মানহানিকে ফৌজদারি অপরাধের তকমা থেকে মুক্ত করার সময় এসেছে। সোমবার এক মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। আইন সংক্রান্ত পোর্টাল বার অ্যান্ড বেঞ্চ সূত্রে এই খবর। এর আগে ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টে ফৌজদারি মানহানি আইনের সাংবিধানিক বৈধতার পক্ষেই রায় দিয়েছিল। সোমবারের পর্যবেক্ষণে তার ঠিক উল্টোটাই বলা হয়েছে।
২০১৬ সালে শীর্ষ আদালত এক ঐতিহাসিক রায়ে বলেছিল, 'মানহানি অপরাধ হিসেবেই গণ্য হবে। কারণ সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘সম্মান রক্ষার অধিকারও’ জীবনের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। তখন আদালত ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারা বহাল রেখেছিল। এখন নতুন আইনে ভারতীয় দণ্ডবিধির জায়গায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বলবৎ হয়েছে। সেখানে মানহানিকে ৩৫৬ ধারায় অপরাধ হিসেবে রাখা হয়েছে।'
এদিনের শুনানির প্রেক্ষাপটও তাৎপর্যপূর্ণ। ২০১৬ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (JNU) এক অধ্যাপকের দায়ের করা ফৌজদারি মানহানির মামলায় দিল্লির এক ম্যাজিস্ট্রেটের জারি করা সমন চ্যালেঞ্জ করা হয়। মামলাটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যার এর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, একটি প্রতিবেদনে ২০০ পাতার এক বিতর্কিত ডসিয়ারের(তথ্যপঞ্জি) সঙ্গে ওই অধ্যাপকের নাম জড়ানো হয়েছিল। উক্ত ডসিয়ারে JNU কে ‘সন্ত্রাসবাদ আর অসংগঠিত যৌনচক্রের আখড়া’ বলা হয়েছিল। এহেন লেখার সঙ্গে তাঁর নাম জড়ানোয় অধ্যাপক সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।
সোমবার তার শুনানিতে বিচারপতি এম এম সুন্দ্রেশ মন্তব্য করেন, 'আমার মনে হয়, এগুলোকে অপরাধের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সময় এসেছে।' আদালতের পর্যবেক্ষণকে সমর্থন করেন সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বলও।
এর মানে কিন্তু এটা না যে, মানহানি আর অপরাধ নয়
ভারতে এখনও মানহানি অপরাধ হিসেবেই গণ্য হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩৫৬ ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তকে শাস্তি পেতে হবে। তবে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক মন্তব্যে নতুন কিছুর পূর্বাভাস দেখছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।