প্রাচীন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক এবং অর্থনীতিবিদ চাণক্য। চাণক্য 'আর্থশাস্ত্র' রচনা করেছিলেন। এই কারণে, তিনি কৌটিল্যা নামে পরিচিত হন। মানব জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে এমন প্রতিটি বিষয় খুব গভীর ভাবে অধ্যয়ন করেছিলেন তিনি। এই কারণেই চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের উপদেষ্টা চাণক্যের নীতিগুলি আজও প্রাসঙ্গিক।
আচার্য চাণক্য বিভিন্ন বিষয়ে পণ্ডিত ছিলেন। একজন মহান পণ্ডিত হওয়ার পাশাপাশি তিনি দক্ষ কূটনীতিক হিসাবেও বিবেচিত হন। চাণক্যের নীতিশাস্ত্র জীবন সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা এবং তার সমাধানগুলিতে আলোকপাত করে। চাণক্যের নীতিগুলি জীবনকে সফল করে তুলতে এবং আরও উন্নত জীবন যাপনের অনুপ্রেরণা দেয়।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে চলা করোনা মহামারির জেরে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে নানা বিপর্যয়। আর্থিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে সমগ্র মানবজাতী। তবে করোনাই প্রথম নয়, এর আগেও বহুবার এমন মহামারি বা মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে মানবজাতী। আচার্য চাণক্য তাঁর নীতিশাস্ত্রে এমনই সমস্ত বিপর্যয় মোকাবিলা করার উপযুক্ত শিক্ষা ও পরামর্শ দিয়েছেন বহুযুগ আগেই। এই নীতিমালায়, আচার্য চাণক্য জীবন সম্পর্কিত এমন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন যেগুলি যে কোনও বিপর্যয় সামলে টিকে থাকার শক্তি জোগায়।
Chanakya Niti: এই বিষয়গুলি সাফল্যের দ্বার উন্মুক্ত করে
আচার্য চাণক্যের মতে, বিপর্যয় শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিইকে নয়, সমগ্র দেশ বা মানবজাতীকে আঘাত করে। সুতরাং, কোনও ব্যক্তিরই এমন পরিস্থিতিতে কোনও রকম অবহেলা করা উচিত নয়। তাঁর মতে, যখন কোনও বড় সংকট উপস্থিত হয়, তখন যে কোনও উপায়ে তা পরাস্ত করার চিন্তা ও পরিকল্পনা করা উচিত। কারণ, সঙ্কটের সময়ে সামান্য অবহেলারও বড়সড় মূল্য দিতে হতে পারে। সুতরাং, যখন বিপর্যয় বড় হয়, তখন কোনও ব্যক্তির উচিত তাঁর জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন করা। কারণ, জীবনযাত্রায় পরিবর্তণ এনে বড়সড় ক্ষতি সহজে এড়ানো সম্ভব।
Chanakya Niti: বিবাহের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পাত্রী নির্বাচনের বিচার্য বিষয়!
আচার্য চাণক্যের মতে, দুর্যোগের সময়ে অতি উৎসাহিত হয়ে কোনও কাজ বা সিদ্ধান্ত নেওয়া কখনওই উচিত নয়। অনেক সময় একজন ব্যক্তির চরম উৎসাহে করা কোনও কাজ বা কোনও পদক্ষেপ তাঁর নিজের এবং অন্যান্যদেরও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
আচার্য চাণক্যের মতে, সঙ্কটের সময়ে তাড়াহুড়ো করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ নয়। এর ফলে বিপদের ঝুঁকিই বেড়ে যেতে পারে। অতএব, বিপর্যয় বা দুর্যোগের সময় অবশ্যই খুব ভাবনা-চিন্তা করে, সতর্কভাবে পদক্ষেপ করা বা সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ।
আচার্য চাণক্যের মতে, বিপর্যয় বা দুর্যোগের কালে ধৈর্য হারালে চলবে না। পরিস্থিতির মূল্যায়ন করে ধৈর্য ধরে উপযুক্ত সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সঠিক সময়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্তই বিপর্যয় বা দুর্যোগের সময় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করে।