Advertisement

মহিলারা কি শেষকৃত্যে শ্মশানে যেতে পারেন? গড়ুর পুরাণ বলছে...

হিন্দু পরিবারে সাধারণত কারও মৃত্যুর পর বাড়ির পুরুষ সদস্যরাই শেষকৃত্য করেন। সেক্ষেত্রে মহিলাদের কি এই নিয়ম পালনের নির্দেশ রয়েছে? বিতর্কের মাঝেই জেনে নেওয়া যাক, কী বলছে গরুড় পুরাণ?

প্রতীকী ছবি প্রতীকী ছবি
Aajtak Bangla
  • কলকাতা,
  • 26 Nov 2025,
  • अपडेटेड 12:16 PM IST
  • সাধারণত কারও মৃত্যুর পর বাড়ির পুরুষ সদস্যরাই শেষকৃত্য করেন
  • মহিলাদের কি এই নিয়ম পালনের নির্দেশ রয়েছে?
  • কী বলছে গরুড় পুরাণ?

হিন্দু পরিবারে সাধারণত কারও মৃত্যুর পর বাড়ির পুরুষ সদস্যরাই শেষকৃত্যের দায়িত্ব পালন করেন। মহিলারা সাধারণত শ্মশানে যাওয়া এড়িয়ে চলেন। কিন্তু শাস্ত্র কি সত্যিই মহিলাদের শেষকৃত্য করতে নিষেধ করে? গরুড় পুরাণ বা অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থে এই মর্মে কী বলা হয়েছে?

মহিলাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অধিকার রয়েছে?
গরুড় পুরাণের প্রেতা খণ্ডের ৮ম অধ্যায়ে শেষকৃত্যের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এই অধ্যায়ে গরুড় ভগবান বিষ্ণুকে জিজ্ঞাসা করেন, একজন ব্যক্তির মৃত্যুপ পর শেষকৃত্য করার অধিকার কার? ভগবান বিষ্ণু এই প্রশ্নের উত্তর খুব বিস্তারিতভাবে দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'প্রথমত, পুত্র, পৌত্র এবং প্রপৌত্র অর্থাৎ পরবর্তী বংশধরদের শেষকৃত্য করার অধিকার রয়েছে। যদি এগুলি উপলব্ধ না হয়, তাহলে ভাই, তার ভাইয়ের পুত্র এবং তাদের বংশধররা শেষকৃত্য করতে পারেন। এছাড়া একই বংশে জন্মগ্রহণকারী আত্মীয়দেরও এই অধিকার দেওয়া হয়।'

ভগবান বিষ্ণু আরও বলেন, 'যদি পরিবারে কোনও পুরুষ সদস্য না থাকে, তাহলে স্ত্রী, কন্যা বা বোনের মতো মহিলারা শেষকৃত্য করতে পারেন। এর অর্থ হল, যখন কোনও পুরুষ সদস্য থাকে না, তখন মহিলাদের এই দায়িত্ব পালনের সম্পূর্ণ অনুমতি রয়েছে। তবে পরিবারে যদি কোনও আত্মীয়স্বজন উপস্থিত না থাকে, তাহলে সম্প্রদায়ের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি মৃত ব্যক্তির শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে পারেন।'

এর থেকে স্পষ্ট, ধর্মগ্রন্থে কোথাও নারীদের শেষকৃত্য থেকে বাদ দেওয়া হয়নি। নারীরা শ্মশানে যেতে বা আচার অনুষ্ঠান করতে পারবেন না, এই প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস কোনও ধর্মীয় নিয়ম নয় বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ তৈরি করেছে। এটি সামাজিক ঐতিহ্য। 

কীভাবে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়? 
গরুড় পুরাণ ব্যাখ্যা করে, একজন ব্যক্তির মৃত্যুর পর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া একটি অত্যন্ত পবিত্র প্রক্রিয়া। মৃত ব্যক্তির দেহকে স্নান করানো, নতুন পোশাক পরা এবং তার শেষযাত্রার জন্য প্রস্তুত করার পর দেহ বাড়ি থেকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময়ে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিশেষ আচার-অনুষ্ঠান করা হয়। 

Advertisement

> মৃত্যুস্থানে (দেবী পৃথিবীকে সন্তুষ্ট করার জন্য)
> বাড়ির প্রধান প্রবেশদ্বারে (বাস্তু দেবতাকে সন্তুষ্ট করার জন্য)
> রাস্তার মোড়ে (ভূত আত্মাদের সন্তুষ্ট করার জন্য)
> রাস্তার মোড়ে (ভূত আত্মাদের সন্তুষ্ট করার জন্য)
> শ্মশানে (দশ দিকের দেবতাদের সন্তুষ্ট করার জন্য)
> চিতার উপর (যেখানে দেহ পঞ্চভূতে মি যায়)   

এরপর যখন দেহ সম্পূর্ণরূপে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়, তখন তাকে 'ভূত' বলা হয়।  

নারীদের অধিকার
গরুড় পুরাণ স্পষ্টভাবে বলে, পরিবারে যদি কোনও পুরুষ সদস্য না থাকে, তাহলে মহিলারাও সমস্ত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। এর অর্থ হল, শাস্ত্র মহিলাদের এই দায়িত্ব পালনে নিষেধ করে না। আজকের সময়ে, যখন পরিবারগুলি ছোট হয়ে গিয়েছে এবং কন্যারা প্রায়শই তাদের বাবা-মায়ের যত্ন নেয়, তখন কেবল পুরানো ঐতহ্য ধরে রাখা ঠিক নয়। আসল প্রয়োজন হল শাস্ত্রগুলি সঠিকভাবে বোঝা। 

 

Read more!
Advertisement
Advertisement