অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মনে নানা প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে মহার্ঘ ভাতা এবং মহার্ঘ ত্রাণ সংক্রান্ত। বলা হচ্ছে অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিএ এবং ডিআর শূন্য হয়ে যাবে। কারণ পঞ্চম বেতন কমিশনে একটি বিশেষ বিধান ছিল, যার অধীনে যদি মহার্ঘ ভাতা (DA) এবং মহার্ঘ ত্রাণ (DR) ৫০ শতাংশের বেশি হয় তবে সেগুলি অটোমেটিক বেসিক বেতন বা বেসিক পেনশনে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। বেতন কাঠামোকে সহজ করার জন্য এটি করা হয়েছিল, তবে এটি ষষ্ঠ বেতন কমিশন এবং সপ্তম বেতন কমিশনের অধীনে ছিল না।
ষষ্ঠ এবং সপ্তম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের অধীনে DA কে মূল বেতনের সঙ্গে মিশিয়ে দেওযা হয়নি। বরং নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের সময় ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরের ভিত্তিতে বেতন নির্ধারণ করা হয়। এমতাবস্থায় এই সময়ে মহার্ঘ ভাতা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। মহার্ঘ ভাতা ভবিষ্যতে বা বেতন কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে যোগ করা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য প্রতি ৬ মাস অন্তর ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা সংশোধন করে। জানুয়ারি ও জুলাই মাসের কর্মচারীদের বেতনের সঙ্গে ডিএ দেওয়া হয়। এবার আগামী মার্চে ডিএ বাড়ানো নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। যা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
তাহলে কি '0' হবে এই মহার্ঘ ভাতা
মহার্ঘ ভাতা কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বেতনের একটি বড় অংশ। বর্তমান বেতন কমিশনে এমন কোনও বিধান নেই যে DA ৫০ শতাংশের বেশি হলে এটি অটোমেটিক বেসিক বেতনে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং '0' হয়ে যাবে।
ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর কী? একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝা যাক
ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর এমন একটি জিনিস যার ভিত্তিতে সরকারি কর্মচারীদের বেতন এবং পেনশনভোগীদের পেনশন গণনা করা হয়। কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে তা বাস্তবায়িত হয়। উদাহরণ- যদি কারও বেসিক বেতন ২০ হাজার টাকা হয় এবং অষ্টম বেতন কমিশনে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫ সুপারিশ করা হয়, তাহলে সেই কর্মচারীর বেসিক বেতন বেড়ে ৫০ হাজার হবে। একইভাবে, পেনশনও গণনা করা হবে।
অষ্টম বেতন কমিশন কবে কার্যকর হবে?
কেন্দ্রীয় সরকার ১০ বছরের ব্যবধানে একটি নতুন বেতন কমিশন লাগু করে। সপ্তম বেতন কমিশন ২০১৬ সালে কার্যকর করা হয়েছিল। অষ্টম বেতন কমিশন ২০০৬ সালে বাস্তবায়িত হয়েছিল। একইভাবে ১০ বছরের ব্যবধানে চতুর্থ এবং পঞ্চম বেতন কমিশনও কার্যকর করা হয়েছিল। অষ্টম বেতন কমিশনকে ২০২৬ সালের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে। এই পরিস্থিতিতে, আশা করা হচ্ছে যে এটিও ২০২৬ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। কারণ সপ্তম বেতন কমিশনের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।