বাড়ির বড়দের মুখে নিশ্চয়ই অনেকবার শুনেছেন, সন্ধের পর (Evening) ঝাড়ু (Cleaning with Broom) দেবেন না, তুলসী (Tulsi) স্পর্শ করবেন না, রাতে নখ (Nails) কাটবেন না। এরকম আরও অনেক নিয়ম আছে যেগুলি করতে বাড়ির বড়রা সবসময় নিষেধ করেন। কিন্তু কেন এমন বলা হয় জানেন? সেই রহস্যই উন্মোচন করা যাক।
সন্ধ্যায় তুলসী স্পর্শ না করার কারণ
সন্ধ্যায়, তুলসীর সামনে প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম রয়েছে। প্রার্থনা করার পর আর তুলসী স্পর্শ করা হয় না বা জল দেওয়া হয় না। সন্ধ্যায় তুলসীর সামনে প্রদীপ জ্বালালে লক্ষ্মীদেবী প্রসন্ন হন। মানা হয়, সন্ধ্যায় তুলসী গাছ স্পর্শ করলে বা জল দিলে দেবী লক্ষ্মী রেগে যান। পরিবারের সুখ বিনষ্ট হয়। প্রকৃতপক্ষে, এটিও বিশ্বাস করা হয় যে মা তুলসী সন্ধ্যায় বিশ্রাম নেন এবং স্পর্শ করযে তিনি জেগে ওঠেন। ঘুম বিঘ্নিত হলে তিনি ভক্তকে তাঁর আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত করে। আসলে, এসব কথাই প্রচলিত ধারণা। বিজ্ঞানীদের মতে, রাতে গাছপালাকে জল দেওয়া উচিত নয়। সমস্ত উদ্ভিদের ঘুম ও জেগে ওঠার নির্দিষ্ট সময় আছে। রাতে জলে দিলে গাছ শুকিয়ে যেতে পারে।
সন্ধ্যায় ঝাড়ু দেওয়া উচিত নয়, কেন?
সূর্যাস্তের পর ঘর ঝাড়ু দেওয়া উচিত নয়। এমনটা করলে মা লক্ষ্মী ঘর থেকে বেরিয়ে যান। তবে এর পিছনে আসল কারণ হল, সেসময়ে বিদ্যুতের ব্যবহার শুরু হয়নি। সূর্য অস্ত যাওয়ার পর মানুষ প্রদীপের আলোয় কাজ করত। এই সময়ে অন্ধকারে ঘর ঝাড় দিলে অনেক সময় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও বাইরে ময়লা-আবর্জনার মধ্যে চলে যেতে পারে। তাই এই ধারণা থেকে এখন একটি নিয়ম হিসাবে প্রচলিত হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার চুল-দাড়ি কামাতে নেই
সাধারণত, বৃহস্পতিবার চুল-দাড়ি কামাতে নিষেধ করা হয়। আসলে, বৃহস্পতিবারকে বৃহস্পতি অর্থাৎ দেবতাদের গুরুর দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বাস করা হয় বৃহস্পতি ভাগ্যের কারক। তাই যাঁরা বৃহস্পতিবার চুল কাটেন এবং শেভ করে, তাঁদের ভাগ্য নষ্ট হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।
রাতে নখ কাটবেন না, কী কারণ?
এর ধর্মীয় দিক হল মা লক্ষ্মী নাকি রাতে নখ কাটলে বিরক্ত হন। মা লক্ষ্মী এমন ব্যক্তির ওপর কৃপা করেন না এবং সে কারণে অর্থের ক্ষতিও করেন। এর পিছনে কারণটি হল, আগে বিদ্যুৎ-এর ব্যবহার ছিল না এবং অন্ধকারে নখ কাটা একটু ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এ ছাড়া তখন মানুষের কাছে এখনকার মতো নেইল কাটারও ছিল না, তারা ছুরি, ব্লেড বা কাঁচি দিয়ে নখ কাটত।