উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) জোশিমঠের (Joshimath) পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। ভূমিধস বাড়তে থাকায় ঘুম উড়েছে সেখানকার বাসিন্দাদার। ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। মাটি ফেটে যেতে শুরু করেছে। বহু রাস্তা তলিয়ে গেছে। আজ, শুক্রবার ভগবতী মন্দির ধসে গেছে। সিংধর ওয়ার্ডে এটি প্রথম ঘটনা। কারণ, এতদিন শুধু দেওয়ালে ফাটল হয়েছে। কিন্তু এবার গোটা মন্দিরটিই তলিয়ে গেল। ফলে রীতিমতো আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে গোটা এলাকায়।
এখন পর্যন্ত ৬০৩টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। অনেক বাড়িঘর ধসে যাওয়ার পথে। এদিন এলাকা থেকে আরও ৬টি পরিবারকে সরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন। খন পর্যন্ত ৪৪টি পরিবারকে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাদের বাড়িঘর সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে। দেয়ালে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে এবং মেঝে পর্যন্ত তলিয়ে গেছে।
পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামি। তা অবিলম্বে বিপদ অঞ্চল খালি করতে হবে এবং দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সক্রিয় করতে হবে। এরপরই ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন-অঞ্জলি মদ্যপ ছিলেন-নিধির সঙ্গে ঝগড়া? ৬ প্রশ্নের উত্তর এখনও রহস্যে
পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামি। তাঁর নির্দেশ, অবিলম্বে নিরাপদ স্থানে একটি বড় অস্থায়ী পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। এবং দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় দেখা যাচ্ছে মাড়োয়ারি এলাকায়। এখানে অনেক জায়গায় মাটির ভেতর থেকে ক্রমাগত নোংরা জল উঠছে। জেপি কোম্পানির কলোনিতে এমন অনেক বাড়ি রয়েছে, যেখানে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদেরও নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ক্রমাগত মাটির অবনমন (Land Sinking) বা বসে যাওয়ার কারণেই শতাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছে।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছর ধরেই একের পর এক ভূমিধসে বিপর্যস্ত দেবভূমি উত্তরাখণ্ড। পাহাড় কেটে নানা উন্নয়নমূলক কাজ করার কারণেই মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে এবং বারবার ধস, হড়পা বান নামছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। পরিবেশবিদরাও এই বিষয় নিয়ে বহুবার সতর্ক করেছেন। এবার বিপদ কড়া নাড়ল স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতেই।
জানা গিয়েছে, মারওয়াড়ি অঞ্চলের কমপক্ষে নয়টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। রাস্তাঘাটেও বড় বড় ফাটল দেখা গিয়েছে। জোশীমঠের জেপি কলোনি ও মারওয়াড়ি অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে। রাস্তাজুড়ে লম্বা ফাটল ধরায় একদিকে যেমন চলাচলে সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তেমনই যেকোনও মুহূর্তে গোটা এলাকাটি বসে যাওয়ার আতঙ্কও তৈরি হয়েছে। রাত যত বাড়ছে, আতঙ্কও বাড়ছে।
আরও পড়ুন-শ্রীলঙ্কার মতো বেহাল দশা পাকিস্তানের, জানুন ৫ পয়েন্টে, PHOTOS