সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধির জন্য লক্ষ্মী দেবীর (Goddess Lakshmi) আরাধনা করা হয়ে থাকে। মা লক্ষ্মী (Maa Lakshmi) হলেন ধনসম্পদের দেবী (Goddess of Wealth)। কোজাগরী পূর্ণিমার (Kojagori Purnima) দিন ঘরে ঘরে পূজিত হন তিনি । আশ্বিন মাসের শেষ পূর্ণিমা তিথিতে কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। ধন, যশ, খ্যাতি, সুস্বাস্থ্যের জন্য দেবী লক্ষ্মীর আরাধনায় মেতে ওঠে বাংলার প্রায় প্রতিটা পরিবার।
‘কোজাগরী’ (Kojagori) কথাটির অর্থ ‘কে জেগে আছো?’ হিন্দু পুরাণ মতে, আশ্বিনের এই পূর্ণিমার রাতে দেবী লক্ষ্মী এসে ঘরে ঘরে খোঁজ নিয়ে যান, কে জেগে আছে। এই রাতে যে ব্যক্তি জেগে দেবীর আরাধনা করেন তার ঘরেই প্রবেশ করেন মা লক্ষ্মী। পেঁচা (Owl), দেবী লক্ষ্মীর বাহন (Devi Lakshmi's Vahana)। যাকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। তবে অনেকরই অজানা কেন পেঁচাই লক্ষ্মীর বাহন? আসুন জানা যাক কী বলছে পুরাণ (Mythology)।
কেন দেবীর লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা? (Why Owl is Devi Lakshmi's Vahana)
লক্ষ্মীর অর্ধেক অংশ অলক্ষ্মী। আসলে লক্ষ্মী, ব্রহ্মার মুখের উজ্জ্বল অংশ থেকে এবং অলক্ষ্মী তাঁর পিঠের অন্ধকার দিক থেকে আবির্ভূতা। পেঁচা, লক্ষ্মীর পায়ের কাছে বসে। যা অলক্ষ্মী এবং তার অশুভ প্রকৃতির প্রতীক। শোনা যায় যে লক্ষ্মীর পেঁচা, পেচাকা নামে পরিচিত। এটি লক্ষ্মী পুজোয় উল্লেখিত নাম, বিশেষ করে বাংলায়। পেচাকা ক্ষুদ্র কীটপতঙ্গেরও শিকার করে যা কৃষি সম্পদের ক্ষতি করে।
আরও একটি মতানুসারে, ধান হল লক্ষ্মীর প্রতীক। চাল, অন্ন , খাদ্যশস্য হল লক্ষ্মীর প্রতীক। তাই যারা খাদ্য অপচয় করেন, তাদের ওপর দেবী অসন্তুষ্ট হন। ধানক্ষেতের আশেপাশে ইঁদুর বাস এবং এরা ধানের ক্ষতি করে থাকে। পেঁচার আহার হল এই ইঁদুর। এদিকে গোলাঘরকে লক্ষ্মীর প্রতীক বলা হয়। গোলাঘরের আশেপাশে ইঁদুরের বসবাস। পেঁচা এই ইঁদুরকে খেয়ে খাদ্যশস্য রক্ষা করে। তাই মনে করা হয় পেঁচা লক্ষ্মীর বাহন।
লক্ষ্মীর পেঁচা ধৈর্য, বুদ্ধি এবং প্রজ্ঞার প্রতীক। এটি যখন লক্ষ্মীর বাহনে পরিণত হয়, তখন সে সম্পদ ও সমৃদ্ধির আশীর্বাদ করে। পেঁচা, লক্ষ্মীর ভক্তদের অনুরোধ করে তারা যেন সম্পদ এবং তার জাঁকজমকের মধ্যে আটকা না পড়ে। এটি তখন সার্বজনীন প্রজ্ঞার প্রতীক হয়ে ওঠে যা অহংকার এবং অনুশাসন সম্পর্কে সতর্ক করে।
* লক্ষ্মীর সম্পদ যখন কোনও ব্যক্তি অধর্মমূলক কাজে ব্যবহার করে, তখন উপযুক্ত শিক্ষা পায় সে। তখন পেঁচা দেবী অলক্ষ্মীকে আপনার দোরগোড়ায় উড়িয়ে নিয়ে যায়, যা অন্ধকার, অসম্মান, অশুভতা এবং দুর্ভাগ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি তখন অলক্ষ্মীর বাহন, যা অজ্ঞতা, অহংকার এবং দুর্ভাগ্যের আগমনের প্রতিনিধিত্ব করে।
আগামী ৯ অক্টোবর, রবিবার পড়েছে এবছরের কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো। ৮ অক্টোবর, শনিবার রাত ৩/২৯/৪২ থেকে ৯ অক্টোবর রাত ২/২৫/৫ অবধি থাকবে পূর্ণিমা তিথি।