ভারতে সমলিঙ্গ বিবাহ (Same Sex Marriage in India) বৈধ কিনা, তা নিয়ে মঙ্গলবার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। ঠিক আগের দিন, আজ, সোমবার শীর্ষ আদালতে আরও একটি হলফনামা দাখিল করল কেন্দ্র। সেই হলফনামায় কেন্দ্রের দাবি, এই ইস্যুগুলি জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের বোধ-বুদ্ধির উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। তাই সমলিঙ্গ বিবাহের স্বীকৃতি চাওয়া পিটিশনগুলি খারিজ করুক সুপ্রিম কোর্ট।
দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করবেন ১৮ এপ্রিল। সমলিঙ্গ বিবাহকে আইনি বৈধতা দেওয়া হোক, এই মর্মে ১৫টি পিটিশন দাখিল করা হয়েছে শীর্ষ আদালতে।
আজ নতুন করে একটি আবদেনে কেন্দ্রের বক্তব্য, সমলিঙ্গ বিবাহ একটি শহুরে বুর্জোয়া মনোভাব। সেই মনোভাবেরই সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রের আবেদনে লেখা রয়েছে, 'সমলিঙ্গের বিবাহের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে একটি সম্পূর্ণ আইনের পুনর্লিখনের ব্যবস্থা করা। আদালতকে এ ধরনের সর্বজনীন আদেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এর জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ হল উপযুক্ত আইনসভা।'
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট দুই সমকামী যুগলের দায়ের করা দু’টি মামলা সম্পর্কে অবহিত হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠান করে বিয়ে করেন সুপ্রিয় চক্রবর্তী এবং অভয় ডাং। বস্তুত, তাঁরাই দেশের প্রথম সমকামী যুবক, যাঁরা বিয়ে করেছেন। এখন বিশেষ বিবাহ আইনের স্বীকৃতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা।
২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, ভারতীয় সংবিধান ৩৭৭ ধারায় সমকামিতাকে অপরাধের তকমা থেকে মুক্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু ৩৭৭ ধারায় সাংবিধানিক ভাবে সমকামী মানুষদের অস্তিত্বকে স্বীকার করে নিলেও দৈনন্দিন অপমান থেকে তাঁদের মুক্তি দেয়নি। নানা জায়গায় বিভিন্ন সময়ে সমকামীদের নির্যাতন এবং আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৮ সালে সমকামিতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই সমলিঙ্গের বিবাহে আইনি স্বীকৃতির দাবি জোরালো হয়। যদিও কেন্দ্রের তরফে এ নিয়ে বারবার আপত্তির কথা জানানো হয়েছে। কেন্দ্রের বক্তব্য, এই ধরনের বিয়ে ভারতীয় পারিবারিক সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এতে সমাজ ব্যবস্থায় বিরূপ প্রভাব পড়বে।