যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশে আগেই অনুমোদন পেয়েছে, এবার প্রতিবেশী মধ্যপ্রদেশ মন্ত্রিসভাতেও অনুমোদন পেল লাভ জিহাদ বিরোধী আইন। ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩ দিনের শীতকালীন অধিবেশন বসছে মধ্য়প্রদেশ বিধানসভায়। তার আগেই মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেল লাভ জিহাদ বিল। এই বিলে জোর করে ধর্মান্তকরণের বিরুদ্ধে কড়া সাজার কথা বলা হয়েছে। যেখানে সর্বাধিক ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে দোষ প্রমাণিত হলে মোটা টাকা জরিমানা গুনতে হবে অভিযুক্তকে। সেক্ষেত্রে বিয়েতে অংশ নেওা মৌলভী বা পুরোহিতকেও শাস্তি পেতে হবে বলে বিধান থাকছে এই আইনে।
ওই বিলটি আইনে পরিণত হলে, নাবালিকা অথবা নিম্নবর্গের মহিলাদের জোর করে ধর্মান্তরণের অভিযোগ যদি প্রমাণ হয়, সে ক্ষেত্রে দোষীদের ২ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। জরিমানা হতে পারে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র বলেন, রাজ্যের র্মীয় স্বাধীনতা বিল ২০২০ অনুযায়ী কোনও নাবালক, মহিলা, তফশিলি জাতি ও উপজাতির কোনও ব্যক্তিকে জোর করে ধর্মান্তরিত করলে ন্যূনতম ২ থেকে ১০ বছরের জেল হবে। সেইসঙ্গে ন্যূনতম জরিমানা ৫০ হাজার টাকা। মন্ত্রিসভায় পাশ হওয়ার পর এবার বিল পেশ করা হবে মধ্যপ্রদেশের বিধানসভায়। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৯৬৮ সালে ধর্মীয় স্বাধীনতা বিলের পরিবর্তে এই বিল আনা হচ্ছে। জরিমানার পরিমাণ এত বেশি কেন? এই প্রশ্নের জবাবে নরোত্তম মিশ্র বলেছেন,মানুষের মধ্যে ভয় তৈরি করতেই এটি করা হয়েছে। জোর করে যদি তপশীলী জাতি বা তপশিলি উপজাতির কাউকে ধর্মান্তকরণ করা হয় লাভ জিহাদের নামে তাহলে সেই সাজা দ্বিগুণ হবে।
মহিলা ছাড়া অন্য যে কাউকে জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ প্রমাণ হলে ১ থেকে ৫ বছরের সাজা এবং কমপক্ষে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে বলেও জানান মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে উত্তরপ্রদেশের আইনের থেকে আলাদা মধ্যপ্রদেশের আইন। এক্ষেত্রে কেউ স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হলে জেলাশাসককে অভিযোগ জানানোর প্রয়োজন নেই। তবে কেউ যদি কোনও ধর্মীয় গুরুর কাছে ধর্মান্তরিত হতে যান তাহলে সেই ধর্মীয় গুরুকে জেলা প্রশাসনকে জানাতে হবে।
লাভ জিহাদের মামলায় অভিযুক্তকে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের পূর্ণ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে এই আইনে । ২ মাসের মধ্যে অভিযুক্তকে প্রমাণ করতে হবে জোর করে ধর্মান্তকরণ করা হয়নি। স্বেচ্ছা অভিযোগকারী ধর্মান্তরিত হয়েছেন। যদি সেটা তিনি প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে আইনি পথে পদক্ষেপ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহ্বান জানিয়েছেন, পুলিশ এবং আইন যাতে সঠিক ভাবে কাজ করে সেটা নজর রাখা হবে। এবং কোনও ভাবেই রাজ্যে কোনও রকম জোর করে ধর্মান্তকরণ এবং লাভ জিহাদ মেনে নেওয়া হবে না।
এর আগে, উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার ধর্মান্তরণ প্রতিরোধী আইন পাশ করে। ভিন্ ধর্মে বিবাহের ক্ষেত্রে গোটা দেশে এই আইন কার্যকর করার সপক্ষে দীর্ঘ দিন ধরেই সওয়াল করে আসছে দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। এর পরেই বিয়ের নামে ধর্মান্তরণ বন্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে সম্প্রতি বিশেষ আইন আনতে উদ্যোগী হয় মধ্যপ্রদেশ সরকারও। এ মাসের শুরুতে তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করেন শিবরাজ সিং চৌহ্বান। আগামী দিনে বিজেপি শাসিত কর্ণাটক, হিরয়ানা, অসমও লাভ দিহাদ বিরোধী আইন আনার পথে এগোচ্ছে।