কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছেন রাজ্যের সরকারি কর্মীরা। গত রাজ্য বাজেটে ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে নবান্ন। তার পর রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বেড়ে হয়েছে ৬ শতাংশ। গত ১ মার্চ থেকে কার্যকর হয়েছে বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা। ডিএ বাড়ানো হলেও কেন্দ্রের সঙ্গে ফারাক এখন ৩২ শতাংশ। কত টাকা ঠিক কম পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা?
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর বাজেট ভাষণ চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে একটি চিরকুট নিয়ে ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর কথা জানান তিনি। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারি কর্মীদের ডিএ বেড়েছিল ৩ শতাংশ। এবার ৩ শতাংশ বাড়ায় মোট মহার্ঘ ভাতার পরিমাণ ৬ শতাংশ। ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্দেশিকা জারি করে ১ মার্চ থেকে ডিএ কার্যকর করার কথা জানায় নবান্ন। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়, রাজ্য সরকারি কর্মচারী, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অনুমোদিত সরকারি সংস্থা, পঞ্চায়েত-পুরসভার কর্মীরা এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীরা পাবেন বর্ধিত ডিএ।
কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের মহার্ঘ ভাতার ফারাক ৩২ শতাংশ। এবার পশ্চিমবঙ্গের রোপা আইন বা রিভিশন পে ও অ্যালোয়েন্স অনুযায়ী, কর্মীদের বেসিক এন্ট্রি লেভেল বেতন ১৮০০০ টাকা (গ্রেড পে ১৯০০)। সেক্ষেত্রে তাঁদের ডিএ বাবদ পাওয়ার কথা ৬,৮৪০ টাকা। তাঁরা পাচ্ছেন ১০৮০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি মাসে ৫৭৬০ টাকা কম। যা ১২ মাসের ক্ষেত্রে ৬৯,১২০ টাকা।
রোপা অনুযায়ী এন্ট্রি লেভেল বেতন ১৯৭০০ টাকা (গ্রেড পে ২১০০) হলে ডিএ বাবদ কম পাচ্ছেন ৬৩০৪ টাকা। ১২ মাসের হিসেব করলে ৭৫,৬৪৮ টাকা।
রাজ্যে কো-অর্ডিনেশন কমিটির সহ-সম্পাদক প্রণব কুমার জানান, রাজ্যের বেশিরভাগ কর্মীরই বেতন এখন গড়ে ৪০ হাজার টাকা। সেক্ষেত্রে মাসে মাসে ১২,৮০০ টাকা পাওয়ার কথা। অথচ সেই টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। বছরে যা ১,৫৩,৬০০ টাকা। প্রায় দেড় লক্ষ টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি কর্মীরা।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক জ্যোতির্ময় দত্তের কথায়,'বেতন কমিশনের প্রস্তাব দিতে দিতে বিস্তর সময় নিয়েছেন অভিরূপ সরকার। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই বকেয়া পাননি রাজ্য সরকারি কর্মীরা। কেন্দ্রীয় সরকার বছরে দুবার করে ডিএ দেয়। মার্চে ডিএ ঘোষণা হলেও জানুয়ারি থেকে বকেয়া পান কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা। সেই বকেয়া রাজ্য সরকারি কর্মীরা পান না। তাছাড়া ডিএ একটা সময় ৯৯ শতাংশে পৌঁছে যাওয়ার পর ১০০ শতাংশ করে দেওয়া হয়েছিল বেতন কমিশন গঠনের আগে। তখনই ১ শতাংশ ডিএ থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন সরকারি কর্মীরা। আমি বলব, এই ফারাক ৩২ শতাংশ নয়, ৩৩ শতাংশ।'