
কয়েকদিন অন্তরই রক্ত নিতে হয় থ্য়ালাসেমিয়া রোগীদের। একদিকে সেই রক্ত পাওয়াটাই যেমন একটি কঠিন বিষয়, অন্যদিকে সেই রক্তের শুদ্ধতা নিয়েও হাজারো প্রশ্ন থাকে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের মনে। সম্প্রতি রক্ত নিয়ে এইচআইভি আক্রান্তের ঘটনায় আরও বেড়েছে সেই উদ্বেগ। এমনই পরিস্থিতিতে সরকারি সহায়তার দাবি করছেন থ্যালাসেমিয়া রোগীরা। ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিল পাশের দাবি তুলছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, রক্তের প্রাপ্যতা ও শুদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য এই বিলই একমাত্র ভরসা। লোকসভায় পুরুষোত্তম রূপালা ও রাজ্যসভায় অজিত গোপচাঁদে, দু’জন সাংসদ বিলটি পেশ করেছেন। বিষয়টি স্বাগত জানিয়েছে থ্যালাসেমিয়া কমিউনিটি।
পশ্চিমবঙ্গের সুনেহা পাল, যিনি দুই মাস বয়সে থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়েন এবং মাত্র আট বছর বয়সে রক্তদূষণে HIV আক্রান্ত হন, বিলটি সংসদে তোলা হয়েছে শুনে আবেগাপ্লুত। বলেন, 'প্রতিটি দিন লড়াই। আমাদের দোষ না থাকলেও HIV-এর কলঙ্ক বইতে হয়। তাই অনুরোধ, এই বিল যেন দ্রুত পাস হয়।'
TPAG, থ্যালাসেমিয়া পেশেন্টস অ্যাডভোকেসি গ্রুপের বক্তব্য, রক্ত সংগ্রহ, পরীক্ষা, সংরক্ষণ, ইস্যু ও ট্রান্সফিউশন; সবক্ষেত্রে দেশে একক মানদণ্ড গড়ে তুলতেই এই বিল ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। জাতীয় পর্যায়ে National Blood Transfusion Authority গঠনের প্রস্তাব, স্বেচ্ছায় রক্তদান বাড়ানো, হেমোভিজিল্যান্স শক্তিশালী করা; সবই এই আইনের অংশ। দীর্ঘদিন ধরে অগোছালো রক্তব্যবস্থার ফলে রোগীদের যে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, এই বিল সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান বলেই দাবি সংগঠনের।
ICMR-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল প্রফেসর এন. কে. গাঙ্গুলির মন্তব্য, 'রক্ত পরিষেবার শাসন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ জরুরি। এই বিল সেই বিজ্ঞানভিত্তিক কাঠামো এনে দেবে।'
TPAG-এর সদস্যসচিব অনুভা মুকার্জির দাবি, 'রক্ত আমাদের চিকিৎসা নয়, বেঁচে থাকার উপায়। রোগীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ রক্ষায় এই আইন অত্যন্ত জরুরি।'