আজ আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলায় (Adani-Hindenburg case) সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) শুনানি হল। তদন্ত কমিটির সদস্যদের নামের পরামর্শের বিষয়ে বিচারপতিদের কাছে সিল বন্ধ খাম জমা দেন সলিসিটর জেনারেল। এই বিষয়ে, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টতই কেন্দ্রের পরামর্শ মানতে অস্বীকার করে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ বলেছে, আমরা আপনাদের পক্ষ থেকে সিল করা খাম গ্রহণ করব না। কারণ আমরা সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চাই। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, আমরা নিজেরাই কমিটির নাম প্রস্তাব করব।
সেই সঙ্গে শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান কোনও বিচারপতিকে কমিটিতে রাখা হবে না। শীর্ষ আদালত বলেছে, আমরা কমিটি নিয়োগে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা চাই। আমরা বিনিয়োগকারীদের সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চাই। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিমা এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার বেঞ্চ বলেছে যে তারা সিল করা কভারে কেন্দ্রের পরামর্শ গ্রহণ করবে না। ১০ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল যে আদানি গ্রুপের স্টক রুট সম্পর্কিত ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বাজারের অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে রক্ষা করা দরকার।
আরও পড়ুন: Elon Musk shuts Twitter India office: ভারতে হঠাত্ Twitter-এর অফিস বন্ধ করে দিলেন মাস্ক
আইনজীবী এমএল শর্মা এবং বিশাল তিওয়ারি, কংগ্রেস নেতা জয়া ঠাকুর এবং মুকেশ কুমার এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতে চারটি পিআইএল দায়ের করেছেন। শুনানির সময় এমএল শর্মা জানিয়েছেন যে তিনি কোনও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি বলেন, 'আমি শর্ট সেলিং নিয়ে চিন্তিত।' এই বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আপনি বলুন শর্ট সেলার এবং শর্ট সেলিং কী? এটা কি আপনার জনস্বার্থ মামলা?' জবাবে শর্মা বলেন, ডেলিভারি ছাড়াই শেয়ার বিক্রি করে বাজার ভেঙে পড়েছে। এরপর গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে, তখন কোনও কোনও কোম্পানি নিজেদের শেয়ার অর্ধেক দামে কিনে বেশি দামে বাজারে বিক্রি করে।'
বিচারপতি নরসিমা এরপর জিজ্ঞাসা করেন, মিডিয়া কি শর্ট সেলার? এর জবাবে অ্যাডভোকেট এমএল শর্মা আবার যুক্তি দেন। কিন্তু আদালত তা খুব একটা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। একই সঙ্গে প্রশান্ত ভূষণ মামলার টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আদালতকে জানান। প্রশান্ত ভূষণ জানান যে আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলির ৭৫ শতাংশের বেশি শেয়ার আদানি গ্রুপের প্রোমোটারদের হাতে ছিল। প্রশান্ত ভূষণ বলেন, 'আমাদের একটি আবেদন রয়েছে যে বিষয়টি একটি বিশেষ কমিটি অর্থাৎ এসআইটি দ্বারা তদন্ত করা উচিত।' এরপর প্রশান্ত ভুষণকে প্রধানবিচারপতি জিজ্ঞাসা করেন, 'মিস্টার ভূষণ, আপনি কি ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তাঁরা অপরাধী? আপনি ইতিমধ্যেই তাঁদের দোষী প্রমাণ করেছেন।' এই বিষয়ে, প্রশান্ত ভূষণ হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনের কিছু অংশ পড়েন, যেখানে শেয়ারের দামবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
এরপর প্রশান্ত ভূষণও কমিটির নাম প্রস্তাব করতে শুরু করলেও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার আপত্তিতে আদালত তাঁকে বাধা দেয়। সরকার কমিটিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবে বলে অভিযোগ করেন প্রশান্ত ভূষণ। তুষার মেহতা এর তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। আদালত জিজ্ঞাসা করলেন, 'আপনার পরামর্শ কী?' এ বিষয়ে সলিসিটর জেনারেল বলেন, 'আমি যতদূর বুঝেছি, প্রশান্ত ভূষণ চান রিপোর্টের বিষয়বস্তু তদন্ত করা হোক। আমাদের লক্ষ্য হল সত্যকে বের করে আনা।'
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, আমরা নিজেরাই কমিটির নাম প্রস্তাব করব। একই সময়ে, তুষার মেহতা বলেছিলেন যে তদন্ত এমন হওয়া উচিত যাতে মনে না হয় যে কোনও তদন্ত সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে।