Advertisement

Buddha Teaching: পুরুষের থাকে 'চার স্ত্রী', কেন এমনটা বলেছিলেন গৌতম বুদ্ধ?

Buddha Purnima 2022: গৌতম বুদ্ধ সমগ্র বিশ্বকে অহিংসা, করুণা ও শান্তির বার্তা দিয়েছেন। বুদ্ধের জ্ঞান মানুষকে জীবনের পথ দেখায়। সেই গৌতম বুদ্ধই একবার বলেছিলেন, সকল পুরুষের ৪টি করে স্ত্রী থাকা উচিত। হঠাৎ করে কেন এমনটা বলেছিলেন?

বৈশাখ পূর্ণিমার দিনে উদযাপিত হয় বুদ্ধ জয়ন্তী।
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 16 May 2022,
  • अपडेटेड 6:42 PM IST
  • বৈশাখ পূর্ণিমার দিনে উদযাপিত হয় বুদ্ধ জয়ন্তী।
  • এই দিনেই জন্ম হয়েছিল বুদ্ধের।
  • বুদ্ধ সমগ্র বিশ্বকে অহিংসা, করুণা ও শান্তির বার্তা দিয়েছেন।

বৈশাখ পূর্ণিমার দিনে উদযাপিত হয় বুদ্ধ জয়ন্তী। এই দিনেই জন্ম হয়েছিল বুদ্ধের। এজন্য বুদ্ধ পূর্ণিমাও বলা হয়। সমগ্র বিশ্বকে অহিংসা, করুণা ও শান্তির বার্তা দিয়েছেন গৌতম বুদ্ধ। তাঁর জ্ঞান মানুষকে জীবনের পথ দেখায়। সেই গৌতম বুদ্ধই একবার বলেছিলেন, সকল পুরুষের ৪টি করে স্ত্রী থাকে। হঠাৎ করে কেন এমনটা বলেছিলেন? এর পিছনে রয়েছে একটি মজার গল্প। বুদ্ধের কথা সম্বলিত ৩২টি আগম সূত্রের একটিতে এই গল্পটির উল্লেখ রয়েছে।

মৃত্যুশয্যায় থাকা এক ব্যক্তির ছিল চার স্ত্রী। প্রাচীন ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় চালু ছিল বহুবিবাহ প্রথা। জীবন-সায়াহ্নে সেই অসুস্থ ব্যক্তি পরলোকের কথা ভেবে একাকীত্ব অনুভব করতে থাকেন। তাঁর প্রথম স্ত্রীকে ডেকে পরলোকে একসঙ্গে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। ওই বৃদ্ধ বলেন,'তুমি আমার সবচেয়ে প্রিয়। তোমাকে দিনরাত ভালবেসেছি। সারাজীবন তোমার যত্ন নিয়েছি। এখন আমি মরতে বসেছি, আমার মৃত্যুর পর আমি যেখানে যাব তুমি কি সঙ্গ দেবে?' উত্তর 'হ্যাঁ' আশা করেছিলেন ওই বৃদ্ধ। কিন্তু তিনি জবাব দেন,'প্রিয় স্বামী। আমি জানি আপনি সবসময় আমাকে ভালবেসেছেন। এখন আপনার মৃত্যু আসন্ন। এমন পরিস্থিতিতে এখন সময় হয়েছে আলাদা হওয়ার। বিদায় প্রিয়।'

এর পর অসুস্থ ব্যক্তি দ্বিতীয় স্ত্রীকে ডাকেন। মৃত্যুযাত্রায় তাঁর সঙ্গে যাওয়ার অনুরোধ করেন। বললেন,'তুমি জানো তোমাকে কতটা ভালবাসি। মাঝে মাঝে ভয় পেতাম তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। কিন্তু আমি তোমাকে শক্ত করে ধরে রেখেছিলাম। আমার সঙ্গে চলো। দ্বিতীয় স্ত্রী উত্তর দেন,'তোমার প্রথম স্ত্রী মৃত্যুর পর তোমাকে সঙ্গ দিতে চান না। তাহলে আমি কীভাবে তোমার সঙ্গে যাব? স্বার্থের কারণে আমায় চেয়েছো তুমি।'

এবার তৃতীয় স্ত্রী অশ্রুসিক্ত চোখে জবাব দেন,'আমি তোমার জন্য শোকাহত। নিজের জন্যেও। তাই শেষকৃত্য পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গেই থাকব।'

Advertisement

এবার চতুর্থ স্ত্রীর কাছেও আবদার করলেন ওই ব্যক্তি। আজীবন চতুর্থ স্ত্রীকে সময় দেননি। দাসীর মতো ব্যবহার করতেন। অনুরোধ করে যে খুব একটা লাভ হবে না, সে ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন তিনি। তবে তাঁকে অবাক করে দিয়ে চতুর্থ স্ত্রীকে পরলোকে তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার অনুরোধে সাড়া দেন। 

এই চার স্ত্রীর অর্থ কী? গৌতম বুদ্ধ গল্পের শেষ করেছেন, 'প্রত্যেক পুরুষ ও মহিলার চারটি স্ত্রী বা স্বামী আছে। তার একটি বিশেষ তাৎপর্যও রয়েছে। প্রথম স্ত্রী বা সঙ্গী হলো আমাদের শরীর, যাকে আমরা দিনরাত ভালবাসি। সকালে আমরা মুখ পরিষ্কার করি। বেরানোর আগে জামাকাপড় এবং জুতো পরি। খাবার খাই। প্রথম স্ত্রীর মতো শরীরের যত্ন নিই। কিন্তু জীবনের শেষের দিকে, শরীর অর্থাৎ প্রথম 'স্ত্রী'কে পরলোকে নিয়ে যেতে পারি না। 

বুদ্ধ বলেছিলেন 'যখন শেষ নিঃশ্বাস শরীর ছেড়ে চলে যায়, তখন মুখের রং বদলে যায়।  আমরা উজ্জ্বল জীবন হারাতে শুরু করি। আমাদের প্রিয়জনরা জড়ো হন এবং শোকপ্রকাশ করেন। কিন্তু কোনও লাভ নেই। শেষকৃত্যের পর সাদা ছাই অবশিষ্ট থাকে। এটাই আমাদের শরীরের গন্তব্য।'

দ্বিতীয় 'স্ত্রী' আমাদের ভাগ্য, সম্পদ, সম্পত্তি, খ্যাতি, অবস্থান এবং চাকরি। আমরা এই সমস্ত জিনিসের সঙ্গে নিজেদের একাত্ম বোধ করি। তা অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। এই জিনিস হারানোর ভয় এবং অনেক কিছু পাওয়ার ইচ্ছা থাকে বিস্তর। কিন্তু এর কোনও সীমা নেই। এই জিনিসগুলি মৃত্যুর পর আমাদের সঙ্গ দিতে পারে না। আমাদের ভাগ্য যা কিছু সংগ্রহ করেছে, আমাদের তা ছেড়ে দিতে হবে। আমরা এই পৃথিবীতে শূন্য হাতে এসেছি এবং মৃত্যুর সময়ও আমাদের হাত শূন্য। মৃত্যুর পরে সম্পদ, প্রতিপত্তি ধরে রাখতে পারি না। সেগুলি সঙ্গ ছেড়ে দেয়। ঠিক যেমন দ্বিতীয় স্ত্রী স্বামীকে বলেছেন,'আপনি অহংকার এবং স্বার্থের জন্য আমাকে কাছে রেখেছিলেন, ঠিক তেমনটাই।'

এখানে তৃতীয় স্ত্রী-র অর্থ আত্মীয়স্বজন। মা-বাবা, ভাই-বোন ও পরিজনরা চোখে জল নিয়ে শ্মশান পর্যন্ত যেতে পারে। তাঁরা আমাদের জন্য দুঃখিত। আমাদের শরীর, ভাগ্য এবং আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারি না। একা এসেছি এবং এই পৃথিবী ছেড়ে একা চলে যাব।

চতুর্থ স্ত্রী বলতে কী বোঝায়? বুদ্ধ বলেছেন,'চতুর্থ 'স্ত্রী' হলেন আমাদের মন বা চেতনা। যখন আমরা গভীরভাবে বুঝতে পারি যে রাগ, লোভ এবং বিরক্তিতে পূর্ণ মন, তখন জীবনকে আরও ভালভাবে দেখার সামর্থ্য হয়। ক্রোধ, লোভ ও অসন্তুষ্টি কর্মের সঙ্গে আসে। কখনই কর্ম থেকে পালাতে পারে না মানুষ। চতুর্থ স্ত্রী যেমন তাঁর মৃতশয্যাগামী স্বামীকে বলেছিলেন,'তুমি যেখানেই যাও, আমি যাব।'

আরও পড়ুন- এই নামের ব্যক্তিদের কখনও অর্থের অভাব হয় না, ভাগ্য থাকে সহায়

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement