বছরভর নানা অনুষ্ঠান উদযাপন করেন ভারতবাসী। সেরকমই একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল জগন্নাথ মহাপ্রভুর স্নানযাত্রা। এই বিশেষ তিথিতে ধুমধাম করে উৎসব পালিত হয় পুরী, মাহেশ, ইস্কনের মন্দিরে। শুধু তাই নয়, যে সমস্ত মন্দিরে ও বনেদি বাড়িতে রথ উৎসব পালন হয়, সেখানেও ঘটা করে পালন করা হয় এই উৎসব।
এই বছর করোনা অতিমারীর জেরে সেই উৎসবের ছন্দপতন হয়েছে। তবে ভক্ত সমাগম না হলেও নিষ্ঠা করে সব রীতিনীতি মেনে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে স্নান করানো হল পুরীর মন্দিরে। (ছবি: পিটিআই)
একই দৃশ্য চোখে পড়ল আগরতলার জগন্নাথ মন্দিরেও। স্নান যাত্রার শুভ তিথিতে নিয়মকানুন মেনেই পালন হল উৎসব। (ছবি: পিটিআই)
রাঁচির জগন্নাথ মন্দিরে স্নান যাত্রার নিয়মকানুন করার পর মাস্ক পরিহিত পুরোহিতরা ছবি তুলেছেন। উৎসবের আনন্দে মেতেছেন তাঁরাও। (ছবি: পিটিআই)
মায়াপুর ইস্কনেও পালন হল জগন্নাথের স্নান যাত্রা উৎসব। প্রতি বছরই এই বিশেষ দিনে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে দীর্ঘক্ষণ ধরে এই স্নান উৎসব করা হয়, সঙ্গে চলে কীর্তন।
জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রার দিনটিকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এই বিশেষ তিথিতে কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে সারাবছর ভাগ্য ভাল থাকে। সারাবছর ব্যবসায় ও চাকরির ক্ষেত্রে উন্নতি হয়। সেই সঙ্গে সুখ-শান্তিতে ভরে ওঠে পারিবারিক জীবন।
শিলিগুড়ি ইস্কনেও পালন হল জগন্নাথ মহাপ্রভুর স্নানযাত্রা উৎসব। ফুলের সাজে সাজানো হয়েছিল জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে।
সেবায়েতরা তাঁদের সেবায়, যত্নে নিষ্ঠা করে পালন করলেন এই উৎসব। উপস্থিত ছিলেন মাস্ক পরিহিত ভক্তেরা।
স্নান যাত্রার বিশেষ তিথিতে সকাল সকাল নতুন বস্ত্র পরে গঙ্গায় স্নান সারতে হয়। এরপর মন্দিরে বা বাড়িতে থাকা জগন্নাথদেব, বলভদ্র ও সুভদ্রার পুজো করতে হয়।
তবে পুজোর আগে তাঁদের অবশ্যই স্নান করাতে হয়। গঙ্গাজল ও কাঁচা দুধের সঙ্গে আতর, চন্দন ও কর্পূর মিশিয়ে তা দিয়ে নিষ্ঠা মনে স্নান করানোর নিয়ম। স্নানের পরে ১০৮ টি তুলসী পাতা জগন্নাথদেবের চরণে দিতে হয়। তিনজনের মূর্তির সামনেই গোলাপ ফুল দিয়ে সাজিয়ে, ৫ রকমের ফল উপসর্গ করা শুভ।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, স্নানযাত্রার পরে তিন ভাইবোনের জ্বর আসে এবং এজন্য তাঁরা বিশ্রামে যান। রথযাত্রার ঠিক আগে ফের সুস্থ হয়ে মাসির বাড়ি ঘুরতে যান তিন দেব -দেবী।
যতদিন পর্যন্ত তাঁরা অসুস্থ থাকেন, তাঁদের নিত্য ভোগ অর্পণ করা হয় না। নিবেদন করা হয় বিশেষ ভোগ, যেখানে থাকে নানা ওষধি।