সামনেই জামাইষষ্ঠী (Jamai Sasthi)। বাঙালির নানা পার্বণের মধ্যে একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল এই জামাইষষ্ঠী। জামাইয়ের মঙ্গল কামনায় শাশুড়ি মায়েরা এই ব্রত পালন করেন। জামাইষষ্ঠীর উৎসবকে ঘিরে যুগ যুগ ধরে বাঙালি বাড়িতে পালন হয়ে আসছে নানা আচার- অনুষ্ঠান (Rituals)। সকাল থেকে উপবাস করে নানা নিয়মের মাধ্যমে এই ব্রত পালন করেন শাশুড়িরা। তবে কীভাবে শুরু হল এই বিশেষ পার্বণ- প্রথা?
জামাই ষষ্ঠী নিয়ে জড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি প্রচলিত কথা ও মতভেদও। অনেকে মনে করেন, ভারতবর্ষে এক সময় এক সংস্কার প্রচলিত ছিল যে, কন্যা যতদিন না পুত্র সন্তানের জন্ম দেবে, তার বাবা-মা তার গৃহে পদার্পণ করবেন না। তাই জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে বেছে নেওয়া হয় জামাই ষষ্ঠী হিসাবে। এই প্রথার মাধ্যমে মেয়ের মুখ দর্শন হবে তাদের এই আশায়।
লোকমুখে শোনা যায় আরও একটি কথা। এদিন মা ষষ্ঠীর পুজো করে তাকে খুশি করতেন মেয়ের মায়েরা, যাতে তাদের মেয়ের কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে পুত্র সন্তান। বর্তমানে এই সংস্কারের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মা ষষ্ঠীর পুজো ও জামাই আদরের জন্য এই পার্বণের নামকরণ হয় জামাই ষষ্ঠী। এখন মেয়ে-জামাইকে ডেকে সমাদরে বিশেষ কিছু নিয়ম পালন ও খাওয়া দাওয়া, আনন্দের মাধ্যমেই উদযাপন হয় জামাই ষষ্ঠী।
বাঙালি হিন্দু সমাজে জামাইষষ্ঠীর গুরুত্ব অনেক। সারা বছর ধরে সকলে অপেক্ষা করে থাকেন এই উৎসবের। নতুন বস্ত্র, উপহার, ফল- ফলাদি, পান-সুপারি, ধান- দূর্বা, বাঁশের করুল, তালের পাখা, করমচা দিয়ে শাশুড়ি মায়েরা উদযাপন করেন জামাইষষ্ঠী। তবে বর্তমানে সকলের ব্যস্ততার মধ্যে বহু রেস্তরাঁতে আয়োজন হচ্ছে, বিশেষ জামাইষষ্ঠীর। আর সকলে সেখানেই আদরে- যত্নে আপ্যায়ন করেন আদরের জামাইকে।
ভিন্ন ধরনের মরসুমি ফল, মিষ্টি সহযোগে জামাইভোজের জন্য বিশাল আয়োজন করা হয় এই বিশেষ দিনে। একদিকে জ্যৈষ্ঠ মাসে চারিদিকে থাকে আম-জাম-কাঁঠাল -লিচুর মতো ফল। সেই সঙ্গে এদিন জামাইদের পাতে পড়ে রকমারি সুস্বাদু পদ। বলাই বাহুল্য বছরের একটা দিন শ্বশুরবাড়ির এই স্পেশাল জামাই আদরের অপেক্ষায় থাকেন সকল জামাইরা।
জামাইষষ্ঠী ২০২৩-র দিনক্ষণ
মূলত জৈষ্ঠ্য মাসেই হয় এই পার্বণ। এবছর জামাইষষ্ঠী পড়েছে ২৫ মে অর্থাৎ ১০ জ্যৈষ্ঠ, বৃহস্পতিবার। ২৪ মে রা ১/২৭/১৯ থেকে ২৫ মে রা ৩/২৬/৫২ মিনিট পর্যন্ত থাকবে ষষ্ঠী তিথি।