সনাতন ধর্মের অনেকেই পূর্ব জন্মে বিশ্বাস করেন। বেদ ও পুরাণে এর উল্লেখ আছে। অনেকেরই পূর্ব জন্ম নিয়ে নানা রকম কৌতূহল থাকে। পণ্ডিত শৈলেন্দ্র পাণ্ডে পূর্ব জন্মের নানা তথ্য দিলেন।
পণ্ডিত শৈলেন্দ্র পাণ্ডের মতে, সাধারণত, একজন ব্যক্তি পরের জন্মে তাঁর পরিবারেরই জন্মগ্রহণ করে এবং তাঁর প্রধান অভ্যাসগুলিও একই থাকে। এটি ঘটে কারণ যখন কোনও ব্যক্তি মারা যায়, তখন নিজের পরিবারের চিন্তা তাঁর মনেই থাকে।
যদি তাঁর শেষ জীবনে পরিবারের উদ্বেগে কাটে, তবে সেই ব্যক্তি নিজের পরিবারের কাছাকাছি থাকেন এবং সেই পরিবারেই আসে। পরের জন্মে তিনি কারও ছেলে, মেয়ে বা নাতি হয়ে ফিরে আসেন।
পুনরায় জন্মের পরেও, তাঁর পুরনো অভ্যাসগুলি একই থাকে। যখন কোনও ব্যক্তি মনে অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মারা যান, তখন সেই ইচ্ছাটি পূরণ করতে তাঁর পুনর্জন্ম হয়।
কোনও বিশেষ ধরণের গুণমান, আচরণ, রোগ বা চিহ্ন যা আপনার মধ্যে বিনা প্রচেষ্টায় আসে, সেগুলি পূর্ববর্তী জন্মের জন্যেই। উদাহরণস্বরূপ, অনেক শিশু ছোটবেলা থেকেই খুব ভাল গান গায়। কারণ আগের জন্মে সে ভাল গান গাইতো এবং এই জন্মে তাঁর মধ্যে সেই গুণ রয়েছে।
কিছু শিশু, শৈশব থেকেই গীতার শ্লোক জানে, কারণ তারা আগের জীবনে এটি পড়ত এবং সেই অভ্যাসটি এই জন্মেও রয়েছে। আগের জন্ম থেকে কেবল পুণ্যই নয়, নানা বিশেষ গুণও আসে। যেমন কোনও একটি নির্দিষ্ট ঈশ্বরের রূপের প্রতি আকর্ষণ পূর্বজন্মের সঙ্গে সম্পর্কিত।
জন্মের পর থেকেই যদি শিবের প্রতি আপনার ভালবাসা থাকে তবে তার অর্থ এই যে আপনি আগের জন্মেও আপনি শিবের ভক্ত ছিলেন। এই জন্মে আপনার আগের জন্মের সংস্কার রয়েছে।
যদি পূর্বজন্মের কর্মফল আপনাকে প্রতিনিয়ত বাধা দেয়, তবে এর জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। একাদশী এবং পূর্ণিমায় উপবাস করে শিবের উপাসনা করলে ও শিবের মন্ত্র জপ করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।
সেই সঙ্গে শ্রীমত ভগবতের অর্থপূর্ণ পাঠও করতে পারেন। শনিবার কোনও ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে খাবার দান করুন এবং দুঃস্থদের সাহায্য করুন। আপনার কর্ম এবং চিন্তাভাবনা ঈশ্বরকে উৎসর্গ করুন। এই পদ্ধতিতে আপনি আপনার পূর্বজন্মের কর্মবন্ধন থেকে মুক্তি পেতে পারেন।