Advertisement

Winter 2025: অক্টোবরেই শীতের আমেজ শুরু? এটা তো 'ট্রেলার', আবহাওয়াবিদরা যা বলছেন...

হাড়কাঁপানো শীতের ইঙ্গিত এখনই মিলছে। চলতি বছরে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি শীত পড়তে চলেছে দেশজুড়ে। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে কেমন থাকবে আবহাওয়া? কলকাতাতেই বা কেমন ঠান্ডা পড়বে?

এ বছর জাঁকিয়ে শীত? এ বছর জাঁকিয়ে শীত?
Aajtak Bangla
  • নয়াদিল্লি,
  • 09 Oct 2025,
  • अपडेटेड 10:02 AM IST
  • অক্টোবরের শুরুতেই শীতের আমেজ
  • হাড়কাঁপানো শীতের ইঙ্গিত
  • স্বাভাবিকের থেকে বেশি ঠান্ডা পড়বে এ বছর

সবে মাত্র অক্টোবর। এর মধ্যেই বরফে ঢাকা পড়েছে দেশের একাধিক পার্বত্য অঞ্চল। এমনকী দিল্লির মতো সমতলেও বৃষ্টিস্নাত সকাল রীতিমতো শীতের আমেজ। শরৎ এবং শীতের মাঝামাঝি সময়েই ভরপুর ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে দেশের একাধিক অংশে। এটা কি তবে আসন্ন হাড়কাপাঁনো শীতের মরশুমের একটা ট্রেলার? সর্বকালের রেকর্ড ব্রেক করবে এ বছরের শীতকাল? শুরু হয়ে গিয়েছে হিসেবনিকেশ। 

রেকর্ড ভাঙা ঠান্ডা পড়বে এবার?
মৌসম ভবন এবং আমেরিকার ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টার যৌথ ভাবেই জানিয়েছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর উত্তর ভারত অতিরিক্ত ঠান্ডার সাক্ষী থাকতে চলেছে। যদিও অনেক আবহাওয়াবিদের মতে এখনই সম্পূর্ণ পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়।

জাঁকিয়ে শীতের আগাম ইঙ্গিত
জম্মু-কাশ্মীর, হিমালচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের পার্বত্য এলাকায় চলতি মাসের শুরুতেই বরফের চাদরে ঢাকা পড়েছে পাহাড়। একাধিক পাহাড়ের চূড়া তুষারাবৃত। চামোলি থেকে লাহুল-স্পীতি কিংবা কাশ্মীর, চতুর্দিকে শুধু বরফ আর বরফ। তুষারপাতের অভিজ্ঞতা হচ্ছে পর্যটকদের। বরফ পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। বিভিন্ন এলাকায় শূন্যের নীচে নেমে গিয়েছে তাপমাত্রা। সব মিলিয়ে জাঁকিয়ে শীতের একটা ট্রেলার দেখা যাচ্ছে অক্টোবরের শুরুতেই। 

মধ্য এবং নিম্ন হিমালয়তেও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তাপমাত্রা নিম্নমুখী। হিমাচল প্রদেশের একাধিক জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার তুষারপাতে নিখোঁজ হয়েছেন দুই সেনা জওয়ান। 

গাঙ্গেয় সমতলেও শীত শীত ভাব। গত সোমবার থেকে উত্তর ভারতের প্রায় সর্বত্রই তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে। চলছে ভারী বৃষ্টিও। দিল্লি-NCR-এ আচমকা নামা ভারী বৃষ্টিতে ব্যাহত হয়েছে উড়ান পরিষেবা। কমপক্ষে ১৫টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে গত মঙ্গলবার থেকে। বৃষ্টির সঙ্গেই চলছে বিদ্যুতের ঝলকানি, বজ্রপাত, এবং ঝোড়ো হাওয়া। একইরকম আবহাওয়া হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব এবং উত্তর রাজস্থানেও। 

IT অফিসার সুমীত পান্ডা এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, 'অক্টোবরের শুরুতে এমন আবহাওয়া দেখে মনে হচ্ছে দীর্ঘ এবং স্থায়ী ঠান্ডা পড়তে চলেছে এবার।'

কলকাতার আবহাওয়া
এ শহরে শীত সেভাবে না পড়ায় সাধারণত আক্ষেপ করেন বাসিন্দারা। অনেকেই শীত এনজয় করতে চলে যান পাহাড়ে। এবার কি ঝুলিতে অন্য কিছু অপেক্ষা করছে? নেটপাড়ায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে চর্চা। কলকাতার এক প্রাক্তন সাংবাদিক তথা বেসরকারি সংস্থার কর্মী দেবলীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'মনে হচ্ছে কলকাতায় এবার আগাম শীত পড়তে চলেছে।'

Advertisement

২০২৫-এ জাঁকিয়ে শীত?
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, ৭১% সম্ভাবনা রয়েছে স্বাভাবিকের থেকে বেশি ঠান্ডা পড়বে ২০২৫-এ। সৌজন্যে লা নিনা। IMD বিজ্ঞানী নরেশ কুমার এএনআই-কে বলেন, 'এই আবহাওয়া সাময়িক। এখানে বৃষ্টি এবং তুষারপাত একসঙ্গে চলছে। তাপমাত্রাও নিম্নমুখী। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে তা আরও কমবে।'

শীঘ্রই আকাশ পরিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা। সেক্ষেত্রে আবার ফিরবে গরম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবহাওয়া কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে। এর জেরে ভূমধ্যসাগর থেকে আর্দ্রতা ঢুকছে এবং এগোচ্ছে উত্তর পশ্চিম ভারতের দিকে। হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরের আবহাওয়া সে কারণেই আচমকা বদলেছে। 

গত সপ্তাহে বৃষ্টিপাত ও বর্ষণের কারণ ছিল বিলম্বিত মৌসুমি বায়ুর প্রস্থান এবং একাধিক নিম্নচাপ। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে দেওয়া ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র এমনটাই জানিয়েছেন। অন্যদিকে, আবহাওয়াবিদ ও প্রাক্তন IMD শ্রীনগরের ডিরেক্টর সোনম লোটাস জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীরে এ বছর শীত আগেভাগেই আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, শীত কতটা তীব্র হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। 

হিমালয় সংলগ্ন রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে, তাপমাত্রার পতন ও বৃষ্টিপাত দীর্ঘ শীতকাল ডেকে আনতে পারে। স্কাইমেট ওয়াদারের আধিকারিক মহেশ পালাওয়াত ইন্ডিয়া টুডে ডিজিটালকে বলেন, 'গাঙ্গেয় সমতল অঞ্চলের জন্য এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করা কিছুটা আগাম হয়ে যাবে। এ বছর শীত স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা আগেই আসতে পারে, তবে তা খুব তীব্র হবে বলে মনে হচ্ছে না। লা নিনা এখনও পুরোপুরি গঠিত হয়নি। সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত হয়তো স্বল্পস্থায়ী এক লা নিনা প্রভাবের ফল। খুব শীঘ্রই আবহাওয়া আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।'

সমতলেও প্রবল ঠান্ডা?
IMD জানিয়েছে, এ বছর ভারতে স্বাভাবিকের তুলনায় শীত পড়ার সম্ভাবনা প্রায় ৭১%। তবে শুধু লা নিনা নয়, আরও কিছু কারণ রয়েছে। যেমন, আর্কটিক অঞ্চলের ঠান্ডা বাতাসের প্রবাহ, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার পরিবর্তন। মার্কিন সরকারের ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টার সেপ্টেম্বর মাসে জানিয়েছিল, ২০২৫ সালের অক্টোবর–ডিসেম্বর সময়কালে লা নিনা হওয়ার সম্ভাবনা ৭১%। এরপর ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে এই সম্ভাবনা কিছুটা কমে ৫৪%-এ নেমে আসবে।

অতএব, সাম্প্রতিক বৃষ্টি ও ঠান্ডা কেবল অল্প সময়ের জন্যই ছিল। বৃহস্পতিবারের পর থেকে তাপমাত্রা আবার বৃদ্ধি পাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। গাঙ্গেয় সমভূমিতে শীত আসবে তার স্বাভাবিক সময়েই, তবে হিমালয় অঞ্চল, বিশেষ করে জম্মু ও কাশ্মীরে শীত ইতিমধ্যেই নিজের উপস্থিতি বোঝাতে শুরু করেছে। যদিও প্রাথমিক পূর্বাভাস বলছে, প্রায় ৭০% সম্ভাবনা রয়েছে, এ বছর শীত কিছুটা বেশি তীব্র হতে পারে। তবে ডিসেম্বর নাগাদ সেই সম্ভাবনা কমে আসতে পারে।

অতএব, এই আগাম শীতের ছোঁয়া কেবল ট্রেলার, আসল শীতের আগমন এখনও বাকি। যা হয়তো আরও দাপটের সঙ্গেই আসবে। 

 

Read more!
Advertisement
Advertisement