বাংলায় তৃণমূল ও আইপ্যাকের সম্পর্ক ঠিক কোন জায়গায় রয়েছে, তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা। এর মাঝেই নয়াদিল্লিতে পুরনো সঙ্গী নীতীশ কুমারের সঙ্গে নৈশভোজ সারলেন প্রশান্ত কিশোর। দু'তরফেই এটা নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে দাবি করা হয়েছে। নীতীশ জানান, 'প্রশান্তকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি। বড় ব্যাপার নয়।'
২০১৫ সালে নীতীশের সঙ্গে কাজ করেছিলেন প্রশান্ত। ২০১৪-র বিপর্যয়ের পর সে বছর বিহারে সরকার গড়তে সক্ষম হয় মহাজোট। সেই থেকে নীতীশ ও প্রশান্তের সম্পর্কের সূচনা। এরপর ২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জেডিইউ-তে যোগ দিয়েছিলেন ভোটকৌশলী। জনতা দল ইউনাউটেডের জাতীয় সহ-সভাপতিও হন। যদিও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। প্রশান্তকে দল থেকে বহিষ্কারের পর এই প্রথম দু'জনের সাক্ষাৎ। রাজধানীতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে নৈশভোজ সারেন তাঁরা। দু'ঘন্টা পিকে সেখানে ছিলেন বলে খবর। নীতীশ সংবাদমাধ্যমকে জানান,'আমাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। এমন কোনও বড় ব্যাপার নয়।' প্রশান্তের কথায়,'এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল।'
সম্প্রতি রাহুল-প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে একাধিক দফায় বৈঠক করেছিলেন পিকে। কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে যে কথা চলছিল তা পরে স্পষ্টও করে দেন প্রশান্ত। শেষপর্যন্ত কংগ্রেসে আর যোগ দেওয়া হয়ে ওঠেনি। ২০২১ সালে বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করেছিলেন এই ভোটকৌশলী। আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তিও বাড়িয়েছে তৃণমূল। তবে পুরভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে প্রশান্তের সংস্থার সঙ্গে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের মতানৈক্য স্পষ্ট হয়েছে। এদিকে, গোয়ায় তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন প্রশান্ত। তবে এখনও তৃণমূল বা আইপ্যাক কারও তরফেই কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। ফলে নীতীশ-প্রশান্ত বৈঠক ঘিরে রাজনীতির অলিন্দে নানা গুঞ্জন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, বাংলায় ভোটের পরই ভোটকুশলীর কাজ ছেড়ে দেওয়া কথা বলেছিলেন প্রশান্ত। সক্রিয় রাজনীতি যে করতে চান তা তো রাহুল-প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে বৈঠকেই স্পষ্ট। আর তা নিয়ে লুকোছাপাও করেননি প্রশান্ত। অন্যদিকে, বিহারে নীতীশের জোটসঙ্গী বিজেপি আর শুধু ছোট শরিক হয়ে নেই। এই প্রেক্ষাপটে দু'জনেই পুরনো সম্পর্ক আরও একবার ঝালিয়ে নিলেন বলে মত অনেকের। রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, ২০২৪ সালের আগে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। আবার এটাও হতে পারে চাপের খেলা খেলছেন নীতীশ ও প্রশান্ত। নীতীশ বার্তা দিতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্বকে। আর প্রশান্ত কংগ্রেস ও তৃণমূলকে।
আরও পড়ুন- 'ওল্ড ইজ গোল্ড', নবীন-প্রবীণ মিশেলের বার্তা মমতার