হিন্দুধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষে অষ্টমী তিথিতে শ্রী রাধাষ্টমীর ব্রত রাখা হয়। রাধা এবং কৃষ্ণকে দুজনের একজনকে আরেক জনের পরিপূরক বলে মনে করা হয়। একজন আরেকজনকে ছাড়া অস্তিত্বহীন বলেও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস। রাধাষ্টমীর দিন রাধারানির জন্ম হয়েছিল এবং এ কারণে এই দিনটি রাধাষ্টমী নামে পরিচিত। এবার রাধাষ্টমীর ব্রত রবিবার ৪ সেপ্টেম্বর পড়েছে।
আরও পড়ুনঃ শ্রাবণ শেষে ভাদ্রমাসেও সহায় থাকবেন শ্রীকৃষ্ণ, গণেশ ও শিব; জানুন কীভাবে
রাধাষ্টমীর গুরুত্ব
পৌরাণিক হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, রাধা, শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন। যেখানে কৃষ্ণের জন্ম, ভাদ্র মাসে কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথিতে হয়েছিল। সেখানে রাধার জন্ম ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষে অষ্টমী তিথিতে হয়েছে। শাস্ত্র অনুসারে এই দিনটিতে ব্রত রাখলে ব্রতকারী, সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পান এবং তাঁর জীবনে নতুন খুশির আগমন হয়। কারণ রাধারানির নাম সব সময় কৃষ্ণের সঙ্গে নেওয়া হয়। এ কারণে এদিন কৃষ্ণের পুজো-অর্চনারও গুরুত্ব রয়েছে। রাধাষ্টমী ব্রত যাঁরা রাখেন, তাঁদের বিশেষভাবে এদিন রাধা-কৃষ্ণ দুজনেরই পুজো অর্চনা করা উচিত।
রাধাষ্টমীতে করতে হবে কৃষ্ণের পুজোও
শাস্ত্র এবং পুরাণ অনুসারে রাধার কৃষ্ণবল্লভী নামের গুণগান করা হয়েছে। তার কৃষ্ণপ্রিয়া নামকেও বন্দনা করা হয়। রাধাষ্টমীর দিন রাধার মন্ত্র এবং তাঁর কথা শোনা অত্যন্ত লাভজনক হয়। রাধারানির কথা যাঁরা শোনেন, সে সমস্ত ব্যক্তি সুখ-সমৃদ্ধি প্রাপ্ত করেন। একটা অন্য মত রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি রাধারানির পুজো করেন না, তাঁর কৃষ্ণপুজো-অর্চনারও অধিকার নেই।
রাধাষ্টমী ব্রত
শুভ মুহূর্ত শাস্ত্র অনুসারে রাধাষ্টমী ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পালন করা হবে। ৩ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২ টা বেজে ২৫ মিনিটে শুরু হবে এবং ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা বেজে ৪০ মিনিটে সমাপ্ত হবে। উদয়া তিথির মান্যতা অনুসারে রাধাষ্টমীর ব্রত ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ এ পালন করা হবে।
রাধাষ্টমীর পুজো বিধি
রাধাষ্টমীর দিন বিশেষ রূপে পরিষ্কার মন নিয়ে ব্রত সংকল্প রাখতে হবে। এই দিন সূর্যোদয়ের আগে উঠে স্নান সেরে রাধারানির মূর্তি সবার আগে পঞ্চাগব্য দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এরপরে বিধিপূর্বক তাঁর শৃঙ্গার করতে হবে। রাধাষ্টমীর দিন রাধার পুজোর জন্য তাঁকে সোনা অথবা রুপোর মূর্তিতে স্থাপন করতে হবে। মূলত দুপুর বেলায় রাধারানির পুজো সর্বোত্তম। এ সময় রাধারানির সঙ্গে বিধিপূর্বক কৃষ্ণের পুজোও করতে হবে। এ ছাড়া এই দিন ব্রত যাঁরা রাখবেন, তাঁরা কিছুই খাবেন না। পরের দিন সকালে রাধারানির পুজো-অর্চনা এবং আরতির পর ভোজন গ্রহণ করতে হবে।