
রাশিয়ার প্রসেডিন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ৩০ ঘণ্টার ভারত সফর। ইতিমধ্যেই এই হাইপ্রোফাইল সফরকে ঘিরে নয়াদিল্লি প্রস্তুত। ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ক বহু প্রাচীন। সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন ছিল, তারও আগে থেকে। রাশিয়া বরাবরই ভারতের বন্ধু দেশ হিসেবেই ভূমিকা পালন করেছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে হাজির হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর একই গাড়িতে দুজনে প্রধানমন্ত্রী আবাসে রওনা দেন।
ব্রিকস মুদ্রার পরিকল্পনা নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন,''তাড়াহুড়ো করার কোনও প্রয়োজন নেই। রাশিয়া এখনই ব্রিকস মুদ্রা তৈরির পরিকল্পনা করছে না। আসলে তাড়াহুড়ো করলে ভুল হতে পারে। ইউরোপের দিকে তাকান। ওদের আমেরিকান ব্যবস্থা আছে। অনেক দেশ এর জন্য প্রস্তুত নয়। আমরা সহজে নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করতে পারি না। আমরা যা-ই করতে যাচ্ছি, আমাদের তা সাবধানে এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে করতে হবে। আমাদের নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহার করা উচিত। আমি বিশ্বাস করি তা দুর্দান্ত হতে চলেছে। এটি গ্লোবাল সাউথের দেশগুলিকে উন্নত করবে। আমরাও উপকৃত হব। ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেমগুলি আজকাল দ্রুত বিকশিত হচ্ছে।'
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন,'আমি G8-এ যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। ২০১২ সালের পর থেকে যাই না। G7 দেশগুলি কেন নিজেদেরকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে সেটা আমি বুঝতে পারছি না। এখন রাশিয়া BRICS, SCO এবং G20-এর মতো মঞ্চে সক্রিয়। রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্ক আর স্বাভাবিক নয়। বিশ্ব অর্থনীতি দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে'।
এই সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিরসনে আমেরিকার ভূমিকা সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়েছিল। ক্রেমলিনে জ্যারেড কুশনার এবং স্টিভ উইটকফের সঙ্গে পুতিনের বৈঠক সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, 'এই কথোপকথন থেকে এখনই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া ঠিক নয়। আমি মনে করি না, আপনি সেখানে থাকলেও সেই আলোচনা থেকে কিছু পেতে পারতেন। বৈঠকটি পাঁচ ঘন্টা ধরে চলেছি। এত দীর্ঘ বৈঠকে আমি বিরক্ত হয়েছিলাম, তবে এটা দরকারিও ছিল। ভেবে দেখুন, পুরো বৈঠকে আমি উইটকফ এবং কুশনারের সঙ্গে একা ছিলাম। কিন্তু সত্যি বলতে, এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল। তবে আলোচনাটি কেবলমাত্র প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলাস্কা বৈঠকের আগে চুক্তি এবং সম্পর্কিত বিষয়গুলির উপর ছিল। হ্যাঁ, এবার আমরা প্রতিটি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি, যা সামগ্রিকভাবে খুবই ফলপ্রসূ ছিল।"
নিজের বাসভবনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে স্বাগত জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শেয়ার করলেন ছবি।
রাশিয়ার সস্তায় অপরিশোধিত তেল কেনার ব্যাপারে আমেরিকার আপত্তি সংক্রান্ত প্রশ্নে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন জানান,'আমি কখনও বন্ধুদের চরিত্র নিয়ে কথা বলি না। যাঁরা আমার সঙ্গে কাজ করেছেন, বিশেষ করে রাষ্ট্রপ্রধানদের ব্যাপারেও মন্তব্য করি না। আমার বিশ্বাস, এই মূল্যায়ন ওই দেশগুলির নাগরিকদের করা উচিত, যাঁরা ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছেন। রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের জ্বালানি সম্পদ কেনার বিষয়ে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও নিজেদের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক সরঞ্জাম কেনে। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়ামও রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার মাধ্যমে নিজস্ব জ্বালানির চাহিদা পূরণ করে। তাহলে তারা ভারতের ক্রয়ের ব্যাপারে কেন আপত্তি জানাচ্ছে? এই বিষয়টির গভীরভাবে ভাবা দরকার। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করতেও রাজি'।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্ট করলেন, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির সম্ভাবনা। পুতিন বলেন, ভারত ও রাশিয়া উচ্চ প্রযুক্তি, মহাকাশ প্রযুক্তি, পারমাণবিক প্রযুক্তি থেকে শুরু করে জাহাজ নির্মাণ, বিমান নির্মাণ এবং ভবিষ্যতের জন্য অন্যান্য ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কাজ করছে। ভারতের অগ্রগতির প্রশংসাও করেন পুতিন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতে এসেছেন। পালম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। এই সফর ঐতিহাসিক হতে চলেছে। দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সফরের আগে আজ তক-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে পুতিনকে ভারত-রাশিয়ার সম্ভাব্য চুক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "ভারত মহান দেশ। এর অর্থনীতি ৭.৭ শতাংশ হারে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে এটি বড় লক্ষ্য অর্জন। যা নিয়ে ভারতের গর্ব করা উচিত। সবসময় সমালোচকরা থাকবেন যারা বলবেন যে পরিস্থিতি আরও ভালো হতে পারত, কিন্তু ফল নিজেই কথা বলে।"
পুতিন বিস্তারিত না জানিয়ে আরও বলেন যে দুটি দেশ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের জন্য প্রস্তুত। তিনি বলেন,'ভারত এবং রাশিয়া মহাকাশ গবেষণা, পারমাণবিক শক্তি, জাহাজ নির্মাণ এবং বিমান উৎপাদন - ভবিষ্যত গঠনকারী ক্ষেত্রগুলিতে একসঙ্গে কাজ করছে। আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়েও আলোচনা করতে পারি, যা আমাদের বিশ্বকে বদলে দেবে। আমরা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিকেও অগ্রাধিকার দেব'।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ভারতে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এক্স পোস্টে প্রধানমন্ত্রী মোদী লিখেছেন,'আমার বন্ধু, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ভারতে অভ্যর্থনা জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। আজ সন্ধ্যায় এবং আগামিকাল আমাদের আলোচনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বন্ধুত্ব সবসময় প্রত্যাশা পূরণ করেছে। উপকৃত হয়েছে দুই দেশের জনগণ'।
একই গাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং পুতিন নৈশভোজ সারবেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন জানাল, বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী মোদীর থাকার ব্যাপারে তারা জানত না। রাশিয়াকে জানানো হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আয়োজিত নৈশভোজে কেবল পুতিন এবং মোদী যোগ দেবেন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মোদীর রসায়ন আরও একবার চোখে পড়ল। পুতিন বিমান থেকে নামতেই তাঁকে আলিঙ্গন করলেন মোদী। তারপর একই গাড়িতে রওনা দেন দু'জনে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী একই গাড়িতে দিল্লির পালাম বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ভারতে পৌঁছেছেন। বিমান থেকে নামতেই জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানালেন মোদী। একই গাড়িতে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে গেলেন দুই রাষ্টপ্রধান।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে স্বাগত জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। করমর্দন করলেন দুই নেতা।
বিমান থেকে নামলেন ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁকে স্বাগত জানাতে এগিয়ে গেলেন মোদী।
দিল্লি বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্বাগত জানাতে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিমান দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত রয়েছেন।
আজ রাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত নৈশভোজ (প্রাইভেট ডিনার) হবে প্রেসিডেন্ট পুতিনের। এরপর আগামিকাল অর্থাত্ শুক্রবার সকাল ১১টায় রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হবে।
পুতিনের সফরের সূচি (৫ ডিসেম্বর)
সকাল ১১টা — রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক স্বাগত
সকাল ১১.৩০ — রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা এবং মাল্যদান
সকাল ১১.৫০ — হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক
দুপুর ১.৫০ — হায়দরাবাদ হাউসে যৌথ প্রেস বিবৃতি
সন্ধ্যা ৭টা — রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবনে বৈঠক
রাত ৯টা — রাশিয়ার উদ্দেশে ভারতের থেকে রওনা
সূত্র বলছে, পালাম বিমানবন্দরে রাশিয়ান প্রেসিডেন্টকে অভ্যর্থনা জানানোর পর, তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একই গাড়িতে করে রওনা হতে পারেন। উভয় নেতা একই গাড়িতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকারি বাসভবন, লোক কল্যাণ মার্গে যেতে পারেন, যেখানে পুতিন প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে একান্তে নৈশভোজ করবেন।