭৫ হাজার টাকা। কোনও ভিক্ষুকের পাকা বাড়ির খোঁজ মিলেছে। কোথাও দেখা গিয়েছে, কারও সন্তান ভালো কোনও চাকরি করেন। রাজস্থান থেকে একটি পরিবার ইন্দোরে এসে একটি হোটেলে থেকে শহরে ভিক্ষা করছিল, এমন ঘটনাও দেখা গিয়েছে।