ফাল্গুন শেষ হয়ে শুরু হবে চৈত্র মাস (Chaitra)। এতদিন চলছিল বিয়ের মরসুম (Wedding Season)। চৈত্র মাসে হিন্দুদের কোনও বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় না। শুধু বিয়ে নয়, বিয়ে সংক্রান্ত কোনও শুভ কাজই চৈত্র মাসে এড়িয়ে চলেন বেশিরভাগ মানুষ। অনেকেরই অজানা কেন এই নিয়ম। জানুন হিন্দু শাস্ত্র (Hindu Shastra) কী বলেছে...
যুগ যুগ ধরে মূলত বাঙালি হিন্দুদের (Bengali Hindu) চৈত্র মাসে বিয়ে না হওয়ার রীতি রয়েছে। বিয়ের পাকা কথা, আশীর্বাদ, এমনকী কেনাকাটা করতেও ভয় পান অনেকে। ঝুঁকি নিয়ে যদি কোনো অশুভ ঘটনা বা বিপদ ঘটে যায়। এর পিছনে রয়েছে কয়েকটি কারণ।
হিন্দু শাস্ত্র মতে চৈত্র মাসে বিয়ে হলে কন্যা মদনোন্মক্তা হয়। এই কথার উল্লেখ রয়েছে বেণীমাধব শীলের পঞ্জিকাতেও। মদনোন্মত হওয়া অর্থাৎ নেশাগ্রস্ত হওয়া। এছাড়াও এর অন্য একটি অর্থও আছে। মদনোন্মক্তা মানে কামভাবে জর্জরিত হওয়াকে বোঝায়। যেটা যে কোনও ব্যক্তির শরীরের পক্ষে মঙ্গলজনক নয়।
অনেকে আবার মনে করেন, এই সময়ই গরম পড়ে বসন্তের মনোরম পরিবেশের পর। আর প্রখর তপ্ত আবহাওয়ায় মানুষের শরীরে কাম ভাব বেশি জাগে। চৈত্র মাসে মানুষ নানা কাজে ব্যস্ত থাকে। যেহেতু বাংলা বছরের শেষ মাস, তাই বিভিন্ন নিয়ম- আচার পালনও করতে হয় সংক্রান্তির আগে।
আরও একটি ব্যখ্যা শোনা যায়। চৈত্র মাসে রবিশস্য ওঠে। যার ফলে এই সময়কালে ওই শস্য কাটা এবং ঝাড়াই, বাছাই করে সারা বছরের জন্যে সঞ্চয় করে রাখেন চাষীরা। ফলত ব্যস্ত থাকেন অনেকে। একটা সময় বেশিরভাগ মানুষের জীবিকাই ছিল কৃষিকাজ। ফলে চৈত্র মাসে বিয়ের ব্যবস্থা করার মতো সময় পেতেন না তারা ৷
শাস্ত্রে, চৈত্র ছাড়াও পৌষ মাসে হিন্দুদের বিয়ের জন্য অশুভ বলে ধরা হয়। পৌষ মাসে বিয়ে হলে কন্যা আচারভ্রষ্টা ও স্বামী বিয়োগিনী হতে পারেন। তাই ধরে নেওয়া হয় চৈত্র ও পৌষ মাস বাদে বাকি ১০ মাস হিন্দুদের বিয়ের জন্যে শুভ। যদিও বর্তমানে বহু আধুনিক মনস্করা এই নিয়ম মানেন না। এই বছর ১৬ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চৈত্র মাস। এরপর বৈশাখ মাস থেকে ফের শুরু হবে বিয়ের লগন।