Advertisement

Mahua Moitra Cash for Query case Timeline: মহুয়ার সাংসদ পদ কেন খোয়া গেল-ঠিক কী অভিযোগ? যা যা ঘটল

মহুয়াকে বলতে সুযোগ দেওয়া হয়নি। পরে মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করেন স্পিকার। এই রিপোর্টের প্রতিবাদে শুক্রবার তপ্ত হয়েছে লোকসভার অধিবেশন। আর মাত্র কয়েক মাস পরই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে মহুয়ার বিরুদ্ধে এ হেন 'শাস্তি' ঘিরে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনীতির অঙিনায়।

মহুয়া মৈত্র।
সৌরদীপ সামন্ত
  • কলকাতা/দিল্লি,
  • 08 Dec 2023,
  • अपडेटेड 4:15 PM IST
  • সংসদ থেকে বহিষ্কৃত মহুয়া মৈত্র।
  • উত্তপ্ত লোকসভার অধিবেশন।
  • টাকার বদলে প্রশ্নকাণ্ডে অভিযুক্ত মহুয়া।

Why TMC MP Mahua Moitra Expelled from Lok Sabha: টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার মামলায় তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হল। বহিষ্কারের সুপারিশ করে শুক্রবার লোকসভায় রিপোর্ট পেশ করে এথিক্স কমিটি। রিপোর্ট পড়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় চায় তৃণমূল। কিন্তু এই রিপোর্ট নিয়ে মাত্র আধ ঘণ্টার জন্য আলোচনায় রাজি হন স্পিকার ওম বিড়লা। মহুয়াকে বলতে সুযোগ দেওয়া হয়নি। পরে কৃষ্ণনগরের সাংসদকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করার সুপারিশেই সিলমোহর দেন স্পিকার। লোকসভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হয় বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত। এই রিপোর্টের প্রতিবাদে শুক্রবার তপ্ত হয়েছে লোকসভার অধিবেশন। আর মাত্র কয়েক মাস পরই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে মহুয়ার বিরুদ্ধে এ হেন 'শাস্তি' ঘিরে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনীতির অঙিনায়। বছর শেষে মহুয়া-কাণ্ড নিয়ে সরগরম হতে চলেছে রাজনীতির ময়দান। মহুয়ার বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ? কী ভাবে এগিয়েছে ঘটনাপ্রবাহ? তা-ই তুলে ধরা হল এখানে...


বিতর্কের শুরু অক্টোবরে

মহুয়াকে নিয়ে বিতর্কের শুরু হয় গত অক্টোবর মাসে। কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে 'টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন' করার অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। প্রথমে এই সংক্রান্ত অভিযোগ লিখিত আকারে গোড্ডার বিজেপি সাংসদ দুবেকে জানান মহুয়ার প্রাক্তন বন্ধু তথা আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। অভিযোগের সাপেক্ষে কিছু নথিও দুবেকে দেন দেহাদ্রাই। তার পরেই সেই নথি-সহযোগে মহুয়ার বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অভিযোগ জানান দুবে। এর পরই মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এথিক্স কমিটিকে তদন্তের নির্দেশ দেন স্পিকার।

ঠিক কী অভিযোগ?

নিশিকান্ত এবং দেহাদ্রাইয়ের অভিযোগ, দুবাইয়ের শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে নগদ ২ কোটি টাকা এবং দামী উপহারের বিনিময়ে ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জড়িয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন মহুয়া। এই নিয়ে পৃথক ভাবে মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ করেছেন দেহাদ্রাই। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরই তোলপাড় পড়ে যায়। পাল্টা সরব হন মহুয়া। তিনি অভিযোগ করেন, আদানির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার কারণেই তাঁকে এই ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। এই নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই মহুয়ার বিরুদ্ধে আরও এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন দুবে। তিনি দাবি করেন যে, মহুয়ার সংসদের লগ-ইন, পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে দুবাই থেকে প্রশ্ন লিখেছেন হিরানন্দানি। যা দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক বলে সরব হন তিনি।

Advertisement


হিরানন্দানির হলফনামা

মহুয়াকে ঘিরে এই নিয়ে হইচইয়ের মধ্যেই হলফনামা প্রকাশ করেন হিরানন্দানি। তাতে তিনি সংসদের লগ-ইন, পাসওয়ার্ড ব্যবহারের কথা স্বীকার করে নেন। পাশাপাশি, তাঁর হয়েই যে মহুয়া সংসদে আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেই অভিযোগকেও মান্যতা দেন হিরানন্দানি। পরে এক সাক্ষাৎকারে মহুয়া দাবি করেন যে, 'বন্ধু' হিসাবে হিরানন্দানি তাঁকে দুবাই বিমানবন্দর থেকে লিপস্টিক এবং আইশ্যাডো উপহার দিয়েছেন। তবে সেগুলি নি:শুল্ক (ডিউটি ফ্রি)। তবে নগদ ২ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তৎপর এথিক্স কমিটি

মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুবে এবং দেহাদ্রাইকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে এথিক্স কমিটি। কেন অভিযুক্তকে আগে না ডেকে অভিযোগকারীদের ডাকা হল, সেই নিয়ে সরব হয় বিরোধীরা। তবে ভোটাভুটিতে বিরোধীদের সেই প্রতিবাদ ধোপে টেকেনি। দুবে এবং দেহাদ্রাইয়ের বক্তব্য শোনার পর মহুয়াকে গত ৩১ অক্টোবর তলব করে এথিক্স কমিটি। কিন্তু সেদিন হাজিরা দেননি তিনি। ৫ নভেম্বরের পরে হাজিরা দেওয়ার কথা জানান মহুয়া। পরে ২ নভেম্বর সকালে মহুয়াকে আবার তলব করে সংসদীয় এথিক্স কমিটি। সেদিন লাল শাড়ি এবং তিনটি ব্যাগ হাতে নিয়ে কমিটিতে হাজিরা দেন তৃণমূলের 'দাপুটে' সাংসদ। তবে বৈঠকের দ্বিতীয়ার্ধ্বে রেগে বেরিয়ে যান মহুয়া। তাঁর অভিযোগ, এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সাংসদ বিনোদ সোনকর তাঁকে অনৈতিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন। এই নিয়ে স্পিকারকে চিঠি দিয়ে মহুয়া দাবি করেন যে, তাঁর 'মৌখিক বস্ত্রহরণ' করা হয়েছে।

সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ

মহুয়াকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রথমে গত ৭ নভেম্বর বৈঠক ডাকে এথিক্স কমিটি। কিন্তু সেদিন বৈঠক পিছিয়ে ৯ তারিখ করা হয়। ওই দিন বৈঠকে ৬:৪ ভোটে মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করে কমিটি। পাশাপাশি, মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই-ইডিকে দিয়ে তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে। মহুয়ার হয়ে বিরোধী শিবিরের ৪ সাংসদ ভোট দেন। তাঁরা হলেন, বিএসপি-র দানিশ আলি, সিপিআইয়ের নটরাজন, কংগ্রেসের বৈথিলিঙ্গম এবং জেডিইউয়ের গিরিধারী যাদব। তেলঙ্গানার কংগ্রেস সাংসদ উত্তম রেড্ডি সে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের মনোনয়নের জন্য ভোট দিতে পারেননি। 

মহুয়াকে বহিষ্কার

৮ ডিসেম্বর, শুক্রবার লোকসভায় রিপোর্ট পেশ করে এথিক্স কমিটি। রিপোর্টে মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। রিপোর্টে মহুয়ার আচরণ 'আপত্তিকর', 'অনৈতিক', 'জঘন্য' এবং 'অপরাধ মূলক' বলে বর্ণনা করা হয়েছে। মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্তের সুপারিশও করেছে কমিটি। পরে লোকসভা থেকে মহুয়াকে বহিষ্কার করার সুপারিশে সিলমোহর দেন স্পিকার।


তৃণমূলের অবস্থান

এই বিতর্কে প্রথম দিকে মহুয়ার সঙ্গে দূরত্ব রচনা করেছিল তৃণমূল। কুণাল ঘোষ জানিয়েছিলেন, এটা মহুয়ার নিজের লড়াই। পরে তৃণমূল নেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন জানান, এথিক্স কমিটির রিপোর্টের পরই দল যা বলার বলবে। এর মধ্যেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন যে, এই লড়াই লড়ার জন্য মহুয়া একাই যথেষ্ট। এর অব্যবহিত পরই মহুয়াকে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

কী বলেছেন মমতা?
মহুয়াকাণ্ডে প্রথম থেকে নীরবই ছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'ওদের (বিজেপি) প্ল্যান এখন মহুয়াকে তাড়ানো। তিন মাস আর বাকি আছে (সংসদের মেয়াদ শেষ হতে)। মহুয়া যেগুলি ভিতরে বলত, এ বার সেগুলিই বাইরে বলবে। মূর্খ না হলে ভোটের তিন মাস আগে কেউ এই কাজ করে।'

Advertisement

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement