Advertisement

মৈত্রী সেতুতে মিলল ভারত-বাংলাদেশ, 'ডবল ইঞ্জিন' সরকার মোদীর মুখে

ভারতে ও বাংলাদেশ সীমান্তে ফেনি নদীর ওপর তৈরি হয়েছে মৈত্রী সেতু। মঙ্গলবার দুপুরে ভারচুয়ালি যার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে মৈত্রী সেতু হল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম সেতু। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এদিন ত্রিপুরার সাবরুমে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এই সেতু হয়ে উঠবে দুই দেশের পর্যটন ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র, বললেন মোদী
শাহিদুল হাসান খোকন
  • দিল্লি,
  • 09 Mar 2021,
  • अपडेटेड 4:31 PM IST
  • এবার নদী পথে জুড়ে গেল ভারও ও বাংলাদেশ
  • মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন করলেন মোদী ও হাসিনা
  • এই সেতু হয়ে উঠবে দুই দেশের পর্যটন ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র, বললেন মোদী

বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। চলতি বছর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে। আর স্বাধীনতার এই অর্ধশতাব্দী উদযাপনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আগামী ২৬ মার্চ  ঢাকা যাচ্ছেন মোদী। তার আগেই দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোড়ালো হল। মঙ্গলবার ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 

অনন্য নজির হাসিনার, কমনওয়েলথে অনুপ্রেরণীয় ৩ নারী নেতৃত্বের মধ্যে উঠল নাম

ভারতে ও বাংলাদেশ সীমান্তে ফেনি নদীর ওপর তৈরি হয়েছে মৈত্রী সেতু। মঙ্গলবার দুপুরে ভারচুয়ালি যার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে মৈত্রী সেতু হল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম সেতু।  দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী এদিন ত্রিপুরার সাবরুমে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

 

মৈত্রী সেতু

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ফেনি নদী। সেতুটি বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য বাড়াতে আরও সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সেতুর মাধ্যমে সরাসরি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে ত্রিপুরা। ভাপতের ত্রিপুরার সাবরুম ও বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়কে যুক্ত করছে সেতুটি। ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এই সেতু নির্মাণ করেছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এই সেতু দিয়ে সহজেই ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ হবে। ত্রিপুরার সাব্রুম অঞ্চল থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার। ফেনী সেতুর দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ৯ কিলোমিটার। গত ১৩ জানুয়ারি সেতুর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়। এই সেতুর মোট পিলার সংখ্যা ১২ টি। এরমধ্যে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ ৮ টি ও ভারতের অংশে ৪টি। সেতু থেকে ২৪০ মিটার এপ্রোচ রোড নির্মাণ করে রামগড়-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কের সাথে এবং ভাতরের দিকে  প্রায় ১২০০ মিটার এপ্রোচ রাস্তা নবীনপাড়া-ঠাকুরপল্লী হয়ে সাব্রুম-আগরতলা জাতীয় সড়কে যুক্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের দুই লেনের এই সেতুর দুপাশে রয়েছে ফুটওয়ে।

Advertisement

মতুয়া মহাতীর্থ থেকে রবীন্দ্রনাথ- বাঘা যতীনের বাড়ি দর্শন! মোদীর ঢাকা সফরেও কি থাকছে বঙ্গ ভোটের আঁচ?

সেতু উদ্বোধনে মোদীর বক্তব্য
ফেনি নদীতে মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন করে ত্রিপুরাবাসীকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার যাতায়াতের যেমন সুবিধা হবে তেমনি দুই দেশের বাণিজ্যের মূল কেন্দ্রও হয়ে উঠবে মৈত্রী সেতু, এমন আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ত্রিপুরার উন্নয়নে জন্য ডবল ইঞ্জিন সরকারকেই কৃতীত্ব দিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‌‘দীর্ঘ ২০১৭ সালে আপনারা ত্রিপুরার উন্নয়নে দ্বিগুন মনোযোহী হন। আর এর ফলে যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা আজ আপনাদের সামনেই। যেখানে ঘুষ-দুর্নীতি ছাড়া কোনো কাজ হতো না, তা এখন সহজেই হচ্ছে। যেখানে কৃষকদের ফসল সরবরাহ করতে বিভিন্ন অসুবিধা হতো, সেখানে আজ কৃষকরা সরাসরি ফসল সরবরাহ করতে পারছে।’ মোদী আরও বলেন, ‘ত্রিপুরায় আজ যোগাযোগ তথা সড়কপথ, বিমানপথ এবং রেলপথের উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সুবিধার মাধ্যমে জনগণের জীবনকে আরও সহজ করে তুলছে। সেই সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক দিকেরও উন্নয়ন হচ্ছে।’ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার এই সেতু পর্যটন ও বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র হবে এমন আশা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সেতুর ফলে ত্রিপুরার তথা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন একদিকে যেমন সমৃদ্ধির পথে আছে, তেমনি দুই দেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের অর্থনৈতিক বন্ধনও সুদৃঢ় হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নির্মিত এই মৈত্রী সেতুর কারণে পণ্য পরিবহন এবং পর্যটন খাত আরও উন্নত হবে।ফলে, পণ্য পরিবহনের জন্য এখন আর আপনাদের শুধু সড়ক পথের ওপর ভরসা করে বসে থাকতে হবে না, বাংলাদেশের সড়ক, নদী ও সমুদ্র পথেও সুবিধা পাবে এই রাজ্য।' বাংলাতেও ভোট প্রচারে এসে বারবার রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার আনার কথা বলছে বিজেপি নেতৃত্ব। এই আবহে মোদীর মুখে ত্রিপুরার ডবল ইঞ্জিন সরকারের গুণগান যথেষ্ট অর্থবহ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরকালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এর সাথে বৈঠকে রামগড়- সাবরুম স্থলবন্দর চালুর যৌথ সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৬ জুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফেনি নদীর ওপর ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১’ ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন। 

হাসিনার বক্তব্য
ফেনী নদীর উপর নির্মিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ দুই দেশের মধ্যে সেতুবন্ধই রচনা করবে না, বরং ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ত্রিপুরাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি মনে করি এই সেতু আমাদের দুই দেশের মাঝে শুধু সেতুবন্ধনই রচনা করবে না বরং ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে। শুধু চট্টগ্রাম পোর্ট নয়, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও ত্রিপুরাবাসী ব্যবহার করতে পারবে।” ভিডিও বার্তায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে সঙ্গে নিয়ে আজ মৈত্রী সেতু উদ্বোধন করা আমার জন্য অপার আনন্দের। এই ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটছে যখন আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপন করছি।”

মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরর অবদান স্মরণ
একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিপুরার সহযোগিতার কথা স্মরণ করে বাংলাদেশের  প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা ভুলি নাই ১৯৭১ সালে কীভাবে আমার জনগণকে আপনারা আশ্রয় দিয়েছিলেন, সমর্থন দিয়েছিলেন, সহযোগিতা করেছিলেন এবং আমরা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিলাম। কাজেই আজকের দিনে আমি সবাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ত্রিপুরর মুখ্যমন্ত্রী আপনাকেও আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।”

Advertisement

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement